|
|
|
|
বাংলার জবাবে ত্রিপুরা, লড়াই দিল্লিতে
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১৯ ডিসেম্বর |
এক পক্ষের হাতিয়ার পশ্চিমবঙ্গ। অন্য পক্ষের অস্ত্র ত্রিপুরা। পুবের দুই রাজ্যকে নিয়ে বাম ও তৃণমূল, দুই যুযুধান শিবিরের লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল শাহি দিল্লি!
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের হামলার প্রতিবাদ এবং সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়ে এ বার রাজধানীতে তৎপর হয়েছে বামেরা। তারই পাল্টা হিসাবে বাম রাজ্য ত্রিপুরার সরকারের বিরুদ্ধে আজ দিল্লিতে সরব হলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই সময়েই আবার সিপিএম, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি-র কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা দিল্লিতে দ্বারস্থ হলেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। তাঁদের দাবি, শাসক তৃণমূলের হামলা ঠেকিয়ে সুষ্ঠু লোকসভা ভোট করার জন্য কমিশনকে উদ্যোগী হতে হবে।
লোকসভা ভোটের আগে উত্তর-পূর্বে সাংগঠনিক প্রভাব তৈরির লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরে ত্রিপুরা থেকেও এখন বামেদের হঠানোর ডাক দিয়ে আসরে নেমেছে তৃণমূল। দিল্লির যন্তর-মন্তরে আজ মুকুল রায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতারা ত্রিপুরার বাম সরকারের লাগাতার হিংসা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেছিলেন। ঠিক যেখানে ২৪ ঘণ্টা আগে বাংলা নিয়ে ধর্না ছিল বামেদের! মুকুলবাবুদের সঙ্গে আজকের ধর্নায় ছিলেন ত্রিপুরার রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বও। পরে অভিযোগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছেও গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বাংলা নিয়ে যে কাজ আগেই করে এসেছেন সিপিএম নেতৃত্ব! আজও যন্তর মন্তরে তৃণমূল যখন ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে সরব, তখন দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’ ব্যাপারে তাদের আগাম অবহিত করে এসেছেন সীতারাম ইয়েচুরি, বিমান বসু, মনোজ ভট্টাচার্য, বরুণ মুখোপাধ্যায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়েরা।
আট মাস আগে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনে না লড়লেও আসন্ন লোকসভা ভোটে ওই রাজ্যের বাম দুর্গে চিড় ধরাতে মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব। আপাতত রাজ্যের দু’টি আসনের মধ্যে একটি জয়ের লক্ষ্য নিয়েছে তৃণমূল। সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই আজ প্রথম বার ত্রিপুরা-প্রশ্নে তৃণমূলের তরফে দিল্লির ধর্নায় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ মুকুলবাবু, ডেরেক ও’ব্রায়েন, বাংলার বিধায়ক সব্যসাচী দত্তেরা। তৃণমূলের অভিযোগ, গত কুড়ি বছর ত্রিপুরা বাম ‘অপশাসনে’র শিকার। বাংলার বিধায়ক তথা ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা সব্যসাচীবাবুর অভিযোগ, “বিধানসভা নির্বাচনের পরে সিপিএম ক্যাডার-বাহিনীর হাতে ১৩ জন খুন হয়েছেন। ওই রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই।”
শাসক দলের অত্যাচারের বিষয়টি ছাড়াও এ দিন বাম সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি রতন চক্রবর্তী বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর নকল সংস্থার কাছ থেকে নিম্ন মানের ও ভেজাল ওষুধ কিনে সরকারি অর্থের বিপুল নয়ছয় করছে। লাগামছাড়া অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে!” শুধু তা-ই নয়, গত সপ্তাহে হওয়া সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সরকারি অর্থ খরচের অভিযোগও তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর আগেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, সরকারি কোষাগারের এক পয়সাও দলের বৈঠকে খরচ হয়েছে, পারলে যেন তৃণমূল প্রমাণ করে দেখায়!
ত্রিপুরা নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য ইয়েচুরির বক্তব্য, মানিক সরকারের কাজের প্রশংসা খোদ কেন্দ্রই করছে। |
পুরনো খবর: ত্রিপুরায় প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল |
|
|
|
|
|