|
|
|
|
অসংগঠিত শ্রমিকদের উন্নয়নে তৎপর ত্রিপুরা
আশিস বসু • আগরতলা
১৯ ডিসেম্বর |
অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য চালু হওয়া ‘অসংগঠিত শ্রমিক সহায়িকা প্রকল্প’কে (এএসএসপি) আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তৎপর ত্রিপুরা।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ১৩ বছর আগে শুরু করা হলেও, নানা কারণে প্রকল্পটি বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছতে পারেনি। সরকারি ‘গাফিলতির’ কথা স্বীকার করে শ্রমমন্ত্রী শহিদ চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। এ বার অসংগঠিত শ্রমিকদের আরও কাছে পৌঁছতে সরকার পদক্ষেপ করছে।’’
প্রকল্পটি কী ভাবে ‘সাফল্যের’ মুখ দেখতে পারে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রাজ্যের শ্রম কমিশনার শম্ভু নম বলেন, ‘‘রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েত, ব্লক ও এসডিএম অফিসে একজন করে অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। আগে তা ছিল না। তাঁরাই শ্রমজীবী মানুষকে প্রকল্পের কার্যকারিতা বোঝাবেন।” তা ছাড়াও, জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য দফতর নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।
সংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ‘ইপিএফ’ প্রকল্পের মতোই অসংগঠিত শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তার জন্য ২০০১ সালে এএসএসপি চালু করা হয়েছিল। সরকারি হিসেবে, ১২-১৩ বছরে মাত্র ৬০-৭০ হাজার শ্রমিককে তার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এখনও রাজ্যের অসংগঠিত শ্রমিকের অধিকাংশই (৬-৭ লক্ষ) প্রকল্পের আওতার বাইরে। ত্রিপুরার শ্রমমন্ত্রী শহিদ চৌধুরী জানান, রাজ্য সরকার চলতি আর্থিক বছরে প্রায় ৬ লক্ষ অসংগঠিত শ্রমিককে ওই প্রকল্পের আওতায় আনতে চাইছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কোনও শ্রমিক মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা (৫০ টাকা) রাজ্যের শ্রম দফতরের মাধ্যমে ব্যাঙ্কে জমা দিলে, রাজ্য সরকার সমপরিমাণ টাকা ওই অ্যাকাউন্টে জমা দেবে। সম্মিলিত টাকা রাজ্য কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে জমা থাকবে। শ্রমিকের বয়স ৫৫ বছর হওয়ার পর, সুদ-সহ মোট টাকা অ্যাকাউন্ট-হোল্ডার বা তাঁর ‘নমিনি’ ফেরত পাবেন।
রাজ্য সরকারের আইন অনুসারে, ‘অসংগঠিত’ ক্ষেত্রের যে কোনও শ্রমিক প্রকল্পের সুযোগ নিতে পারেন। ইটভাটা, নির্মাণ শিল্প, চালকল, পোলট্রি, পশু খামারের শ্রমিক থেকে শুরু করে ধোপা, নাপিত, দর্জি, রিকশচালক, অটোচালক, আদালত চত্বরের কপি-রাইটার, রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক, বাড়ির পরিচারক সবাই তার আওতায় পড়ছেন। পেশা হিসেবে ‘সরকারি নথিতে’ চিহ্নিত নয়, এমন ক্ষেত্রের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদেরও ওই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার বিবেচনা করছে। ২১ থেকে ৫৫ বছরের যে কোনও শ্রমিক, যাঁর মাসিক আয় ৩৫০০ টাকার নীচে, তারাই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। পরিবারের একজনই ওই সুবিধা নিতে পারবেন।
এ বিষয়ে অবশ্য রাজ্যের বিরোধী শিবিরের প্রতিক্রিয়া অন্য রকম। কংগ্রেস বিধায়ক রতনলাল নাথের অভিযোগ, রাজ্যে সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধাই শাসক দলের কর্মী-সমর্থক না-হলে দেওয়া হয় না এটাই দস্তুর। সে ক্ষেত্রে এই প্রকল্প সাফল্য দেখবে কী করে? |
|
|
|
|
|