|
|
|
|
ছিটমহল নিয়ে ক্ষোভ সমন্বয় কমিটির, খুশি ঐক্য পরিষদ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
রাজ্য সরকার ছিটমহল বিনিময় সংক্রান্ত স্থল সীমান্ত চুক্তি বিলের বিরোধিতা করায় ক্ষুব্ধ ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি। রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনের সদস্যরা। লাগাতার আন্দোলনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি ভবিষ্যত কর্মসূচি ঠিক করতে আগামী রবিবার তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ‘অনলাইনে’ বৈঠকে বসছেন সমন্বয় কমিটির দুই দেশের প্রতিনিধিরা। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “সংসদে ওই বিল পেশ হওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। তবে রাজ্য সরকারের ভূমিকায় আমরা হতাশ। ছিটমহল বিনিময় কার্যকর করার দাবিতে লাগাতর আন্দোলন থেকে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার মত নানা পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’
কমিটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত বুধবার ভারত ও বাংলাদেশের ছিটমহল বিনিময় সংক্রান্ত স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল রাজ্যসভায় পেশ করা হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিলের সমালোচনা করে সরব হন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন সমন্বয় কমিটির সদস্যরা। তাঁদের বক্তব্য, “কয়েকমাস আগে কোচবিহার জেলা প্রশাসনের কাছে তথ্যের অধিকার আইনে ভারতীয় ছিটমহলগুলিতে প্রশাসনের কর্তারা সরোজমিনে গিয়ে কাজ করতে পারেন কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। প্রশাসনের তরফে ওই ব্যাপারে পাঠানো জবাবে জানান হয়েছিল, বাংলাদেশের ভূখন্ড না পার হয়ে ওই সব ছিটমহলে যাতায়াত করা সম্ভব নয়। অথচ বুধবার রাজ্যসভায় ওই বিলটি পেশ করার পরে রাজ্য সরকারের তরফে রাজ্যের জমি ছাড়ার প্রশ্ন নেই বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
দীপ্তিমানবাবুর অভিযোগ, প্রশাসন যেখানে বলছে বাংলাদেশের ভূখন্ড না পার হয়ে ভারতীয় ছিটমহলে যাওয়া যায় না। সেখানে জমির এলাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা দ্বিচারিতার নামান্তর। কারণ পুরো জমিটাই তো কার্যত অকেজো হয়ে রয়েছে। সমন্বয় কমিটি রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও উল্টো রাস্তায় হাঁটছেন ছিটমহল ঐক্য পরিষদের নেতারা। পরিষদের সম্পাদক বলরাম বর্মন বলেন, “আমরাও ছিটমহল বিনিময়ের নামে বাংলাদেশকে বাড়তি জমি দেওয়ার বিরোধী। স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল নিয়ে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা সঠিক বলেই মনে করছি।”
পরিষদের প্রস্তাব, বাংলাদেশের দহগ্রাম অঙ্গারপোতার বাসিন্দারা যেভাবে তিনবিঘা করিডরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ভারতীয় ছিটমহলগুলিও একই রকম ভাবে করিডোর করে দেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নাগরিকত্ব, আইনের শাসন, উন্নয়ন সবই সম্ভব। প্রসঙ্গত, ভারত ভূখন্ড ঘেরা বাংলাদেশের ৫১ টি ও বাংলাদেশ ভূখন্ড ঘেরা ভারতের ১১১ টি ছিটমহল রয়েছে। ভারতীয় ছিটমহলের ১৭ হাজার একর জমি রয়েছে। বাংলাদেশের ছিটমহলের জমির পরিমাণ সেখানে মাত্র ৭ হাজার একর।
কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কোন যুক্তিতে আমরা বাংলাদেশকে জমি দেব? আসলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে কেন্দ্রীয় সরকার ছিটমহলের মতো বিষয়কে খড়কুটো করে বাঁচার চেষ্টা করছে। রাজ্যকে পাশ কাটিয়ে, রাজ্যের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে এই সমস্যার সমাধান করা যায় না।”
|
পুরনো খবর: ছিটমহল বিনিময়ের আর্জি, কেন্দ্রকে চাপ |
|
|
|
|
|