|
|
|
|
টোগোর জেল থেকে মুক্তি পেলেন নাবিক
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
১৯ ডিসেম্বর |
পাঁচ মাস টোগোর জেলে বন্দি থাকার পর মুক্তি পেলেন ক্যাপ্টেন সুনীল জেমস। ছাড়া হল তাঁর সঙ্গী নাবিক বিজয়নকেও। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, শুক্রবারই ভারতে পৌঁছবেন দু’জনে। মুক্তির খবর শুনে কিছুটা স্বস্তিতে সুনীলের পরিবার। তাঁর অপেক্ষাতেই যে দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ছোট্ট ভিভানের দেহ মর্গে রাখা রয়েছে।
ভিভান, মানে সুনীলের শিশুপুত্র। অন্ত্রে গ্যাংগ্রিন হওয়ায় চিকিৎসকরা অপারেশন করেছিলেন এগারো মাসের এই খুদের শরীরে। কিন্তু তা-ও বাঁচানো যায়নি তাকে। চলতি মাসের গোড়ার দিকে মৃত্যু হয় ভিভানের। আর তার পর থেকেই জটিলতর হতে থাকে পরিস্থিতি।
ছেলেকে যাতে শেষ বারের মতো দেখতে পারেন সুনীল, সে জন্য মুম্বইয়ের একটি মর্গে রেখে দেওয়া হয় তার দেহ। আর তার পর থেকে স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে উদ্ভ্রান্তের মতো চেষ্টা চালিয়েছেন অদিতি জেমস। কিন্তু প্রথম দিকে আশ্বাস ছাড়া সে অর্থে আর কিছুই মেলেনি বলেই দাবি করেন তিনি। শেষমেশ ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে দেখা করেন অদিতি এবং সুনীলের আত্মীয়রা। বিষয়টা জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকে।
আজকের খবর শুনে অদিতির প্রথম প্রতিক্রিয়া, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর থেকেই সব কিছু যেন তাড়াতাড়ি হতে শুরু করল। ওঁকে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সব রকম চেষ্টা করেছে। আমি কৃতজ্ঞ।”
বৃহস্পতিবার সকালে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন জানান, আপাতত টোগোর লাগোয়া ঘানায় ভারতীয় হাই কমিশনার কে জিভা সাগরের সঙ্গে রয়েছেন ওই দুই ভারতীয় নাবিক। বস্তুত, সুনীলের পরিবারের আর্জি টোগোর প্রেসিডেন্ট ফউরে নাসিংবের গোচরে নিয়ে এসেছিলেন জিভাই। তার পরই ছাড়া পেলেন সুনীল এবং বিজয়ন। খবরটি সকালে টুইটারে জানান আকবরউদ্দিন। আচমকাই সুনীলের ফেরৎ আসার খবর জানতে পেরে বিহ্বল অদিতির প্রতিক্রিয়া, “গত কাল অবধি কোনও আশা ছিল না। তবে এখন স্বস্তিতে।”
জলদস্যুদের সাহায্য করার অভিযোগে গত জুলাইয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুনীল এবং বিজয়ন। পরে অবশ্য সে অভিযোগ তুলে নিয়ে চুরির অভিযোগ আনা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। কিন্তু তখনও টনক নড়েনি সরকারের। শেষমেশ ভিভানের মৃত্যুর কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানানোর পর নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। যা দেখে ক্ষুব্ধ সুনীলের আত্মীয় রাকেশ মাড়াপ্পা বলেছিলেন, “সরকারকে পদক্ষেপ করতে এক শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল?” বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদও এ দিন বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু এই মুক্তির জন্য আমলারা যে ভাবে চেষ্টা করেছেন তাতে আমি খুশি।” তবে একটা ব্যাপারে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। অদিতির দাবি, সুনীল পাকাপাকি ভাবেই ফেরৎ আসছেন। আর কোনও তদন্তের জন্য টোগোয় যেতে হবে না তাঁকে। বিদেশমন্ত্রক অবশ্য এ নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেনি।
তবে সুনীলের সামনে এখন আরও কঠিন লড়াই। যে শিশুপুত্রকে সুস্থ দেখে সফরে গিয়েছিলেন তিনি, ফিরে এসে সেই তাকেই দেখবেন মর্গের ঠান্ডা ঘরে, নিথর অবস্থায়। নিজের হাতেই করতে হবে তার শেষকৃত্য। জেল থেকে মুক্তি পেলেও তাই স্বস্তি নেই সুনীলের। |
|
|
|
|
|