ছিটমহল বিনিময়ের আর্জি, কেন্দ্রকে চাপ
র্তসাপেক্ষে ছিটমহল বিনিময়ের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর আর্জি নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্য বিজেপি। দলীয় সূত্রের খবর, দিল্লিতে ১ থেকে ৩ মার্চ আয়োজিত দলের ন্যাশনাল কাউন্সিল মিটিংয়ে ওই শর্ত ও তালিকা তুলে দেবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। বিজেপি সূত্রেই জানা গিয়েছে, ছিটমহল বিনিময়ের ব্যাপারে যাতে পাঁচটি শর্তসাপেক্ষে ওই ব্যাপারে এগোনোর অনুরোধ করা হবে। শর্তের মধ্যে দহগ্রাম, আঙ্গারপোতা বিনিময় প্রক্রিয়ার অধীন রাখা ছাড়া তেঁতুলিয়া করিডর চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি সহ দুই দেশে ছিটমহলের অবস্থানগত জটিলতার নিষ্পত্তির শর্তও রয়েছে। ছিটমহলের জমি বিনিময় করে হস্তান্তরের সওয়াল করা হয়েছে। নাগরিকরা যাতে তাঁদের দেশের সঙ্গে থাকেন তা নিশ্চিত করার শর্ত তালিকায় রাখা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে ইসলামপুর সীমান্তে বাংলাদেশ যাতে বাড়তি জমি দেয় সে শর্তও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের অভিযোগ, “কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘু ভোট প্রভাবিত করতে তড়িঘড়ি ছিটমহল বিনিময় করতে চাইছে। কিন্তু দুই দেশের সীমানা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। তাই জমি বিনিময় করা হলেও নাগরিক বিনিময় করা যাবে না। যাঁরা যে দেশের, তাঁদের সেই দেশের আওতায় রাখা দরকার। ‘অ্যাডভার্স পজিশন’ নিয়ে জটিলতা কাটানো জরুরি। ছিটমহল বিনিময় হলে আখেরে ভারতের অনেক বেশি জমি বাংলাদেশ পাবে। তাই ইসলামপুর সীমান্তে বাংলাদেশ যাতে আমাদের কিছু জমি ছাড় দেয়, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা দরকার। এ সব মিলিয়েই দিল্লিতে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে।”
একনজরে ছিটমহল
• মোট ছিটমহলের সংখ্যা ১৬২ টি
• ভারতীয় ভূখন্ড ঘেরা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে।
• বাংলাদেশের সীমানা ঘেরা ভারতের ছিটমহল সংখ্যা ১১১টি।
• ভারতীয় ছিটমহলের জনসংখ্যা ৩৭ হাজার ৩৯০ জন।
• বাংলাদেশি ছিটমহলে আছেন ১৪ হাজার ২০০ জন বাসিন্দা।
বিজেপি সূত্রেই জানা গিয়েছে, ভারতের মোট ১১১টি ছিটমহলের বাসিন্দাদের এই দেশে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশের ছিটমহলের বাসিন্দাদের সেই দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার শর্ত কতটা বাস্তব সম্মত হবে, সে ব্যাপারে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। ছিটমহল ঘেরা কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে বলে ওই শর্ত তালিকা নিয়ে জেলা নেতারা যে একটি রিপোর্ট রাজ্য নেতাদের দিয়েছেন তা নিয়ে দলে বিতর্ক আছে। কোচবিহারের বিজেপি নেতাদের একাংশের বক্তব্য, “নাগরিকরা কোন দেশের নাগরিকত্ব নেবেন তা তাঁদের ঠিক করার সুযোগ দেওয়া উচিত।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি হেমচন্দ্র রায় অবশ্য বলেন, “আমরা ছিটমহল বিনিময়ের পক্ষে। তবে কোনভাবেই দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে নয়। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর কিছু শর্ত দেওয়ার জন্য রাজ্য নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেখানে কি যোগ হবে কিংবা বাদ যাবে তা রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করবেন।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিল দে অবশ্য মনে করেন, ছিটমহলের বাসিন্দারা কে কোন দেশের নাগরিকত্ব নেবেন তা নিয়ে একটা ‘অপশন’ থাকাও দরকার। বিজেপির অভিযোগ, দহগ্রাম, অঙ্গারপোতা ছিটমহল বিনিময় না হলে জঙ্গিদের ভারতে ঢোকার রাস্তা বন্ধ হবে না। তিনবিঘার মত তেঁতুলিয়া করিডর চালু হলে কোচবিহার থেকে ইসলামপুরের সড়ক দূরত্ব প্রায় ৮০ কিমি কমবে। অথচ ওই ব্যাপারে বাংলাদেশের তরফে সাড়া মিলছে না। ভারত বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি নাগরিকত্বের প্রশ্নে রাজ্য বিজেপির শর্তে রীতিমতো অখুশি।
কমিটির সহকারী সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “ছিটমহলের জমি তো ব্যবহার যোগ্য নয়। তার চেয়ে বিনিময় হলে ভারতের ৭ হাজার একর কার্যকরী জমি বাড়বে। আর নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাছাইয়ের সুযোগ না দেওয়া হলে ফের অসংখ্য পরিবার উদ্বাস্তু হয়ে পড়বেন। তার দায় কেউই এড়াতে পারবেন না। ফলে সরকার ওই পথে হাঁটবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস।” কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ নৃপেন রায় জানান, বাজেট অধিবেশনে প্রস্তাব এলে তা নিয়ে ফের সরব হবেন। তাঁর মতে, “ছিটমহলের বাসিন্দারা কোন দেশের নাগরিকত্ব নেবেন তার সিদ্ধান্ত তাঁদের ওপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.