|
|
|
|
ঝাড়খণ্ডের কৃষি উন্নয়নে ভ্রাম্যমাণ কৃষক প্রশিক্ষণ |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার উজিয়ে সরকারি খামার বাড়িতে চাষাবাদের পাঠ পড়তে যেতে হয় না কৃষকদের। বরং বৈজ্ঞানিক উপায়ে কী ভাবে চাষাবাদ করা যেতে পারে কৃষকদের তা জানাতে ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিয়ে ঝাড়খণ্ড সরকার এখন হাজির হচ্ছে কৃষকদের গ্রামে। এতে একদিকে যেমন কৃষকদের হয়রানি কমছে, তেমনই কৃষকদের শিক্ষিত করে লাভের ‘ফসল’ ঘরে তুলতে চাইছে ঝাড়খণ্ড সরকার।
গত বছর থেকে এ ভাবে ভ্রাম্যমান কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঘুরে বেড়াচ্ছে ঝাড়খণ্ডের গ্রামে গ্রামে। এই প্রকল্পের সঙ্গে জুড়ে রয়েছেন বিরসা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি-শিক্ষা সম্প্রসারণ অধিকর্তা রত্নেশ্বরপ্রসাদ সিংহ রতনের কথায়, “এই ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আমাদের বিশেষজ্ঞরা থাকেন। তাঁরাই কৃষকদের চাষাবাদ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন।” একটি বেসরকারি সংস্থাকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকল্পটি চালিয়ে যাওয়ার বরাত দেওয়া হয়েছে। আপাতত, এই কাজে দু’টি বাস বরাদ্দ করা হয়েছে। |
|
ভ্রাম্যমাণ সেই কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ছবি: মুন্না কামদা। |
বাসের ভিতরের মেঝেতে বসে অন্তত পঞ্চাশ জন কৃষকের লেখাপড়ার ব্যবস্থা আছে। রয়েছে প্রোজেক্টর যন্ত্র ও সাউন্ড সিস্টেম। কখনও প্রোজেক্টরের মাধ্যমে ছবি দেখিয়ে, আবার কখনও স্লাইড শো-এর মাধ্যমে চাষবাস সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কৃষকদের। প্রকল্পের সেংযাজক বিনোদ কুমার বলেন, “দু-তিনটি গ্রামের কৃষকরা জেলার কৃষি আধিকারিকের কাছে ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য আবেদন করেন। জেলা কৃষি আধিকারিক আমাদের জানালে আমরা সংশ্লিষ্ট জেলার কোনও একটি ব্লকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে যাই। তাতে হয়তো একই দিনে কাছাকাছি গ্রামের দেড়শো-দু’শো জন কৃষক প্রশিক্ষণ নিতে আসেন। সারাদিন ক্লাস চলে। প্রতি পঞ্চাশ জনকে একদিনে এক ঘন্টা করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।”
শুক্রবার থেকে রাঁচির কাঁকেতে বিরসা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে শুরু হয়েছে ইস্টার্ন জোন এগ্রিকালচার ফেয়ার অ্যান্ড অ্যাগ্রোটেক কিষাণ মেলা-২০১৩। মেলা প্রাঙ্গনে রাখা হয়েছে এই ভ্রাম্যমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আজ সেখানে বক্তব্য রাখেন কোচবিহারের উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ ও শিক্ষা বিষয়ের অধিকর্তা ভরতচন্দ্র সাহা। তিনি এই ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের রাজ্যে এই ব্যবস্থা এখনও নেই। এই ধরনের একটি প্রকল্প হাতে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করছি। সরকারের কাছে সাহায্যও চাওয়া হয়েছে।” পশ্চিমবঙ্গের কৃষি মন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়েছেন, এ ভাবে গ্রামে গ্রামে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা পশ্চিমবঙ্গে নেই। তবে চাষাবাদের মাটি পরীক্ষার জন্য ভ্রাম্যমাণ গাড়ির ব্যবস্থা আছে পশ্চিমবঙ্গে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, “প্রশিক্ষণের জন্য আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কৃষকদের কথা বলাই। কোনও মরশুমে কী চাষ করা হয় তা নিয়ে লিফলেট বিলি করা হয়। তা ছাড়া ভোকেশনাল ট্রেনিং হয়। সরকারি খামার বাড়িগুলিতে এসেও কৃষকরা প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।” |
|
|
|
|
|