স্বাস্থ্য থেকে সেচ, সব নিয়েই নালিশ কর্তাকে
ভেঙেচুরে পড়ে নিয়মিত যাতায়াতের রাস্তা। স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার বলেও লাভ হয়নি।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা মেলে না চিকিত্‌সকের।
খনি এলাকা হলেও কিছু মানুষ কৃষির উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু চাষের জমিতে সেচের জলের কোনও ব্যবস্থা নেই।
এলাকাবাসীর সমস্যার কথা শুনতে গিয়ে এমনই নানা অভাব-অভিযোগ জানলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। মঙ্গলবার রাতে বারাবনির গোরাবাজার গ্রামে সে সব শুনে সমস্যা মেটাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে নির্দেশও দিলেন তিনি।
জেলাশাসক তো দূর, জেলার কোনও সরকারি দফতরের উচ্চস্তরের কর্তা এই গ্রামে এসে মানুষজনের মুখ থেকে সরাসরি সমস্যার কথা শোনেননি। তাই জেলাশাসক আসবেন শুনে বেশ সাজো সাজো রব ছিল গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দু’দিন আগে থেকে নানা এলাকায় এই সভার কথা প্রচার করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশ জেলাশাসককে সমস্যার কথা কতটা মন খুলে জানাতে পারবেন সে নিয়ে খানিকটা ধন্দে ছিলেন। সভা শেষে অবশ্য অনেকটা আশ্বস্ত তাঁরা।
এবড়ো-খেবড়ো এই পথ ধরেই যাতায়াত করতে হয়,
জানিয়েছেন বারাবনির গোরবাজারের বাসিন্দারা।—নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই গোরবাজার গ্রামে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। অস্থায়ী শিবির তৈরি করে আধিকারিক ও গ্রামবাসীদের বসার জায়গা হয়। বিকাল থেকেই আসতে শুরু করেন হোসেনপুর, গুঠুলিয়া, বিন্দুডি, দাসকেয়ারি, পানুড়িয়া, জামগ্রাম, কাশকুলি, খয়েরবনি, খরাবড় এলাকার বাসিন্দারা। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে প্রায় সাতশো মানুষ সেখানে হাজির হন। সন্ধ্যায় পৌঁছন জেলাশাসক। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস প্রমুখ।
সভায় গ্রামবাসীরা রাস্তা, জলের সমস্যার কথাই বেশি করে বলেন। নিরঞ্জন কর্মকার নামে এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, হোসেনপুর থেকে গোরবাজার, জামগ্রাম থেকে গোরবাজার, সন্ন্যাসী থেকে দিঘলমারা যাতায়াতের রাস্তাগুলি একেবারেই ভাল নয়। অথচ, গ্রামের মানুষজনকে এই রাস্তা ধরে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। ব্লক, মহকুমা প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন জানিয়েও ফল মেলেনি বলে তাঁর দাবি। সভায় উপস্থিত পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন।
বাসিন্দারা দাবি করেন, এলাকায় কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়ে তোলা হোক। তাঁদের আরও অভিযোগ, চিকিত্‌সা পরিষেবা পেতে হিমসিম খেতে হয়। গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত চিকিত্‌সক পাওয়া যায় না। প্রয়োজনীয় চিকিত্‌সা মেলে না। উপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে বারাবনির কেলেজোড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছতে অসুবিধায় পড়েন মানুষজন। এলাকাবাসীর দাবি, নিয়মিত ও উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করা হোক। সভায় উপস্থিত বারাবনির ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জেলাশাসক নির্দেশ দেন, সপ্তাহে এক বার গ্রামীণ এলাকায় অস্থায়ী চিকিত্‌সা শিবির করে গ্রামবাসীদের পরিষেবা দিতে হবে।
বারাবনির এই গ্রামগুলি খনি অধ্যুষিত হলেও কৃষিজীবীর সংখ্যা কম নয়। এমনই এক কৃষিজীবী যুগলপ্রসাদ সিংহ এলাকায় সেচ ব্যবস্থার উন্নতির দাবি জানান। তিনি জানান, শুষ্ক জমিতে ফসল ফলানোর জন্য তাঁদের ভরসা বৃষ্টির জল। তাই পাশের অজয় নদ থেকে জলসেচের ব্যবস্থা করলে সুবিধা হবে। তাঁর আরও অভিযোগ, কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে একশো দিনের কাজ আরও বেশি করে করারও দাবি জানান গ্রামবাসীরা। পরিচর্যার অভাবে গ্রামের অনেক পুকুর বুজে যাচ্ছে জানিয়ে বাসিন্দারা দাবি করেন, ব্লক প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে বুজে যাওয়া পুকুরগুলির সংস্কারের ব্যবস্থা করুক। জেলাশাসক ব্লকের আধিকারিককে এই সমস্ত সমস্যার দ্রুত সমাধানের পরামর্শ দেন।
রাত পৌনে ১১টা নাগাদ শেষ হয় সভা। বাড়ির পথ ধরেন গ্রামবাসীরা। অন্য আধিকারিকেরা-সহ জেলাশাসক অবশ্য ওই শিবিরেই রাত কাটান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.