পড়ার সঙ্গী ল্যাপটপ, গ্রামেও বাড়ছে বিক্রি
ম্পিউটারের মনিটরে ফুটে উঠছে বিশ্বজগতের তাবত্‌ তথ্য। পড়ার বইয়ে যা নেই, সে তথ্যও ইন্টারনেটের সংযোগে কম্পিউটারের মনিটরে নিমেষে চলে আসছে। তাই বাঁকুড়ার নতুন প্রজন্মের কাছে কম্পিউটার যেন ফ্রেন্ড, ফিলজফার, গাইড হয়ে উঠেছে। তবে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বহনে সহজ বলে ডেস্কটপের থেকে ল্যাপটপই বেশি পছন্দ করছে।
শুধু বাড়ির কম বয়েসিদের জন্যই যে ল্যাপটপ কেনার বিক্রি বেড়েছে তা নয়। কেউ বা ছেলের সঙ্গে কম্পিউটার গেমস খেলার উত্তেজনা উপভোগ করতে ল্যাপটপ কিনছেন। অনেক বধূ বাড়িতে নিঃসঙ্গতা কাটাতে স্কুল পড়ুয়া ছেলের জন্য কিনে আনা ল্যাপটপ নিয়ে দুপুরটা সোস্যাল সাইটের বন্ধুদের সঙ্গে ভার্চুয়াল আড্ডা মারছেন।
বাঁকুড়া কম্পিউটার ডিলার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিডিওএ) কর্তারা জানাচ্ছেন, শুধুমাত্র বাঁকুড়া শহরেই প্রতিমাসে গড়ে ২০০টি ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ বিক্রি হচ্ছে। জেলার বাকি দুই মহকুমা শহর খাতড়া ও বিষ্ণুপুরে বিক্রির হিসেব যোগ করলে সংখ্যাটা ৩০০ ছাড়িয়ে যাবে। তার মধ্যে ৬০ শতাংশই ল্যাপটপ। বাঁকুড়া শহরে শুধু কম্পিউটার বিক্রির দোকান রয়েছে ২০টি।
বাঁকুড়া শহর লাগোয়া বিকনার ডিএভি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আকাশ মুসিব, শুভদীপ দে বলে, “আমরা এখন থেকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেছি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ল্যাপটপ থেকে ওই পরীক্ষার যাবতীয় তথ্য জোগাড় করছি। খুব কাজে লাগছে।” ডিএভি স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক বিকাশ মান জানান, তাঁরা প্রায়শই ক্লাসে কোনও বিষয়ে ছেলেমেয়েদের বাড়তি তথ্যর জন্য কিছু ওয়েবসাইট দেখতে পরামর্শ দেন। তাঁর অভিজ্ঞতা, “ওই ওয়েবসাইট থেকে পড়ুয়ারা পাঠ্য বিষয়ের উপরে অনেক তথ্য পায়।”
সম্প্রতি বাঁকুড়ার প্রণবানন্দপল্লির বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাঠরত মেয়ের জন্য একটি ল্যাপটপ কিনেছেন। তিনি বলেন, “স্কুলে মেয়ের কম্পিউটারের ক্লাস শুরু হয়েছে। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে মেয়ের কম্পিউটার ব্যবহারের ভাল সুযোগ নেই। তাই বাড়িতে প্র্যাকটিসের জন্য ওকে একটা ল্যাপটপ কিনে দিলাম।” একই কথা শোনালেন বাঁকুড়া শহরের চাঁদমারিডাঙার বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী মনিষাঞ্জন দাস। সম্প্রতি তিনি অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ভাইপোকে একটি ল্যাপটপ কিনে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা প্রযুক্তির দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছি। তাই ভাইপোকে এখনই ল্যাপটপ কিনে দিলাম। ল্যাপটপটা ওর পড়াশোনার কাজে লাগবে।”
বিষ্ণুপুরের রাসতলার কম্পিউটার বিক্রেতা সুদীপ ঘোষ বলেন, “আগে ব্যবসা বা পেশাগত প্রয়োজনে লোকে কম্পিউটার কিনতেন। ইদানীং ছাত্রছাত্রীরা বাড়ির বড়দের সঙ্গে এসে কম্পিউটার কিনে নিয়ে যাচ্ছে।” বাঁকুড়া শহরের কাঠজুড়িডাঙার একটি কম্পিউটার দোকানের মালিক সম্রাট দাস বলেন, “ল্যাপটপের চাহিদা এখানে বেশ বেড়েছে। আমার দোকান থেকেই মাসে গড়ে ১২টি ল্যাপটপ বিক্রি হয়। কোনও কোনও মাসে আরও বেশি বিক্রি হয়।” তিনি জানাচ্ছেন, ব্যবসা কিংবা অনলাইনে শেয়ার কেনাবেচা করতে যেমন লোকে ল্যাপটপ কিনছেন, পাশাপাশি স্কুল পড়ুয়াদের জন্য ল্যাপটপ কেনার চলও এখন বেড়েছে। বিসিডিওএ-র জেলা সভাপতি সন্দীপ দে বলেন, “বাঁকুড়া জেলার বহু মানুষ দুর্গাপুর, আসানসোল, বর্ধমান, আরামবাগ ও মেদিনীপুর শহর থেকে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ কিনে আনছেন। সেই সংখ্যাটা ধরলে জেলায় কম্পিউটার বিক্রির সংখ্যা মাসে ৩০০-র অনেক বেশি।” তবে তাঁর মতে, অনেকের চাহিদা থাকলেও আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় ল্যাপটপ কিনতে পারছেন না। গাড়ি, মোটরবাইকের মতো ল্যাপটপ কেনার জন্য ঋণদানকারী কিছু সংস্থা সহজ কিস্তিতে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করলে আরও অনেকের হাতে ল্যাপটপ পৌঁছে যাবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.