হাওয়ায় শীতের ছোঁয়া লাগতেই শুরু হয়েছে পিকনিকের মরসুম। বেরিয়ে পড়েছেন ভ্রমণপিপাসুরাও।
শীতের মরসুমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়চক, ডায়মন্ড হারবারে গঙ্গার ধারে ধুম লেগে যায় পিকনিকের। রবিবার ছাড়াও ছুটির দিনগুলিতে ভিড় করে পিকনিক পার্টিরা। কিন্তু বছরের পর বছর উপযুক্ত দেখভালের অভাবে পিকনিক স্পটগুলির অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রবল হয়েছে পরিকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে পর্যটকদের অভিযোগ, ক্ষোভ। অবস্থা এমন যে মরসুম ছাড়া অন্য সময় কেউ ওই সব জায়গায় যেতে ভরসা পান না।
|
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় রয়েছে মূলত তিনটি পিকনিক স্পট। ডায়মন্ড হারবার পুরনো কেল্লার মাঠ, বামনগরের রায়চক জেটি ঘাট এবং ফলত—হুগলি নদীর ধারের এই তিনটি স্পটই পিকনিক পার্টির কাছে বেশি জনপ্রিয়। যেহেতু কলকাতা থেকে ডায়মন্ড হারবারের দূরত্বও খুব বেশি নয়, তাই কলকাতা থেকেও বহু পর্যটক আসেন এখানে। স্বাভাবিক ভাবেই ছুটির দিনে ভিড়টা বাড়ে। কিন্তু পিকনিক স্পটগুলির কোনওটাতে রয়েছে পানীয় জলের সমস্যা, আবার কোনওটাতে শৌচাগারের সমস্যা রয়েছে। প্রতি বছরই একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে ক্ষুব্ধ পর্যটকেরাও।
তিনটি পিকনিক স্পটের মধ্যে ডায়মন্ড হারবার পুরনো কেল্লার মাঠের দায়িত্বে রয়েছে ডায়মন্ড হারবার পুরসভা। ওই পিকনিক স্পটে পুরসভার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সহায়তায় যে পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং কয়েকটি শৌচাগারের ব্যবস্থা রয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। মহিলাদের জন্যও নেই পৃথক শৌচাগারের ব্যবস্থা। ডায়মন্ড হারবার পুরসভার উপ-পুরপ্রধান পান্নালাল হালদার বলেন, “এটা ঠিক যে পানীয় জলের এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তবে এ বছর অস্থায়ী শৌচাগার এবং অতিরিক্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” যদিও স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
রায়চক জেটিঘাটের পাশের মাঠের পিকনিক স্পটটি ডায়মন্ড হারবার-২ ব্লকের মাথুর পঞ্চায়েতের অধীন। এখানেও পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। একটি শৌচাগার নির্মিত হলেও জলের অভাবে সেটি চালু করা যায়নি। ফলে পিকনিক করতে আসা মানুষজনের ভরসা স্থানীয় মানুষের তৈরি করে দেওয়া অস্থায়ী শৌচাগার এবং দশ মিনিট হাঁটাপথে রায়চক ঘাটের কাছে একটি মাত্র পানীয় জলের নলকূপ। |
মাথুর পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান মিঠু মণ্ডল বলেন, “আমরা সদ্য ক্ষমতায় এসেছি, এখনও এই বিষয়টি নিয়ে তেমন এগোনো যায়নি। তবে স্থানীয় একটি বেসরকারি হোটেল কর্তৃপক্ষকে আপাতত পিকনিক করতে আসা পর্যটকদের জন্য পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।” ডায়মন্ড হারবার-২ এর বিডিও তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “সাংসদ তহবিলের টাকায় ওই এলাকায় একটি অস্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ হলেও জলের ব্যবস্থা না থাকায় সেটি চালু করা যাচ্ছে না। খুব শীঘ্রই পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হুগলি নদীর ধারে ফলতা পিকনিক স্পটটিরও একই দুর্দশা। এখানেও রয়েছে পানীয় জল ও শৌচাগারের সমস্যা। স্থানীয় মানুষের তৈরি কয়েকটি অস্থায়ী শৌচাগার থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফলতা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মঞ্জু নস্কর বলেন, “১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ওই পিকনিক স্পটে অস্থায়ী ভাবে পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” এ ক্ষেত্রেও সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা শোনা যায়নি পঞ্চায়েত সমিতির কাছে। |