ফের জিটিএ চিফ পদে বসার আগে দলের নেতা-কর্মীদের জেল থেকে ছাড়ানোর প্রক্রিয়া ত্বরাণ্বিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। দল সূত্রের খবর, মোর্চা সভাপতির নির্দেশে মঙ্গলবার দলের প্রচার সচিব হরকাবাহাদুর ছেত্রী ফের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার হুমকি দিয়েছেন। হরকাবাহাদুর বলেছেন, “আমাদের জিটিএ সদস্য-সদস্যাদের মধ্যে ৮ জন এখনও জেলবন্দি। তাঁদের মুক্তির ব্যবস্থা করাতে হবে। আগামী ২০ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমাদের দলের সভাপতির একান্ত সাক্ষাত্ হবে। আশা করব, সে দিন আমাদের দলের নেতাদের জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আশাব্যাঞ্জক সিদ্ধান্ত হবে।” এর পরেই কালিম্পঙের বিধায়ক ছেত্রীর হুঁশিয়ারি, “ওই বৈঠকে জেলবন্দি নেতা-কর্মীদের ছাড়ানোর প্রক্রিয়া না এগোলে আমাদের দলের তিন জন বিধায়ককে ইস্তফা দেওয়ার কথা ভাবতে হবে।”
তবে মোর্চা সভাপতি নিজে বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি যে ফের জিটিএ চিফ হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারেই ভাবছেন, তা অবশ্য স্বীকার করেছেন। গুরুঙ্গ বলেছেন, “দলের সব জিটিএ সদস্য-সদস্যা মিলে আমাকে ফের চিফ পদে বসাতে চাইছেন। পাহাড়ের মানুষও চাইছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবছি।” মোর্চা সভাপতির ঘনিষ্ঠ এক অনুগামী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে যে সব দাবি-দাওয়া পেশ করা হবে, তার মধ্যে ধৃত জেলবন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তির বিষয়টি অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। ওই নেতা জানান, ধৃতদের মুক্তির ব্যবস্থা না করে দ্বিতীয় দফায় জিটিএ চিফ পদে গুরুঙ্গ বসলে তাঁকে দলের মধ্যেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। বিশেষত, যে জিটিএ সদস্য-সদস্যারা জেলবন্দি রয়েছেন, তাঁদের পরিবারের অনেকেই প্রকাশ্যে মোর্চা সভাপতির বিরুদ্ধে সরব হতে পারেন বলেও দলের অন্দরে আশঙ্কা রয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে প্রচার সচিব হরকাবাহাদুর ছেত্রীর ইস্তফা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়াটা তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন মোর্চা নেতাদের অনেকেই।
এদিন শিলিগুড়িতে দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দল নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “জিটিএ চিফ পদে বিমল গুরুঙ্গের ফিরে আসাকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে বিমল কেন জিটিএ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, কেনই বা ফিরে আসছেন, তা পরিষ্কার নয়। পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসা জরুরি, তা যে ভাবেই আসুক। পাহাড়ে শান্তি প্রক্রিয়া চালু রাখতে মোর্চা ও রাজ্য সরকারকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।” এ দিকে, সদ্য তৃণমূলে আসা জিএনএলএফের প্রাক্তন বিধায়ক প্রণয় রাইকে দলের আইনজীবী সেলে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে দল সূত্রের খবর। পেশায় আইনজীবী প্রণয়বাবুকে দার্জিলিঙের সরকারি কৌঁসুলী পদেও মনোনীত করা হতে পারে বলে তৃণমূলের একটি সূত্র জানিয়েছে। |