বাগানের জয়ের সঙ্গে আরও এক ম্যাচের লাইফলাইন পেলেন কোচ করিম বেঞ্চারিফা।
এরিয়ানকে কলকাতা লিগে হারানোর পর আগামী বৃহস্পতিবার কোচকে ছাঁটার প্রস্তাবিত কর্মসমিতির বৈঠক স্থগিত করে দিলেন কর্তারা।
এক ম্যাচের লাইফ লাইনশনিবারে পুণে এফসি ম্যাচ। ক্লাব সূত্রের খবর ওই দিন হারলে আবার পরের দিনই ওই স্থগিত বৈঠক ডাকা হবে। এ দিনের বিপক্ষ কোচ রঘু নন্দী যদিও বলে গেলেন, “কলকাতা লিগ আর আই লিগ কিন্তু এক নয়।”
ঘাড়ের ওপর ছাটাইয়ের খাঁড়া। এই অবস্থায় ঈশ্বরেই অবশ্য ভরসা রাখছেন করিম। বারাসতে এরিয়ানের বিরুদ্ধে নাটকীয় জয়ের পর মনে হচ্ছে ফুটবল ঈশ্বর হয়তো মরক্কান কোচের ওপর আর্শীবাদের হাত রেখেছেন।
দুটো পেনাল্টি, বিপক্ষের দুই ফুটবলারের লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়া। দুটোই সাহায্য করল বাগান কোচকে।
সাংবাদিক সম্মেলনে করিম স্বীকার করলেন “সোমবার ফুটবলাররা আমার হয়ে সওয়াল করেছিল। আজ করলেন ঈশ্বর।” |
যে কর্তারা রবিবার রাতে সচিবের সল্টলেকের বাড়িতে কোচ ছাঁটার বৈঠকে ছিলেন তার নব্বই শতাংশই এ দিন মাঠে আসেননি। তাঁরা চোখ রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। করিমের সৌভাগ্য টিমের দুই বিদেশি স্ট্রাইকার ওডাফা ওকোলি এবং চিজোবা ক্রিস্টোফার না থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত চচ্চড়ির মশলা দিয়ে বিরিয়ানি রেঁধে ফেললেন।
নাটকীয় জয় কেন? প্রথমার্ধে কোনও গোল হয়নি। উল্টে এরিয়ানের স্ট্যানলি, ইমানুয়েলদের ঝটকা চাপ বাড়াচ্ছিল সবুজ-মেরুন রক্ষণে। করিমের ভাগ্য খুলে গেল একুশ মিনিটে। গোলমুখী রাম মালিককে অবৈধ ভাবে বাধা দিয়ে লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে গেলেন এরিয়ানের লেফট ব্যাক প্রসেনজিৎ।
দশ জনের এরিয়ানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধে করিম গোটা স্টেডিয়ামকে অবাক করে ইচেকে করে দিলেন স্ট্রাইকার। যিনি শেষ বার ওই পজিসনে খেলেছেন নাইজিরিয়ার অ্যাকাডেমিতে ফুটবল শেখার সময়! সাইজুকে তুলে নামালেন লেফট ব্যাক সৌভিককে। এতে কাজের কাজ হল দু’টো। এক, ইচেকে আটকাতে স্ট্যানলি নেমে এলেন রক্ষণে। কমে গেল রঘুর দলের আক্রমণের ঝাঁঝ। দুই, ইচেকে বিপক্ষ কড়া নজরে রাখায় ফাঁকা জায়গা পেলেন রাম, মণীশ, কাতসুমিরা।
এই সময়ই বক্সে হাত দিয়ে বল আটকে উজ্জ্বল লাল কার্ড দেখায় ন’জন হয়ে গেল এরিয়ান। পেনাল্টি নিতে গিয়ে প্রথমে রেফারির বাঁশির আগেই মেরে দিয়েছিলেন মণীশ। দ্বিতীয় বার শট নেওয়ার সময় ভুল করেননি।
মিনিট পনেরো পরেই ফের পেনাল্টি। এ বার নিলেন কাতসুমি। এরিয়ান গোলকিপার তন্ময়ের হাতে লেগে ফিরলে সেই বলে গোল বাগানের জাপানির। তিন মিনিট পরে মণীশের দুরপাল্লার শটে গোলটিও হাফ চান্স থেকে। শেষ বেলায় অফ সাইড থেকে অযথা বল গোলে ঠেলে ইচে লাল কার্ড না দেখলেই পারতেন।
এ দিন করিমের সমর্থনে স্টেডিয়ামে পেল্লাই সাইজের ফেস্টুন টাঙিয়েছিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। যাতে লেখা, “করিম স্যর, উই আর উইথ ইউ।” সমর্থকরা সঙ্গে, ফুটবলাররাও। কোচের কথায়, ‘ঈশ্বরও’।
তা হলে বাগানে ‘হট সিট’ করিমের অনুকূলে? ভুল ভাঙলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলেরই এক সদস্য। ড্রেসিংরুম থেকে বেরোনোর পথে বলে গেলেন, “যদি আগে জানতাম ওডাফা সই করাবে কোচের সমর্থনে, তা হলে অনুশীলন সেরে আগেই বাড়ি চলে যেতাম।”
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই উলট-পুরাণ! মনে করাচ্ছে দশ বছর আগের সুব্রত বিদায়ের এপিসোডকে। করিমের কী হবে? এখন সেটাই দেখার।
মোহনবাগান: শিল্টন, প্রীতম, রোয়িলসন, ইচে, আইবর, পঙ্কজ, ডেনসন, মণীশ (প্রকাশ), রাম (অর্ঘ্য), কাতসুমি, সাইজু (সৌভিক)।
|