|
|
|
|
ফের চমক, সরকার গড়তেও জনতার মতামত নিচ্ছে আপ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১৭ ডিসেম্বর |
‘পহেলে আপ’-এর পর্ব ছেড়ে এ বারে সরকার গড়ার চেষ্টা। আর সেখানেও চমক দেখাচ্ছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ।
দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে অতিমানবীয় উত্থান হলেও সরকার গড়ার মতো স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা জোটেনি আপ-এর। তারা সরকার গড়ার জন্য এগিয়ে দিয়েছিল একক বৃহত্তম দল বিজেপিকে। কিন্তু স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় বিজেপি নিজেরা পিছিয়ে এসে আপ-কে এগিয়ে দেয়। এই ‘পহেলে আপ’-এর সৌজন্যে ফল প্রকাশের ১০ দিন পরেও দিল্লি সরকারহীন! এই অবস্থায় যথেষ্ট চাপে অরবিন্দের দল। বিজেপি বা কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়া ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন। এই অবস্থায় তাই ফের জনতার দরবারে যাচ্ছে আপ। এ বারে অবশ্য ইভিএমে নয়, অরবিন্দের দল আম দিল্লিবাসীর মতামত চাইবে এসএমএস, ওয়েবসাইট ও জনসভার মাধ্যমে। ভোট মিটে যাওয়ার পরেও এ ভাবে জনতার রায় নিয়ে সরকার গড়ার চেষ্টা কোনও দিন কোথাও হয়েছে কি না, মনে করতে পারছেন না কেউই। সেই অর্থে, নির্বাচনী প্রচারের পরে সরকার গড়তে গিয়েও অরবিন্দের দল চমক দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন দিল্লিবাসীই।
আজ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ার ব্যাপারে দিল্লিবাসীই মত দিন। সেই মত জানতে দিল্লির ২৫ লক্ষ ভোটারকে সরাসরি চিঠি দিচ্ছেন তিনি। এ ছাড়া হবে জনসভা। একটা-দু’টো নয়, দু’শোটি। দিল্লির ৭০টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি ওয়ার্ডে জনসভা করে দিল্লিবাসীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁদের মত নেবেন কেজরিওয়ালরা। চলতি সপ্তাহ জুড়ে এই প্রক্রিয়া চলবে।
আপ-এর তরফে জানানো হয়েছে, চিঠির উত্তর ও জনসভায় মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখেই দিল্লিতে সরকার গড়ার ব্যাপারে আগামী সোমবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দল। নিয়মানুযায়ী আগামিকালই দিল্লিতে সরকার গড়ার শেষ দিন। আগামিকাল বা পরশু থেকেই দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পুরোমাত্রায়।
চলতি জটিলতার বিষয়টি মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দের কাছে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। তাতে অনেকগুলি বিকল্পের মধ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির করার ব্যাপারেও সুপারিশ করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, দিল্লিতে ত্রিশঙ্কুর আশঙ্কা দেখে ভোটের ফল প্রকাশের আগেই রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন জং। জানতে চেয়েছিলেন, ত্রিশঙ্কু হলে সংবিধান অনুযায়ী তাঁর কী করা উচিত। রাষ্ট্রপতি তাঁকে সংবিধানের আওতায় সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলির ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
তবে এখন কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, কাল বিধানসভার মেয়াদ শেষ হলেও রাষ্ট্রপতি শাসন জারি না-ও করা হতে পারে। বরং গতকাল মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে যে, বিধানসভা জিইয়ে রেখে আরও ক’দিন অপেক্ষা করা হোক। এ কথা বলে আসলে কৌশলে আপ-এর ওপরেই চাপ বাড়াচ্ছে কংগ্রেস।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের মতে, কংগ্রেসের সেই চাপেই আজ পাল্টা কৌশল নিয়েছেন কেজরিওয়ালরা। সরকার গঠনের জন্য জনমত নিতে চাইছেন। যাতে ভবিষ্যতে কোনও নেতিবাচক পরিস্থিতি হলে বা স্থায়িত্বের সঙ্কট হলে বলতে পারেন, জনতার চাপেই তাঁরা সরকার গড়েছিলেন। তা ছাড়া দু’শোটি জনসভা করে বা ২৫ লক্ষ চিঠি পাঠিয়ে ভবিষ্যতে নির্বাচনের জন্য প্রচারের জমিও তৈরি করে রাখতে চাইছেন আপ-নেতৃত্ব। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অন্য একটি অংশ অবশ্য বলছেন, অরবিন্দের নয়া কৌশলের পিছনে আরও একটি কারণ থাকতে পারে। তা হল, যে ভাবে অণ্ণা হজারে লোকপাল বিল প্রশ্নে কেজরিওয়ালকে এক ঘরে করে দিয়েছেন, তা সমস্যায় ফেলেছে তাদের। হয়তো সেই পটভূমিতেই নতুন ‘সিকোয়েন্স’ ভেবে রেখেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
ঝাঁটা হাতে মাঠে নেমে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রথম চিত্রনাট্য সুপারহিট। দ্বিতীয়টিও দিল্লির আমজনতার বক্স অফিসে সাড়া ফেলতে পারে কি না, সেটাই দেখার।
ফল বেরোবে আগামী সোমবার!
|
পুরনো খবর: ভবিষ্যতে লাভের লোভে দিল্লি অচ্ছুত সবার |
|
|
|
|
|