তত্ত্বটা বেশ পুরনো। কিন্তু এ বারও খারিজ হয়ে গেল প্রমাণের অভাবে। মঙ্গলবার ব্রিটেনের মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, ডায়ানার মৃত্যুর নেপথ্যে ব্রিটিশ সেনার বিশেষ অংশ ‘স্পেশ্যাল এয়ার সার্ভিস’ বা ‘স্যাস’-এর হাত থাকতে পারে বলে যে অভিযোগ উঠেছিল, তার সপক্ষে কোনও ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ পায়নি তারা। অতএব, যুবরানির মৃত্যুকে হত্যা ভাবারও সঙ্গত কারণ নেই। তাই ডায়ানার মৃত্যু নিয়ে তাঁরা নতুন করে কোনও তদন্তও শুরু করবেন না।
১৯৯৭ সালের ৩১ অগস্ট প্যারিসে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান ডায়ানা। একই গাড়িতে সফর করছিলেন তাঁর প্রেমিক ডোডি আল ফায়েদ। মৃত্যু হয় তাঁরও। প্রাণ হারান চালক হেনরি পল। দুর্ঘটনা বলা হলেও মাঝেমধ্যেই রব উঠেছে মৃত্যু নয়, ছক কষে হত্যা করা হয় যুবরানিকে। চলতি বছরের অগস্ট মাসে এ রকমই একটা দাবি ফের সামনে আসে। তবে অন্য ভাবে। একটি সাত পাতার চিঠি হাতে পায় ব্রিটিশ মেট্রোপলিটন পুলিশ। তাতে বলা হয়েছিল, স্যাসের কয়েক জন সদস্যই ডায়ানা হত্যার মূল চক্রী। অসমর্থিত সূত্রের মতে, কথাগুলো নিজের প্রাক্তন শ্বশুর-শাশুড়িকে বলেছিলেন স্যাসেরই এক সময়ের সদস্য। তাঁকে ব্রিটেন তথা গোটা দুনিয়া জানে ‘সোলজার এন’ হিসেবে। কিন্তু তাঁর আসল পরিচয় এখনও অজানা।
চিঠির অভিযোগের ভিত্তিতে নতুন করে খোঁজখবর শুরু করে ব্রিটিশ পুলিশ। স্যাস-এর দফতরে গিয়ে সে সময়ের যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখেন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সাত গোয়েন্দা। দুর্ঘটনার কী কী সম্ভাব্য ব্যাখ্যা থাকতে পারে, তা-ও যাচাই করে দেখেন তাঁরা। কিন্তু স্যাস-এর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণই পাননি। মঙ্গলবার পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার মার্ক রোলে জানিয়েই দেন, “এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি যার জেরে ফের তদন্ত শুরু করা যেতে পারে।” ডোডি আল ফায়েদের বাবা মহম্মদ আল ফায়েদ, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং যুবরাজ চার্লস-সহ সব পক্ষকেই এই কথা জানানো হয়। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের এই বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ মহম্মদের আইনজীবী সাইমন ম্যাকে বলে ফেলেন, “ষোলো বছর ধরে যে ভাবে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে, এটা তার সাম্প্রতিকতম সংযোজন।” ডায়ানার মৃত্যুর পর মহম্মদ একাধিক বার হত্যার অভিযোগ তুলেছিলেন।
২০০৮ সালের রিপোর্টে হত্যার তত্ত্ব উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। দুর্ঘটনার যাবতীয় দায় এসে পড়ে নিহত চালক হেনরির উপর। বলা হয়, প্যারিসের হোটেল থেকে গাড়ি নিয়ে বেরোনো মাত্রই ডায়ানা এবং ডোডির পিছু নিয়েছিল সাংবাদিকরা। তাঁদের হাত থেকে বাঁচাতে বিপজ্জনক গতিতে গাড়ি চালাতে শুরু করেন নেশাগ্রস্ত হেনরি। মূলত হেনরিরই গাফিলতির জন্য সে দিনের দুর্ঘটনা বলে দাবি করা হয় তদন্ত রিপোর্টে। ব্রিটিশ পুলিশের এ দিনের বক্তব্য সেই দুর্ঘটনার তত্ত্বতেই ফের সিলমোহর দিল।
|