|
|
|
|
গ্রামের নির্ভয়াদের কী হবে, প্রশ্ন অন্য এক মায়ের
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
১৬ ডিসেম্বর |
নির্ভয়া কাণ্ড নিয়ে গোটা দেশ যখন উত্তাল, গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল কিশোরীটিও। দিল্লি থেকে মাত্র দু’ঘণ্টার দূরত্ব। নতুন বছরের প্রাক্কালে চুপিসারে ছয় ধর্ষক চড়াও হয়েছিল তাঁর উপরে। সেই নিপীড়ন সহ্য করেও অপমানের বদলা নিতে তৈরি ছিল সীমা (আইনি কারণে নাম পরিবর্তিত)। কিন্তু পারেনি। নির্ভয়ার মতো পাশে সারা দেশকে পায়নি। প্রতিবেশী বা পুলিশ কেউই সাহায্য করেনি। ধর্ষণের মাস ছয়েক পরে নিজেকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মেরেছিল সে।
“খুব সাহসী ছিল মেয়েটা। লড়াই চালিয়ে যাবে ভেবেছিল। কিন্তু শেষের দিকে আর পারেনি,” মেয়ের প্রিয় লাল সোয়েটারটা আঁকড়ে ভেজা চোখে বলছিলেন সীমার মা। রাজধানীর পথে সেই সময় অনেক মানুষের মিছিল। ধর্ষণের শাস্তি নিয়ে জোর বিতর্ক। কিন্তু সবার অলক্ষেই থেকে গিয়েছিল সীমা। কারণ সে অখ্যাত গ্রামের কিশোরী। যে গ্রামের প্রতিবেশীরা ধর্ষণের পরে তাকেই দুষেছে। পুলিশের কাছে গিয়েও লাভ হয়নি। সীমার মা বলেন, “দিল্লির ঘটনায় সাহস পায়। ভেবেছিলাম দেশ মহিলাদের পাশে। দিল্লির মেয়েটির জন্য সবাই পথে নামল। কিন্তু আমাদের হয়ে কেউ কিছু বলল না।”
সীমা-নির্ভয়ার মতো মেয়েদের সহায়তার জন্যই একটি ট্রাস্ট গড়তে চলেছেন নির্ভয়ার পরিবার। সোমবার এই কথা জানান নির্ভয়ার মা। এমন একটা ট্রাস্ট থাকলে সীমাদের মতো করুণ পরিণতি অন্যান্য নিগৃহীতাদের হবে না বলেই আশা অনেকের।
১৫ বছরের সীমা কিন্তু পণ করেছিল, হার মানবে না। ধর্ষকদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। বার বার তাই গিয়েছিল পুলিশের কাছে। যে পুলিশ এখনও ঘটনা থেকে হাত ধুয়ে ফেলতে চাইছে। এখনও চার্জশিট দিতে পারেনি তারা। ছয় ধর্ষকের মধ্যে দু’জনকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু এক বছর পরে হরিয়ানার সেই গ্রামের মেয়েটি কি বিচার পাবে? সংশ্লিষ্ট থানায় ফোন করে কোনও উত্তর মেলেনি।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছর গোটা দেশে ২৪, ৯২৩টি ধর্ষণের মামলা হয়েছিল। ২০১৩-য় সেই সংখ্যাটা ছাড়িয়ে যাবে বলেই দাবি এনসিআরবি-র। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে মৌসুমী কুণ্ডু জানান, দিল্লি গণ-ধর্ষণের পরে মানুষের মধ্যে সচেতনতা ও সাহস বাড়ছে। সীমার ঘটনাই তার প্রমাণ। ধর্ষণ মানে কলঙ্ক, গ্রামবাসীদের মধ্যে এই ধারণা প্রবল।
সীমা নেই। ওর লড়াইটা করতে চায় পরিবার। বছরের পর বছরে তার জন্য কোর্টে হত্যে দিতে হলেও। “জানি না কোনও দিন বিচার পাব কি না,” স্কুলপোশাকে মেয়ের একটা ছবিতে চোখ রেখে হতাশ গলায় বলেন সীমার মা। ছবির নীচে জ্বলজ্বল করছে মেয়ের মৃত্যুর তারিখ। |
পুরনো খবর: এক বছরে বদল কতটা, জিজ্ঞাসা দিল্লিবাসীর |
|
|
|
|
|