ওয়ান্ডারার্সে প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচের দুঃস্বপ্ন কাটতে না কাটতেই সেখানে প্রথম টেস্ট। তার আগে বেনোনিতে যাও বা দু’দিনের প্র্যাকটিস ম্যাচের ব্যবস্থা ছিল, তাও ভিজে আউটফিল্ডের জন্য বাতিল হয়ে যাওয়ায় ভারতীয় ক্রিকেটারদের সামনে এখন অনুশীলন ছাড়া কোনও গতি নেই। দু’দিন ধরে ভারতীয় দল চুটিয়ে অনুশীলন করেও নিল। যে অনুশীলনে উঠে আসছে প্রচুর ছক ও অঙ্ক।
ওয়ান্ডারার্সে যাঁদের নিয়ে মাঠে নামবেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, তাঁদের এই দু’দিনে একটু বেশি করেই প্র্যাকটিস করিয়ে নিলেন ডানকান ফ্লেচার। ম্যাচ প্র্যাকটিসের অভাবে নেটেই চলল শর্ট বল আর গতি সামলানোর মহড়া। জোহানেসবার্গে গিয়ে যদিও আর এক দফা প্র্যাকটিস সারবেন ধোনিরা, কিন্তু টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি বেনোনির উইলোমুর পার্কেই শুরু করে দিলেন তাঁরা। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ওপেনার হার্সেল গিবস যেমন বলছেন, “ওয়ান ডে ম্যাচে যেমন উইকেট ছিল, ওয়ান্ডারার্স টেস্টেও প্রায় সে রকমই উইকেটই আশা করা উচিত ভারতের।” গিবসের সঙ্গে কথা না বললেও বাইশ গজের তেমন চরিত্রের কথা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি শুরু ভারতের।
আগের দিনের চেয়ে শনিবার ভারতীয় দলের নেটের ছবিটা একটু অন্য রকম। শনিবার যেমন প্রজ্ঞান ওঝা অনেক কম বল করলেন। জাহির, ইশান্ত, অশ্বিন ও শামি এই চারজনই এ দিন ধোনিদের নেটে সবচেয়ে ব্যস্ত বোলার। ইঙ্গিতটা স্পষ্ট, আগামী বুধবার ওয়ান্ডারার্সে ভারতের বোলিং আক্রমণের দায়িত্ব হয়তো এই চারজনকেই নিতে হবে। রবীন্দ্র জাডেজাকে দু’দিনের এক দিনও সে ভাবে নেটে ব্যাট করতে দেখা গেল না। শুধু নকিং করলেন। অজিঙ্ক রাহানে তাও শুক্রবার নেটে খানিকক্ষণ ব্যাট করেছিলেন রোহিত শর্মাকে জুটি করে। অম্বাতি রায়ডু তো একদিনও বেশিক্ষণ নেটে থাকার সুযোগ পেলেন না। তাঁরও জাডেজার মতোই অবস্থা। তবে রাহানের অশ্বিন, মুরলী, কোহলিদের পাশে দাঁড়িয়ে স্লিপ ক্যাচ প্র্যাকটিসের মধ্যে তাঁর প্রথম এগারোয় থাকার একটা প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত অবশ্যই রয়েছে। যেমন চেতেশ্বর পূজারাকে জুটি করে বিরাট কোহলির ব্যাট করার ঘটনায় এটাই স্পষ্ট যে, সচিনের চার নম্বর জায়গায় তাঁর নামার সম্ভাবনাই বেশি। তা হলে ওয়ান্ডারার্সে যদি ব্যাটিং লাইন-আপটা হয় মুরলী, ধবন, পূজারা, কোহলি, রোহিত, রাহানে, ধোনি, তা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সেক্ষেত্রে চার বোলার জাহির, ইশান্ত, শামি ও অশ্বিন। কিন্তু ধোনি সাত ব্যাটসম্যান তত্ত্বে কতটা ভরসা রাখবেন, তা ভারত অধিনায়কই বলতে পারবেন।
কোহলি নেটে ঢুকতে ফ্লেচারের নির্দেশে জোরের উপর শর্ট বল করতে শুরু করলেন জাহির ও উমেশ। যাতে ওয়ান্ডারার্সের গতি ও বাউন্সের স্বর্গে স্টেইন, মর্কেলদের রাক্ষুসে বোলিং সামলাতে তৈরি থাকেন কোহলি। জাহিররা কোচের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন। বেশ কয়েকটা বলে স্ট্রোকও নিতে দেখা গেল এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারকাকে। পুলও করলেন বেশ কয়েকটা। শিখর ধবনকে দেখা গেল বোলিং কোচ জো ডসের ‘থ্রো-ডাউন’ সামলাতে। বেশির ভাগই শর্ট-পিচড।
প্রস্তুতি জোরদার চললেও বুধবার মাঠে নেমে ওয়ান ডে-র মতো হাল হবে না তো ভারতীয় ব্যাটিংয়ের? এর উত্তরে গিবসের মন্তব্য, “হতেই পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য। তবে ভারত যদি ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই তাড়াহুড়ো না করে টিকে যায়, তা হলে ওরা সামলে নিতে পারবে। ভারতের তরুণ ব্যাটসম্যানরা সহজাত স্ট্রোক প্লেয়ার ঠিকই। কিন্তু শুরু থেকেই ওদের এই প্রবৃত্তিকে মাথাচাড়া দিতে দিলে সমস্যায় পড়ে যাবে।” |