শেষ অবধি সেঞ্চুরিয়নে ভারতীয় বোলাররা তাদের নিজেদের দিকে যাবতীয় আকর্ষণ টেনে নিতে পারল। কিন্তু তাতেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিনশোর বেশি রান তোলা থেকে আটকানো গেল না। গোড়ার দিকে কয়েকটা উইকেট হারানোর ঝটকা খাওয়ার পরেও ওরা তিনশো তুলেছে। তবে শুরুর ওই উইকেট ক’টা তুলে নেওয়ার মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের জন্য চলতি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কিছু আশাবাদ ছিল। মহম্মদ শামিকে একটা জবরদস্ত আবিষ্কার মনে হচ্ছে। আর ইশান্ত শর্মাকে দেখে মনে হচ্ছে, নিজের সন্দেহাতীত প্রতিভার সঙ্গে ওর বিরল ধারাবাহিকতাটা এত দিনে হয়তো যুক্ত হতে চলেছে।
শামি ভাল গতিতে বল করার পাশাপাশি সিম-সুইং, দুটোই করছে। তবে যেটার জন্য ওকে অন্য ভারতীয় পেসারদের থেকে আলাদা দেখাচ্ছে, তা হল ওর বোলিংয়ের নিয়ন্ত্রণ। সর্বদাই প্রায় ফুল পিচড্ ডেলিভারি করে। ওর বলে মারা বাউন্ডারিগুলোর বেশিরভাগ ‘ভি’-অঞ্চল দিয়ে যাওয়াই যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। তিনটে ওয়ান ডে-তে তিন বারই আমলাকে আউট করেছে শামি। টেস্ট সিরিজে ও-ই ভারতীয় আক্রমণের মূল শক্তি হবে মনে হচ্ছে।
ইশান্তের বোলিংয়ের যেটা লাইন ও সেটাতেই লেগে থাকছে। লেংথটাও খুব প্রশংসনীয়। বোলিংয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য ইশান্ত ওর পেসকে জলাঞ্জলি দিতেও তৈরি মনে হচ্ছে। আর সেটাই একেবারে ঠিক। টেস্টে শামি-ইশান্তের কাছ থেকে বড় পারফরম্যান্সের প্রয়োজন ভারতের।
তা সত্ত্বেও ভারতীয় বোলিং কিন্তু স্পিনারদের ঘিরে তৈরি। যদিও জাদেজা আর অশ্বিন মাঝের ওভারগুলো আটকে রাখতে পারেনি। যে জন্য সব ক’টা ওয়ান ডে-তে দক্ষিণ আফ্রিকা শেষমেশ বিরাট ইনিংস গড়েছে। এমনকী সেঞ্চুরিয়নে গোড়ার দিকে পেসাররা গোটাকয়েক উইকেট নিলেও তাতে প্রতিপক্ষের তিনশো রান তোলা আটকায়নি।
ভারতের বোলিং সমস্যা দূর করতেই হবে। একমাত্র মহম্মদ শামি উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। টেস্ট সিরিজে ভারতকে সম্মান বাঁচাতে হলে শামির সতীর্থদের মধ্যেও সেই উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ফুটে ওঠা দরকার। দক্ষিণ আফ্রিকার পেস আর বাউন্সি উইকেটে ধোনির দলের ব্যাটসম্যানদের উপর থেকে একমাত্র চাপ কমাতে পারে টিমের বোলারদের পারফরম্যান্সই। |