জামিন পেলেও লালু এখনও জেলেই

১৩ ডিসেম্বর
বশেষে জামিন পেলেন লালুপ্রসাদ।
আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ, আরজেডি শীর্ষ নেতার জামিনের আর্জি মঞ্জুর করে। লালুর জামিনের শর্ত-সহ অন্য বিষয় ঠিক করার দায়িত্ব রাঁচির বিশেষ সিবিআই আদালতকেই দিয়েছে শীর্ষ আদালত। রাঁচির ওই আদালতেই পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির ‘চাইবাসা ট্রেজারি’ মামলার শুনানি হয়েছিল।
জামিন পেলেও আইনি জটিলতায় আজ জেল থেকে ছাড়া পাননি লালু। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাঁচির বিরসা জেল থেকে বের হবেন তিনি। সড়কপথে ফিরবেন পটনায়। মাঝরাস্তায় পুজো দেবেন রাজারপ্পা বা দেউরির মন্দিরে।
শীর্ষ নেতার জামিনের খবর পেয়েই উৎসবে মাতেন আরজেডি কর্মী-সমর্থকেরা। পটনায় লালু-পত্নী রাবড়ী জানিয়ে দেন, ভোটে না-লড়তে পারলেও, লোকসভা নির্বাচনে দলের প্রস্তুতি দেখতে সফর করবেন লালু।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ‘আমেজ’ ছড়ায় বিহার বিধানসভা চত্বরেও। সবাইকে ধরে ধরে মিষ্টি খাওয়াতে থাকেন ভোজপুরের আরজেডি বিধায়ক ভাই দীনেশ। ওই সময় বিধানসভায় ঢুকছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তাঁর রাস্তাও আটকান দীনেশ। মিষ্টি দিতে যান। সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে ভিতরে ঢুকে পড়েন নীতীশ।
শীর্ষ নেতাকে একঝলক দেখার আশায় আজ দুপুর থেকেই রাঁচির বিরসা মুণ্ডা জেলের সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন আরজেডি কর্মী, সমর্থকেরা। গোলাপি আবিরে ভরে যায় জেলের সামনের চত্বর। বিকেলের দিকে ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রী অন্নপূর্ণাদেবী জানিয়ে দেন, আইনি কিছু কাগজপত্র তৈরি করতে সময় লাগবে। সে কারণে, সোমবারের আগে ছাড়া পাবেন না ‘লালুজি’। লালুপ্রসাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করার কারণ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানান, একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কয়েক জন আগে জামিন পেয়েছেন। সে দিকে নজর রেখেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জামিনের বিরোধিতা করেনি সিবিআই।
লালু-সমর্থকদের উৎসব বিরসা জেলের সামনে। শুক্রবার হরদীপ সিংহের তোলা ছবি।
তার আগে, লালুর আইনজীবী রাম জেঠমলানী আদালতে বলেছিলেন, ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ৩৭ জনের জামিন মঞ্জুর করা হলেও, তাঁর মক্কেলের আবেদন বাতিল করা হয়। আগেও তিনি ১০ মাস জেলে থেকেছেন। সাজা ঘোষণার পর থেকেও দু’মাস বন্দি রয়েছেন। বিহারে লালু-জমানায় পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির ঘটনায় চাইবাসা ট্রেজারি থেকে ৩৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা লোপাট হয়েছিল। ওই মামলার শুনানির পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর লালুপ্রসাদ-সহ ৪৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তার জেরে সাংসদ পদ হারান লালু। ৩ অক্টোবর লালুকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন রাঁচির বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক। সঙ্গে জরিমানাও করা হয়। সাজা পান বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মিশ্রও। তার পর থেকে রাঁচির বিরসা জেলে বন্দি লালু।
লালুর জামিনে আরজেডি-র নেতাদের থেকেও যেন বেশি খুশি বিহারের কংগ্রেস নেতারা। শাকিল অহমেদের মতো নেতারা মনে করছেন, অবিলম্বেই এ বার লালুপ্রসাদের সঙ্গে জোট গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে কংগ্রেস।
বস্তুত, লোকসভা ভোটে বিহারে লালুপ্রসাদ ও রামবিলাস পাসোয়ানের সঙ্গে জোট গড়ার ব্যাপারে রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা অনেক দিন ধরেই সনিয়া-রাহুলের উপর চাপ দিচ্ছেন। কংগ্রেস সূত্রে খবর, রাহুল কিছুটা হলেও ঝুঁকে রয়েছেন নীতীশ কুমারের দিকেই। বিহারের কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, চার রাজ্যে বিধানসভা ভোটের বিপর্যয়ের পর রাহুলের কথাই এ বার শেষ কথা হবে না। বরং, রাজ্যস্তরের নেতাদের কথা গুরুত্ব দিতে বাধ্য হবেন রাহুল। এই পরিস্থিতিতে লালু-কংগ্রেস-পাসোয়ান জোটের ঘোষণা করা হবে বলেই আশা করছেন শাকিল অহমেদরা।
জামিনের খবর পাওয়ার পর রাবড়ী দেবীর সরকারি বাসভবনে ভিড় করেন দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। পরপর আতসবাজি ফাটতে থাকে। বিলি করা হয় লাড্ডু। রাবড়ী সাংবাদিকদের বলেন, “আদালতের উপর ভরসা ছিল। লালুপ্রসাদ জেলের বাইরে থাকলে নরেন্দ্র মোদীকে বিহারে সভা করতে দিতেন না। যে ভাবে তিনি আডবাণীকে আটকেছিলেন, সে ভাবেই আটকাতেন।”
কিন্তু, আপাতত স্বামীর পছন্দের খাবার তৈরিতেই দারুণ ব্যস্ত ‘লালু-ঘরণী’ রাবড়ী।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.