|
|
|
|
আডবাণীর রামরথ রুখে দেওয়া আমলা বিজেপিতে
স্বপন সরকার • পটনা
১৩ ডিসেম্বর |
অযোধ্যা-যাত্রার ‘রামরথ’ আটকে লালকৃষ্ণ আডবাণীকে গ্রেফতার করেছিলেন তৎকালীন লালু-সরকারের ওই শীর্ষ আমলা। অবসরের পর রাজনীতির ময়দানে নেমে আডবাণীরই ‘ছত্রচ্ছায়া’ নিলেন তিনি! একই সঙ্গে বললেন, “ওঁর মতো মানুষ তো বটেই, নেতা বা মন্ত্রীও খুব কম দেখেছি।”
দলের সভাপতি রাজনাথ সিংহের উপস্থিতিতে আজ বিজেপি-তে যোগ দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব
|
রাজকুমার সিংহ |
রাজকুমার সিংহ। সেখানে ছিলেন শাহনওয়াজ হুসেন, সুশীল মোদী, রাজীবপ্রতাপ রুডির মতো নেতারা। বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে বিহারের আরা বা সুপৌল কেন্দ্রে প্রার্থী করা হতে পারে।
সেটা ছিল ১৯৯০ সালের শেষ দিক। অয্যোধ্যায় রামমন্দিরের দাবিতে ‘রামরথ’ নিয়ে দেশ-সফরে বের হয়েছেন আডবাণী। ২৩ অক্টোবর বিহারের সমস্তিপুরে পৌঁছন তিনি। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের নির্দেশে বিজেপি-র ওই শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করেন ১৯৭৫ সালের ‘ব্যাচের’ আইএএস সিংহ। ওই ঘটনার জেরে কেন্দ্রের বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে বিজেপি।
শুধু লালুপ্রসাদ যাদব নন, নীতীশ কুমারেরও ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন রাজকুমার। কিন্তু, নীতীশের দলের যোগ দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। বিজেপি-তে যাওয়ার পর এ বার লালু, নীতীশ---দু’জনের বিরুদ্ধেই তাঁকে রাজনৈতিক জেহাদ শুরু করতে হবে। লড়তে হবে কংগ্রেসের সঙ্গেও। সিংহের বক্তব্য, ‘দুর্নীতিপরায়ণ’ কংগ্রেসকে পরাজিত করতে পারে বিজেপি-ই। সে কারণেই তিনি ওই দলে যোগ দিয়েছেন।
রাজকুমারের কথায়, “প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে কখনও আপস করিনি। কর্তব্য পালন করতেই আডবাণীজিকে গ্রেফতার করেছিলাম।” রাজনীতির ময়দানেও তো সমঝোতার প্রশ্ন থাকে? তাঁর জবাব, “ভবিষ্যতে তেমন পরিস্থিতি হলে, তখনই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।”
দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পদে যখন তিনি যোগ দেন, সেই সময় আডবাণীই ছিলেন ওই মন্ত্রকের দায়িত্বে। প্রাক্তন আইএএস বলেন, “পরিচয় করতে গিয়ে মন্ত্রীজিকে বলেছিলাম স্যার, আমিই সেই আর কে সিংহ, আপনাকে গ্রেফতার করেছিলাম। মন্ত্রীর উত্তর ছিল, আপনি আপনার কাজ করেছেন। এ নিয়ে সমস্যা হবে না।”
প্রশাসনিক মহলের একাংশ জানিয়েছেন, আমলা হিসেবে কখনও কারও সামনে মাথা নত করেননি রাজকুমার। পটনার জেলাশাসক থাকাকালীন কংগ্রেসের দু’জন মন্ত্রীকে আটক করেছিলেন। তা স্বীকার করে রাজকুমার বলেন, “জামুইয়ে আমার আত্মীয়ের বেআইনি সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করেছিলাম। দু’বার ভাবিনি।”
রাজনীতির ময়দানে নেমে কেমন লাগছে? তিনি বলেন, “কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াতেই এ পথে এগিয়েছি। আম-আদমি পার্টির এখনও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা হয়নি। সে শক্তি রয়েছে বিজেপি-র মতো জাতীয় দলেরই।”
জেডিইউ নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি বলেন, “উনি নীতীশ কুমারের অত্যন্ত পছন্দের অফিসার ছিলেন। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অবসরের পর রাজনীতিতে যোগ দিতেই পারেন। কোন দলে যাবেন, তা একান্তই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে রাজনীতিতে অনেকে এক দলেই থেকে যান না। পরিবর্তন হতেই থাকে।” |
|
|
|
|
|