|
|
|
|
মাওবাদীদের সম্পর্কে নরম বিহার, অভিযোগ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
বিহার সরকারের গাফিলতিতে রাজ্যে মাওবাদী তাণ্ডব বেড়ে চলেছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির এক যৌথ কমিটির রিপোর্টে এই অভিযোগ এনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত গত বারের তুলনায় ৪১ শতাংশ জঙ্গি কার্যকলাপ বেড়ে গিয়েছে রাজ্যে। মাওবাদীদের আক্রমণে বিভিন্ন জেলায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ২৫ জন সাধারণ মানুষ এবং বাকি ১৩ জন পুলিশ কর্মী।
যৌথ কমিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়কে পাঠানো রিপোর্টে বলেছে: মাওবাদীদের প্রতি বিহার সরকারের নমোনীয় মনোভাবের ফলেই এই ধরনের কার্যকলাপের বাড়বাড়ন্ত ঘটেছে। গোয়েন্দাদের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। যদিও এই রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছেন, “এই ধরনের কোনও রিপোর্টের ব্যাপারে আমার কাছে কোনও খবর নেই। অন্তত আমাকে এমন রিপোর্টের ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।”
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছর মাওবাদীদের হাতে নিহতের সংখ্যা ছিল ২৫। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৩৮। সেই অনুযায়ী এটা স্পষ্ট রাজ্যে এই কার্যকলাপের বৃদ্ধি ঘটেছে। এ ছাড়াও, যেখানে নিরাপত্তা কর্মীরা নিহত হচ্ছেন সেখানে এখনও পর্যন্ত কোনও মাওবাদী জঙ্গির মৃত্যু হয়নি। অথচ গত বছর এই সময়ে পাঁচ জঙ্গি পুলিশের হাতে নিহত হয়েছিলেন। এর থেকেই প্রমাণিত যে মাওবাদীদের মোকাবিলায় রাজ্য সরকার কছিন মনোভাব নিচ্ছে না। আরও একটি পরিসংখ্যান তুলে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের ১৭টি সংঘর্ষ হয়েছিল। ২০১২ সালে এমন ঘটনা ঘটেছে ১২টি। আর চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মাত্র ৬টি সংঘর্ষ হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারেও অবনতি ঘটেছে বিহার সরকারের পুলিশের ব্যর্থতায়। হিসেব তুলে ধরে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ১৭১ টি অস্ত্র উদ্ধার হয়ে থাকলেও চলতি বছরে তা কমে হয়েছে ৪৭।
পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তা বলেন, “রিপোর্টে যা বলা হয়েছে তা নিয়ে আমরা কিছু বলছি না। তবে রাজ্য পুলিশের তরফে এমন কোনও নমোনীয় মনোভাব নেওয়ার নিদর্শন অন্তত নেই। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে পুলিশের একটি অংশের মধ্যে এই নিয়ে সমস্যা থেকে যাচ্ছে। এই নিয়ে আলাদা করে বৈঠকের চিন্তা ভাবনা হচ্ছে। যেখানে অঞ্চল ধরে আলোচনা হওয়ার কথা।” পুলিশের মধ্যেই যে মাওবাদীদের প্রতি নরম মনোভাবের প্রতিফলন ঘটছে তা স্পষ্ট হয়েছে সম্প্রতি গয়ায় এক সিআরপিএফের অফিসারের গ্রেফতারের ঘটনায়। মাওবাদীদের খবর পাচার করার অভিযোগে সঞ্জয় কুমার যাদব নামে সিআরপিএফের ওই অ্যাসিস্টান্ট কম্যান্ডান্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজ্যের ৩৮টি জেলার মধ্যে ৩২টি মাওবাদী প্রভাবিত। এখন পর্যন্ত ১৬টি জেলায় মাওবাদীদের তাণ্ডবের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে ঔরঙ্গাবাদ, গয়া এবং জামুই জেলা যে বেশি মাত্রায় সংবেদনশীল তা রাজ্য পুলিশই স্বীকার করে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বক্তব্য, মাওবাদীদের পূর্র্বাঞ্চলীয় কমিটি বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর ছত্তীস্গঢ়ে তাদের জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়াচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং জোনাল কমিটিগুলির নেতৃত্বে এই কাজ চলছে। এই সব জায়গায় কাজকর্ম চালানোর জন্য আছে দুই কোম্পানি পিপল্স লিবারেশন গেরিলা। তাদের সঙ্গে আছে এই সংগঠনের গণ-সংগঠনের কর্মীরা। |
|
|
|
|
|