|
|
|
|
ব্রডগেজ নিয়ে উদ্বেগ, বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কায় শিলচর
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
ব্রডগেজের কাজ নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ‘শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি’। প্রায় এক বছর আগে থেকেই রেল জানিয়েছে, ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর থেকে উত্তর-পূর্বের পাহাড় লাইনে পরবর্তী ছ’মাসের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। রেলের পরিভাষায় বলে, সেই সময়টায় রেল ‘মেগা ব্লক’ নেবে। অর্থাৎ মিটারগেজ তুলে দিয়ে ব্রডগেজের লাইন বসানো হবে পুরো ২০১ কিলোমিটার পথে। ২০১৫ সালের এপ্রিলে ব্রডগেজের সঙ্গে যুক্ত হবে শিলচর।
আর রেলের এই ঘোষণাই সংগ্রাম কমিটিকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। তাঁদের কথায়, এমনিতেই কাজের যা গতি তাতে ২০১৪-র মধ্যে ৭ এবং ১০ নম্বর সুড়ঙ্গই নির্মাণ হবে না। ওই অবস্থাতে মেগা ব্লক শুরু হয়ে গেলে ছ’মাসের বদলে অনিশ্চিত কালের জন্য রেল পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে দক্ষিণ অসম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুর।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে সুড়ঙ্গ দু’টির নির্মাণ কাজ দেখে এসে কমিটির আহ্বায়ক অরুণাংশু ভট্টাচার্য জানান, “১০ নম্বর সুড়ঙ্গটি ৩ কিলোমিটার ২৩৫ মিটার দীর্ঘ। কাজ হয়েছে দু’দিক মিলিয়ে মোট ২ কিলোমিটারের মতো। বুমার মেশিন থাকলেও নরম মাটির জন্য যন্ত্র কাজে লাগছে না। মিথেন গ্যাসের জন্যও কাজে বিঘ্ন হচ্ছে। কর্মরত ইঞ্জিনিয়াররা তাঁদের জানিয়েছেন, “মাসে ৭০-৮০ মিটার করে কাজ এগোচ্ছে।” এই গতিতে কাজ চললে আগামী ১০-১২ মাসে তা শেষ হতে পারে না বলেই মনে করছেন অরুণাংশুবাবুরা। তাঁদের আশঙ্কা ৭ নম্বর সুড়ঙ্গ নিয়েও। অরুণাংশুবাবু হিসেব কষে দেখাচ্ছেন, ১ কিলোমিটার ৬৮৭ মিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গটিতে ১,০৬০ মিটার কাজ হয়েছে। বাকি আরও ৬২৭ মিটার। ইঞ্জিনিয়াররাই বলেছেন, এখানকার মাটি ১০ নম্বরের চেয়েও নরম। তাই এই সুড়ঙ্গে কাজ এগোচ্ছে মাসে ৩০ মিটার। ওই হিসেবে, সারা বছর একই গতিতে কাজ করা হলেও সুড়ঙ্গটি নির্মাণে অন্তত ২১ মাস সময় লাগবে।
এ ছাড়াও, বন বিভাগের ছাড়পত্র না পাওয়ায় ১২৭ নম্বর সেতুর কাজ ন’বছর ধরে আটকে রয়েছে। এ নিয়েও স্টেট বোর্ড, ন্যাশনাল বোর্ডের টালবাহানা চলছে বলে অভিযোগ সংগ্রাম কমিটির। তাঁদের দাবি, সুড়ঙ্গ-সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পরই মেগা ব্লক নেওয়া হোক। নইলে সাধারণ মানুষের হয়রানি বাড়বে।
গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার আর এল ভির্দি অবশ্য তাঁদের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ২০১৫-র মার্চের মধ্যে ব্রডগেজে যুক্ত হবে শিলচর। দ্বিতীয়ত, কাজের নিম্নমানের যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। ১৭ বছরে যে-কাজ শেষ হল না, তা কী করে ওই সময়সীমায় শেষ হবে? ভির্দি তাঁদের আশ্বস্ত করেন। এই কথায় আশার আলো দেখছেন না শিলচরের বিজেপি সাংসদ কবীন্দ্র পুরকায়স্থ। তিনিও ২৬ নভেম্বর সুড়ঙ্গ দুটির কাজ দেখে এসেছেন। তাঁর অভিমত, “সাত নম্বর সুড়ঙ্গে যে জটিল পরিস্থিতিতে কাজ হচ্ছে, আমার ভয় এটির জন্য পুরো প্রকল্পই না মুখ থুবড়ে পড়ে!”
|
|
|
|
|
|