|
|
|
|
ইস্তাহারে আপ-এর পথে রাহুল
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১৩ ডিসেম্বর |
বন্ধ দরজার আড়ালে নয়। আম আদমির পার্টি তথা আপ-এর পথ ধরে এ বার জনতার জন্য ইস্তাহার তৈরি করতে চান রাহুল গাঁধী। শুধু ভাবনা নয়, সেই অনুযায়ী দলিত, আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ থেকে আলোচনাও শুরু করে দিল কংগ্রেস। কার্যত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েই এই প্রথম, রাজ্য স্তরের বিভিন্ন সমস্যা মেটানোর কথাও লোকসভা ভোটের ইস্তাহারে রাখতে চান কংগ্রেস সহসভাপতি।
ইস্তাহার নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে বিজেপি-কেও। পয়লা ধাপেই পরস্পরকে টেক্কা দিতে কংগ্রসে-বিজেপি উভয় দলই ইস্তাহার তৈরির সময় বাজেট-সুলভ গোপনীয়তা রাখার চেষ্টা করে বরাবর। এ বার কিন্তু লোকসভা ভোটের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই আম আদমির সঙ্গে খোলামোলা মত বিনিময় করতে চাইছে। শুধু কংগ্রেস নয়, ‘ওপেন ম্যানিফেস্টো’-র কথা বলছে বিজেপি-ও। এবং জনতার মত চাইতে পাল্লা দিয়ে ওয়েবসাইটও খুলে ফেলেছে দু’পক্ষ। সন্দেহ নেই, আম আদমি পার্টির কাছে মোক্ষম ধাক্কা খেয়েই এ ভাবে আম আদমির কাছে আসার চেষ্টায় নেমেছে দু’দল।
দিল্লিতে বিপর্যয়ের ছবিটা স্পষ্ট হতেই রাহুল জানিয়েছিলেন, আম আদমি পার্টির থেকে শিক্ষা নেবেন তিনি। আপ যে ভাবে জনতার সঙ্গে যোগস্থাপন করতে সফল হয়েছে, সেই পথে হাঁটবে কংগ্রেসও। সেই অনুযায়ীই লোকসভার ভোটের ইস্তাহার রচনার আগে অনগ্রসর শ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ দিন দীর্ঘ বৈঠক করেন কংগ্রেস সহসভাপতি, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির মতো মন্ত্রিসভার হেভিওয়েট সদস্যরা।
পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ জানান, বৈঠকে ছিলেন ১৩৫টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। দিল্লিতে এ ভাবেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে ইস্তাহার রচনা করেছিল আপ।
এ ব্যাপারে জয়রামের বক্তব্য, “আম আদমি পার্টির ভালটা নিতে অসুবিধা কোথায়? লজ্জাই বা কোথায়?” রাজনীতিকদের অনেকেই মনে করেন, ভোটের ইস্তাহার মানুষ পড়েও দেখেন না। এ দিনের বৈঠকে রাহুল বলেন, “এ বার আর তা হবে না। ইস্তাহার প্রকাশ করে দল তা নিয়ে সারা দেশে বিতর্ক চালাবে।”
দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, লোকসভা নির্বাচন হলেও ইস্তাহারে গুরুত্ব পাবে বিভিন্ন রাজ্যের সমস্যাও। এটাও অরবিন্দের কাছ থেকেই শেখা বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। দিল্লির জন্য সামগ্রিক ইস্তাহার তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য আলাদা ইস্তাহার প্রকাশ করেছিলেন তিনি। রাহুলের মতে, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্য স্তরের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষাগুলিও কেন্দ্রের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের যুক্তি হল, নীতীশ কুমারদের মতো অনেক আঞ্চলিক নেতাই রাজ্যের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের বা সে জাতীয় দাবি তোলেন। কেন্দ্র তা মঞ্জুর করলে রাজ্য স্তরে কংগ্রেসও যাতে তার কৃতিত্ব দাবি করতে পারে সে জন্যই এই কৌশল। দলের আর এক শীর্ষ নেতার কথায়, এক সময় রাজ্য স্তরে কংগ্রেসের বেশ কিছু মজবুত নেতা ছিলেন। কামরাজ থেকে বিধান রায়ের মতো নেতারা রাজ্যের দাবি দাওয়া কেন্দ্রের কাছে তুলে ধরতেন। কিন্তু রাজ্যের বিষয় নিয়ে কংগ্রেসের আন্দোলনের দুর্বলতাই আঞ্চলিক শক্তির উত্থানের পথ প্রশস্ত করেছে। দীর্ঘমেয়াদি হলেও রাজ্য স্তরে কংগ্রেসকে ফের শক্তিশালী করার জন্যই এই পদক্ষেপ করতে চলেছেন রাহুল। তা ছাড়া এতে লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য স্তরে কংগ্রেসের প্রচারেও সুবিধা হবে বলে মনে করছেন তিনি।
চার রাজ্যে বিপর্যয়ের পর থেকেই কংগ্রেস নেতারা বলছেন, লোকসভা ভোটের আগে দলে একটা ঝাঁকুনি প্রয়োজন। কংগ্রেস সূত্রে খবর, সেই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে জানুয়ারি মাসে দলের অধিবেশন ডাকতে পারেন সনিয়া গাঁধী। যে অধিবেশনে দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নামও ঘোষণা করা হতে পারে।
|
নিঃশর্ত সমর্থনের চিঠি কংগ্রেসের
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি |
দিল্লিতে তারা সরকার গড়বে কি না, সে ব্যাপারে আজ, শনিবার লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে চূড়ান্ত মত জানানোর কথা আম আদমি পার্টির। তার ২৪ ঘণ্টা আগে কৌশলে অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের চাপে ফেলে দিতে চাইলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সরকার গঠনের জন্য আপ-কে নিঃশর্ত সমর্থন জানানোর কথা আগেভাগেই লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, দিল্লিতে সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তার অর্থ ফের ভোট। কিন্তু কংগ্রেস দিল্লিবাসীর ওপর সেই বোঝা চাপিয়ে দিতে চায় না। তাই আপ-কে নিঃশর্তে সমর্থন। সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, আপ এই প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখতে পারে। দলের তরফে অরবিন্দরা তেমন কোনও ইঙ্গিত এখনও দেননি।
|
পুরনো খবর: যুব মন জয়ই লক্ষ্য, কটাক্ষ বিরোধীদের |
|
|
|
|
|