এক লাইনে মুখোমুখি দুই ট্রেন, এড়াল দুর্ঘটনা
শেষ মুহূর্তে দু’টি ট্রেনের চালকই ব্রেক কষেছিলেন। তাই এক লাইনে মুখোমুখি হয়েও বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেল আপ লালগোলা প্যাসেঞ্জার আর ডাউন বনগাঁ লোকাল। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ স্টেশনে। ওই ঘটনার জেরে শিয়ালদহ ডিভিশনে এক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।
রেল-কর্তৃপক্ষ জানান, ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ স্টেশনের রুট রিলে ইন্টারলকিং (আরআরআই) কেবিনের কাছেই। কী ভাবে এটা হল, তা খতিয়ে দেখছেন ‘কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি’। তবে তার আগেই প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে লালগোলা প্যাসেঞ্জারের চালক ও সহকারী চালককে সাসপেন্ড করেছেন রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের কর্তারা।
ঠিক কী ঘটেছিল?
শিয়ালদহ মেন ও বনগাঁ শাখায় দু’টি আপ ও ডাউন লাইন রয়েছে। প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা ১৩। ফলে প্ল্যাটফর্মে ঢোকা ও বেরোনোর সময় প্রতিটি ট্রেনকে একাধিক লাইন পেরোতে হয়। রেল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৮টা ১০ মিনিটে সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জারের ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই ট্রেন ছাড়তে ১৩ মিনিট দেরি হয়ে যায়। ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে কিছুটা এগোতেই চালক দেখেন, ডাউন বনগাঁ লোকাল একাধিক লাইন পেরিয়ে একেবারে তাঁর সামনে চলে এসেছে। রেলকর্তারা জানান, বনগাঁ লোকাল আট নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকছিল। তার আগে লাইন পরিবর্তনের সময় সাত নম্বরে লালাগোলা প্যাসেঞ্জারের মুখোমুখি পড়ে যায় সে। একটি ট্রেন স্টেশনে ঢুকছিল এবং অন্যটি সবে ছাড়ছিল বলে দু’টিরই গতিবেগ ছিল কম। সামান্য ব্যবধানে দুই চালক ব্রেক কষে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেন। ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে কিছুটা এগিয়েই সজোরে ব্রেক কষে থেমে যাওয়ায় লালগোলা প্যাসেঞ্জারের যাত্রীরা ভয় পেয়ে যান। একই অবস্থা হয় বনগাঁ লোকালের যাত্রীদের। আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন অনেকে। দু’টি ট্রেনেরই বহু যাত্রী লাফ দিয়ে নেমে পড়েন। রেললাইন ধরে হেঁটে অনেকে শিয়ালদহ স্টেশনে ফিরে যান বলে জানায় রেল পুলিশ। শুধু একটি ট্রেনের দুই কর্মীকে সাসপেন্ড করা হল কেন?
প্রাথমিক তদন্তে রেলকর্তাদের অনুমান, লালগোলা প্যাসেঞ্জারের চালক সিগন্যাল না-মানায় এই বিপত্তি ঘটেছে। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের কাছেই একটি করে ‘স্টার্টার সিগন্যাল’ থাকে। স্টার্টার সিগন্যাল সবুজ হওয়ার অর্থ, সংশ্লিষ্ট লাইনটি খালি আছে। সেই সিগন্যাল সবুজ হলে তবেই ওই প্ল্যাটফর্ম থেকে চালক ট্রেন বার করেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে রেলকর্তাদের ধারণা, স্টার্টার সিগন্যাল সবুজ না-থাকা সত্ত্বেও লালগোলা প্যাসেঞ্জারের চালক ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় বিপত্তি ঘটেছে। তাই ওই ট্রেনের চালক ও সহকারী চালককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ঘটনার পরে ট্রেনটিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মে। ওই ট্রেনের দুই চালক, সহকারী চালক ও গার্ড বদল করা হয়। তার প্রায় এক ঘণ্টা পরে, সাড়ে ৯টা নাগাদ ট্রেনটি ছেড়ে যায়। রেল-কর্তৃপক্ষ লালগোলা প্যাসেঞ্জারের চালককে প্রাথমিক ভাবে অভিযুক্ত করলেও ট্রেনচালকেরা তাঁর খুব একটা দোষ দেখছেন না। ট্রেনচালকদের একাংশের অভিযোগ, ইদানীং শিয়ালদহ ডিভিশনে ট্রেন বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় ‘কলিং অন সিগন্যাল’ দিয়েই ট্রেন চালানো হচ্ছে। ওই সিগন্যাল থাকে স্টার্টার সিগন্যালের তলায়। তার সাহায্যে ট্রেনের ‘শান্টিং’ বা এগোনো-পিছোনোর কাজ চলে। রেলের অফিসারেরা জানান, কোনও ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকলে তাকে কারশেডে পাঠানোর সময়েও ওই সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়। রেলকর্তারা এ দিনের ঘটনায় ট্রেনচালকদের অভিযোগ মানতে চাননি। তবে লালগোলা প্যাসেঞ্জারের চালক ‘কলিং অন সিগন্যাল’ পেয়েই ট্রেন ছেড়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার জন্য প্রয়োজনে কেবিনের দায়িত্বে থাকা রেলকর্মীদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.