প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের দ্বারস্থ হয়ে সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত দাবি করল সিপিএম। আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বাধীন বাম সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দল। পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কারবার খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান ওই সাংসদরা।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের সুপারিশ বা আদালতের নির্দেশ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে না। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও সুপারিশ করেনি। আদালতেরও কোনও নির্দেশ নেই। ইয়েচুরি তখন পাল্টা যুক্তি দেন, ত্রিপুরা, ওড়িশা ও অসম সরকার ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্ত চেয়েছে। ওই রাজ্যগুলিতেও সারদা গোষ্ঠী সক্রিয় ছিল। সেখানে সিবিআই তদন্ত হলে পশ্চিমবঙ্গের বিষয়টিও তদন্তের আওতায় চলে আসবে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি এই দাবি খতিয়ে দেখবেন।
মনমোহনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইয়েচুরি জানান, কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রকের বিশেষ জালিয়াতি তদন্ত সংস্থা ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের সারদা-কাণ্ড নিয়ে তদন্ত করছে। এই মাসের শেষেই সেই তদন্ত রিপোর্ট চলে আসবে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া যেতে
পারে। বস্তুত এবারের সংসদীয় অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই এ নিয়ে তৃণমূলের উপর চাপ তৈরি করতে চাইছে সিপিএম। সারদা কাণ্ডে সিপিএমের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের দাবি করে পাল্টা চাপ দিতে চাইছে তৃণমূলও। এই বিষয়ে সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর বক্তব্য, “বামেরা গোটা বিষয়টারই নিরপেক্ষ তদন্ত চাইছেন। সেখানে সিপিএমের কেউ জড়িত থাকলে তদন্তে তা-ও নিশ্চিত ভাবেই উঠে আসবে।”
আজ আলিমুদ্দিনে সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম দেব রাজ্যে ও রাজ্যের বাইরে বিভিন্ন স্থানে সারদার সম্পত্তির হদিশ দিয়ে বলেন, “অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে এই সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। তারপরে আইনি পদ্ধতিতে বিক্রি করে লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে।” এই দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলনে নামছে সিপিএম।
কেন এ ভাবে সারদার সম্পত্তি বিক্রির দাবি করে লগ্নিকারীদের টাকা ফেরতের কথা বলছে সিপিএম? গৌতমবাবুর ব্যাখ্যা, “সরকার এ কাজ করছে না। অহেতুক সময় নষ্ট করছে। অন্য দিকে সরকারি টাকা লগ্নিকারীদের ফেরত দিচ্ছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁর প্রশ্ন, “সারদার যেখানে কোটি কোটি টাকা সম্পত্তি রয়েছে, সেখানে কেন লগ্নিকারীদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে সরকারি টাকা দেওয়া হচ্ছে?”
সারদার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার এই আন্দোলনে কংগ্রেস বা অন্য দলের নেতা-কর্মীরাও যোগ দিতে পারেন, তা জানিয়ে এ দিন গৌতমবাবু বলেন, “তবে পার্টি এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবে।”
|
