ওয়াকায় শুক্রবার প্রথম বল পড়ার বহু আগেই পারথ টেস্টের একটা জোড়া সেঞ্চুরি নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে! বলা হচ্ছে, টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির নজির ভূরিভূরি। কিন্তু এমন কাণ্ড নাকি আগে কখনও দেখা যায়নি যে, একই সঙ্গে নিজেদের শততম টেস্টে পা রাখছেন যুযধান দু’পক্ষের দুই অধিনায়ক!
পারথে সেই বিরল নজিরটাই গড়তে চলেছেন মাইকেল ক্লার্ক এবং অ্যালিস্টার কুক।
শুধু নিজেদের একশো নম্বর টেস্টটা একসঙ্গে খেলাতেই নয়, দুই ক্যাপ্টেনের টেস্ট অভিষেকেও অদ্ভুত মিল। দু’জনেই শুরুটা করেছিলেন ভারতের বিরুদ্ধে ভারতের মাটিতে। ক্লার্ক ২০০৪-এর অক্টোবরে বেঙ্গালুরুতে আর কুক ২০০৬-এর মার্চে নাগপুরে। টেস্টে দু’জনের রানও প্রায় সমান সমান। ক্লার্কের এ পর্যন্ত সংগ্রহ ৭৯৪০ রান (গড় ৫২.৫৮), কুকের ৭৮৮৩ (গড় ৪৭.২০)।
তবে ওই পর্যন্তই। চলতি অ্যাসেজের রণভূমিতে বাদবাকি সবটাই অমিল।
শুক্রবারের ওয়াকায় তৃতীয় টেস্ট এবং সিরিজ পকেটে পুরে অ্যাসেজ আধার ফেরত আনার লক্ষ্যে ক্লার্ক যখন সদল ফুটছেন, তখন প্রবলতম চাপের মুখে ক্যাপ্টেন এবং ব্যাটসম্যান কুক।
|
পারথে ১২ টেস্ট খেলে ইংল্যান্ড জিতেছে মাত্র এক বার, ১৯৭৮-এ। সেই মাঠে সিরিজে টিকে থাকার ম্যাচে নামার আগে ইংল্যান্ড অধিনায়ককে এক দিকে মিচেল জনসন-জুজুর বিরুদ্ধে ভরসা জোগাতে হচ্ছে নিজের দলকে। অন্য দিকে, সেই জনসনের বলেই বিশ্রী আউট হওয়ার জন্য তাঁকে তুলোধনা করে ছেড়েছেন প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জিওফ্রে বয়কট। তা-ও আবার অস্ট্রেলিয়ার কাগজে। চাঁচাছোলা আক্রমণে বয়কট বলেছেন, “কুকের মাথার ঘিলু সব ছানা কেটে গিয়েছে। না হলে যে ক্যাপ্টেনের গোটা দলকে লড়াইয়ের রাস্তাটা দেখানোর কথা, সে কি না দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ও রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন হুক মেরে ফাইন লেগে ক্যাচ দেয়! অস্ট্রেলিয়া ওর ব্যাটিংয়ের সব জারিজুরি ধরে ফেলেছে। কুককে ওরা লেগ সাইডে বা কোমরের উচ্চতায় কোনও বল খেলতে না দিয়ে বেঁধে রাখছে আর লড়াইটা জিতে যাচ্ছে।”
পরপর দুই টেস্ট বিশ্রী হেরে খাদের কিনারে দাঁড়ানো দলের লজ্জা আরও বাড়াতে বাধ্য বয়কটের এই সমালোচনা। সঙ্গে দুঃস্বপ্ন দেখাচ্ছেন জনসন। প্রথম দুই টেস্টে ইংল্যান্ড ব্যাটিংকে ক্ষতবিক্ষত করে ১৭ উইকেট নিয়ে কুকদের দুর্দশার প্রধান কারণ হয়ে ওঠা বত্রিশ বছরের পেসার ওয়াকায় নিজের ঘরের মাঠে আরও ভয়ঙ্কর মূর্তি ধারণ করবেনএমনটাই ফলাও করে প্রচার করছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম। ইংল্যান্ড কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার মুখে যতই বলুন, “পারথের ইতিহাস বা জনসনের পেস কোনওটাই আমরা ভয় পাচ্ছি না,” সঙ্গে কিন্তু ঢোক গিলে মানতে বাধ্য হচ্ছেন, ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ফের ব্যর্থ হলে মুখরক্ষা কঠিন। ফ্লাওয়ার বলেছেন, “পেস বোলিং খেলার ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাটসম্যানদের দক্ষতার পাশাপাশি প্রত্যয়ও দেখাতে হবে। লম্বা সময় ক্রিজে টিকে থাকতে হবে। কারণ এমন দুরন্ত গতি লোয়ার অর্ডার ব্যাসম্যানরা সামলে দেবে, এটা আশা করাই ভুল। তাই দায়িত্বটা গোড়ার ব্যাটসম্যানদেরই নিতে হবে।”
জনসন আবার বলেছেন, “আমি ১৫৫-১৬০ কিলোমিটার গতি তোলা নিয়ে ভাবছি না। যদি ছন্দ পেয়ে যাই, বাকিটা আপনিই হবে।”
কুক-বাহিনীকে এই মন্তব্য স্বস্তি না দেওয়ারই কথা। |