মোহালির ছেলে গুরপ্রীত সিংহ সাঁধুর হাত বাঁচিয়ে দিল আর্মান্দো কোলাসোকে। ইস্টবেঙ্গলকেও।
ছয় ফুট সাড়ে পাঁচ ইঞ্চির কিপার ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আসাধারণ দক্ষতায় পেনাল্টি না বাঁচালে নতুন জার্সিতে গোয়ার মাঠের অভিষেক ম্যাচে মাথা নিচু করেই ফিরতে হত আর্মান্দো কোলাসোকে। মুখ কালো করে বাড়ি যেতে হত লাল-হলুদ কোচের গ্রাম আগাসাইন থেকে বাস ভাড়া করে আসা সমর্থকদেরও।
আর্মান্দোর জামানায় চিডি-মোগাদের গ্রাফ ওঠানামা করছে। ধারাবাহিকতাও নেই। হার, ড্র—সবই হচ্ছে। নিয়ম করে। বুধবারের হারা ম্যাচ ড্র করার পর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন? ম্যাচের পর ফোনে প্রশ্ন শুনে আর্মান্দো বললেন, “কেন? মোগার গোলটা তো গোল ছিল? কেন ওটা বাতিল করা হল বুঝতে পারলাম না। আর গুরপ্রীত নিজের কাজটা ভালভাবে করেছে। পেনাল্টি তো পার্ট অব দ্য গেম। কিপারের গোল বাঁচানোটাও তো খেলারই অঙ্গ।” গতবারের কলকাতার কলঙ্কিত ডার্বি ম্যাচের রেফারি গুজরাতের বিষ্ণু চৌহান ছিলেন বাঁশি মুখে। মোগা গোল করার আগেই পতাকা তুলেছিলেন সহকারী রেফারি। প্রথমে মনে হয়েছিল অফসাইড। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে হাত দিয়ে উড়ে আসা বল নামিয়েছেন মোগা। |
মোগার গোল বাতিল নিয়ে পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী কোচ ক্ষুব্ধ হলেও, ম্যাচে কিন্তু প্রাধান্য সামান্য বেশি ছিল ডেরেক পেরিরার সালগাওকরেরই। লাল-হলুদের স্টপার গুরবিন্দার নিজেদের বক্সে ফেলে দিয়েছিলেন সালগাওকরের অলিভিয়েরাকে। গোয়ার ক্লাবের ফসচিনি পেনাল্টি মারেন ইস্টবেঙ্গল কিপারের ডানদিকে। শুধু পেনাল্টি কিক বাঁচানোই নয়, এর পরও অন্তত দুটি নিশ্চিত গোল বাঁচান জাতীয় দলে খেলা গুরপ্রীত।
আর্মান্দো এবং ডেরেক দু’জনেই ক্লাব ফুটবলের অন্যতম সফল কোচ। গোয়ার মাঠ এবং পরিবেশ দু’জনেরই নখদর্পণে। ফলে দু’জনেই দল নামিয়েছিলেন অঙ্ক করে। সালগাওকরের স্টপার চিকাওয়ালির সঙ্গে জেমস মোগার লড়াই ছিল তারই ফসল। দু’জনই দু’জনকে কর্নারের সময় তাড়া করেছেন বক্স টু বক্স। এরকম অসংখ্য স্ট্র্যাটেজির লড়াই চলছিল মাপুসার দুলের স্টেডিয়ামে। মাঝমাঠ দখলের লড়াইতে দু’পক্ষই এত মনোযোগী ছিল যে, প্রথম কর্নার হয় খেলার ছত্রিশ মিনিটে। ডিকা বনাম ক্লিফটন, সুয়েকা বনাম রোকাস ল্যামারা নেমেছিলেন একে অন্যকে অকেজো করতে।
মোগা-চিডিকে ইস্টবেঙ্গল কোচ নামিয়েছিলেন শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলতে। দু’টো একটা সুযোগ ওরা পেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু গোল হয়নি। তেমন সুবিধা করতে পারেননি সালগাওকরের অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকার ডারেল ডাফিও। আর্মান্দো কিন্তু বললেন, “টিমের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। টিম আসতে আসতে ফিজিক্যালি ফিট হচ্ছে। ধারাবাহিক হতে একটু সময় তো লাগবেই।”
ইস্টবেঙ্গলের ভারত ভ্রমণের পরের ম্যাচ বেঙ্গালুরুতে। তারপর আবার ফিরতে হবে গোয়ায়, সুভাষ ভৌমিকের চার্চিল ব্রাদার্সের সঙ্গে খেলতে। দুটি ম্যাচেই উগা ওপারাকে পাচ্ছেন না কোলাসো। চোটের জন্য নাইজিরিয়ান স্টপারকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে কলকাতায়। মেহতাব হোসেনের মতোই। আর্মান্দো বললেন, “খেলাতেই যদি না পারি এখানে রেখে লাভ কী। উগাকে কলকাতায় পাঠিয়ে দিচ্ছি সুস্থ হতে।” পরের ম্যাচে লিগ শীর্ষে থাকা সুনীল ছেত্রীদের বিরুদ্ধে লাল-হলুদ রক্ষণে তাই কোনও বিদেশি থাকবেন না। এ দিন অবশ্য গুরবিন্দার-রাজুরা খারাপ খেলেননি।
|
ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, নওবা, গুরবিন্দার, রাজু, সৌমিক, ডিকা, সুয়োকা, খাবরা, তুলুঙ্গা (লেন), চিডি, মোগা। |