পাঁচ দিনেই বাগান ফিরল পুরনো ফর্মে

মুম্বই এফসি-১ (রফি)
মোহনবাগান-১ (সাবিথ)
কাশ থেকে ফের মাটিতে। ক্রিস্টোফারের সাফল্যের গ্রাফ পড়তে লাগল মাত্র ১২০ ঘণ্টা!
পাঁচ দিন আগেই চিজোবা ক্রিস্টোফারকে নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল মোহনবাগান জনতা। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে কল্যাণীতে তিনিই শুনে ফেললেন, “ক্রিস্টোফার গোল চাই। নইলে বাগানে জায়গা নাই।”
তিন বছর আগের এক সতেরোই জানুয়ারিতে বেলেঘাটায় জীবনে প্রথম খেপ খেলতে গিয়ে পনেরোশো টাকা পেয়েছিলেন ক্রিস্টোফার। সেই রাতেই ফোন করে তেরোশো টাকা উড়িয়ে তার পর সপ্তাহ চালাতে বিপাকে পড়েছিলেন তিনি। তাঁর সেই প্রথম উপার্জন রাতারাতি ফুরোনোর ঢঙেই বাগানে অভিষেক ম্যাচেই কি যাবতীয় উদ্যম খরচ করে ফেলেছেন? ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে মুম্বই এফসি কোচ খালিদ জামিলও মুখ ফসকে বলেই বসলেন, “আরে ওকে তো দেখাই গেল না!”
এ দিন ক্রিস্টোফার-ওডাফার যুগলবন্দি দেখতেই সবুজ-মেরুন সমর্থকরা মাঠ ভরিয়েছিলেন। বদলে দু’দলের দুই মালয়ালি স্ট্রাইকারের দর্শনীয় গোল দেখেই বাড়ি ফিরতে হল তাঁদের। আর ওডাফা-ক্রিস্টোফার-কাতসুমি-ইয়াকুবুর মতো তারকারা? তাঁরা আবার যখন-তখন আছাড় খেয়ে গ্যালারিতে হাস্যরস জুগিয়ে গেলেন।
কেন? বাগান কোচ মুম্বইকরদের পেড়ে ফেলতে এ দিন নতুন কৌশল নিয়েছিলেন। দিনের শেষে সেই অস্ত্রই ফিরে এল ব্যুমেরাং হয়ে। বড় চেহারার আমিরি, আনোয়ার, হাতিফিদের গতিতে পেড়ে ফেলতে মাঠে ‘সামান্য’ জল দিতে বলেছিলেন মোহনবাগান কোচ। উদ্দেশ্য, বল যাতে দ্রুত ছোটে। কিন্তু করিমের অভিযোগ, “মাঠ কর্তৃপক্ষ জল বেশি দিয়ে ফেলেছেন। ওঁদের পাইপে ছিদ্র ছিল।” যা আবার মানতে নারাজ কল্যাণী পুরসভার চেয়ারম্যান নীলিমেশ রায়চৌধুরী এবং স্টেডিয়ামের ভারপ্রাপ্ত মাধব দত্ত। তাঁদের মন্তব্য, “পাইপে কোনও ছিদ্র নেই। ব্যর্থতা আড়াল করতে মোহনবাগান কোচ অজুহাত খাড়া করছেন। জল দেওয়ার দরকারই ছিল না।”

ভেজা মাঠে আছাড় ক্রিস্টোফারের।
কার নির্দেশে মাঠে প্রয়োজনের বেশি জল পড়ল তা খুঁজতে শেষমেশ গোয়েন্দা ‘ব্যোমকেশ’ ডাক পেতে পারেন। তবে ম্যাচ কমিশনার এস সুরেশের রিপোর্টে এই ‘অবাক জল কাণ্ড’-এর রিপোর্ট থাকছে বলে খবর। এঁটেল মাটির মাঠে অতিরিক্ত জল এ দিন ঘাসের তলায় এমন কাদা তৈরি করল, তাতেই বারবার পিছলে পড়ছিলেন ফুটবলাররা। খেলা শেষে মাথা নাড়তে নাড়তে ইয়াকুবুও বলে গেলেন, “ওরা মাঠে জল ঢেলে যে ফাঁদ বানিয়েছিল, তাতে নিজেরাই আটকা পড়ে গেল।” পিছল মাঠ নিয়ে অসন্তোষ গোপন করলেন না বাগান ফুটবলাররাও। ওডাফা থেকে গোলদাতা সাবিথসবাই বলছেন, “এত জল কেউ মাঠে ঢালে! ওখানেই যে তাল কেটে গেল। ‘নন-কিকিং ফুট’ ঠিক জায়গায় থাকছিলই না।” প্রশ্ন তা হলে ‘লং স্টাড’-এর বুট ব্যবহার করতে কোচরা কি নির্দেশ দেননি?
৪-৪-২ ছকে নেমে করিমের প্ল্যান ছিল গতিতে মাত করা। যার পাল্টা মাঝমাঠে ওডাফাদের আটকাতে ৩-৫-২ ছকই বেছেছিলেন মুম্বই কোচ খালিদ। প্রদীপ, হাতিফি, ক্লাইম্যাক্সদের কাজে লাগিয়েছিলেন বাগানের যাবতীয় আক্রমণ ঘেঁটে দিতে। ম্যাচেও তাই হল। শুরুতেই পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে অবশ্য ইচেদের রক্ষণ সংগঠনের দুর্বলতাই দায়ী। নিকোলাসের কর্নারের সময় ইয়াকুবুর ‘ডামি রান’ কিংশুকরা বুঝতে পারেননি। সেই সুযোগেই আনোয়ারের হেড। যা নামিয়ে দুরন্ত সাইড ভলিতে রফির গোল।

হতাশ ওডাফা।
বাগানের গোল শোধ করতে লাগল পাক্কা সত্তর মিনিট। ডেনসনের থ্রু ধরে মুম্বই কিপার নীধিনলালকে টপকে সাবিথের চমৎকার প্লেসিং হার বাঁচিয়ে এক পয়েন্ট এনে দেয় বাগানকে। অন্তিম মুহূর্তে হেডে গোল করতে পারলে বাড়ি ফেরত ওডাফাকে হয়তো ফের ‘ফিরে যাও’ ধ্বনি শুনে বাসে উঠতে হত না।
সবুজ-মেরুন কোচ এ দিন যদিও বললেন, “হতাশ নই। ফেড কাপের সময় এই দলটাই কিন্তু দাঁড়িয়ে যাবে।”
কিন্তু তিনিও যে এ দিন দু’টো ভুল করলেন।
সাবিথকে নামিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে যখন ৪-৩-৩ ছকে গেলেন তখন এই সচল মালয়ালিকে কেন দুই স্ট্রাইকারের মাঝে একটু নীচ থেকে অপারেট করালেন না?
১-১ চলছে এই অবস্থায় মুম্বই রক্ষণে আক্রমণের ঝড় যখন আছড়ে ফেলতে হবে, তখন মণীশকে তুলে আইবরকে নামানোর অঙ্কটাও পরিষ্কার নয়।
শনিবার ডেম্পোর বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে এই অঙ্কগুলোর উত্তর বদলানো তাই জরুরি।

মোহনবাগান:
সন্দীপ, প্রীতম, কিংশুক, ইচে, সৌভিক, রাম (সাবিথ), ডেনসন, কাতসুমি, মণীশ (আইবর), ওডাফা, ক্রিস্টোফার।

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.