সপ্তাহ দু’য়েক আগেই ব্রিটিশ ডাইভার টম ডালের ইউটিউবে স্বীকারোক্তি নিয়ে বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল। লন্ডন অলিম্পিকে ব্রোঞ্জজয়ী খোলাখুলি বলেছিলেন তাঁর সঙ্গে এক পুরুষের সম্পর্কের কথা। ডালের ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনা যেমন হয়েছে তেমনই অনেকেই তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন সত্যিটা স্বীকার করার ‘সাহস’ দেখানোর জন্য। তবে ব্রিটিশ তরুণ অ্যাথলিটের ঘটনার পরই সমকামী সম্পর্ককে সমর্থন নিয়ে একটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যে বিতর্কের আগুনে নতুন করে ঘি ঢাললেন মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। যিনি নিজেও ঘোষিত সমকামী।
কিংবদন্তি টেনিস প্লেয়ার আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থা, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে সমকামী অ্যাথলিটদের সমর্থনে আরও বেশি করে এগিয়ে আসার কথা বলেন। “স্পষ্ট করে বলতে গেলে আইওসি-র উচিত অ্যাথলিটদের পাশে দাঁড়ানো। আর সে কাজটা শুধু এক-আধটা দেশের মধ্যে আটকে রাখলে হবে না, নানা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।” সমকামীদের ঘিরে যে ভাবে হিংসা বা বৈষম্য ছড়িয়ে পড়ছে, তারও প্রতিবাদ জানান মার্টিনা। বলেন, “এ ব্যাপারে অনেকেই মুখ খুলছে না। কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। ওই দেশে সমকামিতার শাস্তি কারাবাস।”
|
রাষ্ট্রপুঞ্জের এক অনুষ্ঠানে। ছবি: এপি। |
এ ব্যাপারে অনেকেই মুখ খুলছে না। কাতারের কথাই ধরা যাক।
যেখানে ২০২২ বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। ওই দেশে সমকামিতার শাস্তি কারাবাস...
যে কোনও কারণেই হোক না কেন সমকামীদের সব ক্ষেত্রেই অবহেলা করা হয়। —মার্টিনা |
|
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিনই সমকামিতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। যেখানে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সমকামিতা শাস্তিযোগ্য। আইন ভাঙলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে। এই আইন একমাত্র বদলাতে পারে সংসদ। বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রেই যখন সমকামীদের বিয়ে পর্যন্ত বৈধ বলে মেনে নেওয়া হচ্ছে, তখন এই রায়ে অবাক অনেকেই।
নাভ্রাতিলোভার পাশে দাঁড়িয়েছেন এনবিএ তারকা জেসন কলিন্সও। রাশিয়ার সোচি-তে আসন্ন শীতকালীন অলিম্পিকে সংগঠকরা যে ভাবে সমকামীদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন, তার অনেকে সমালোচনা করেছেন। কলিন্স অবশ্য বলেন, “এতে সমকামীদের সমস্যার কোনও সমাধান হবে না। একবার গেমস শেষ হয়ে গেলে ওরা আবার আগের জায়গায় ফিরে যাবে। ওদের অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না। তাই বলছি এ সব ঠিক হচ্ছে না। মানুষকে ভয় না পেয়ে খোলাখুলি ভাবে বাঁচার সুযোগ দেওয়া উচিত। প্রকাশ্যে একজনের হাত ধরলে তাকে জেলে যেতে হবে, এই ভয়টা থাকা উচিত নয়।”
অনেক দেশেই সমকামীদের যে ভাবে অত্যাচারিত হতে হচ্ছে, তারও সমালোচনা করেন মার্টিনা। বলেন, “যে কোনও কারণেই হোক না কেন সমকামীদের অবহেলা করা হয়।” |