শপথের দিনই উন্নয়নের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হল হাওড়ায়।
নতুন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে পাশে নিয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেন, উন্নয়নের কাজকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পর্যায়ে ভাগ করে শুরু হবে ‘ক্লিন হাওড়া, গ্রিন হাওড়া’ গড়ার কাজ। তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে হাওড়ার নতুন মেয়রও বলেন, “৩৪ বছর বাম শাসনে হাওড়ার শরীরের নানা জায়গায় পচন ধরেছে। তা সারানোই হবে আমার প্রথম কাজ।”
বুধবার ছিল হাওড়া পুরসভার সপ্তম বোর্ডের নব নির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহণ। সঙ্গে ছিল মেয়র ও চেয়ারম্যান নির্বাচন ও তাঁদের শপথ গ্রহণ। এ জন্য দিন কয়েক আগে থেকেই ভোল বদলায় হাওড়ার শরৎ সদন। হলের লাল কার্পেট বদলে পাতা হয় সবুজ কার্পেট। পুরসভায় মেয়রের ঘরের সামনের মেঝের কার্পেটও পাল্টানো হয়। পুরসভার প্রধান ফটকের রঙ বদলে করা হয় নীল-সাদা। এমনকী, পুরসভার সামনে বঙ্কিম সেতুর রঙও রাতারাতি পাল্টে করা হয় নীল-সাদা। |
সকাল থেকেই পুরসভা, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। যে রাস্তা দিয়ে নতুন কাউন্সিলরেরা যাবেন সেই মহাত্মা গাঁধী রোডের দু’পাশে বাঁশের ব্যারিকেড ছিল। এ দিনের অনুষ্ঠান ঘিরে শরৎ সদন হয়ে ওঠে কার্যত চাঁদের হাট। পুরমন্ত্রী ছাড়াও হাওড়া থেকে নির্বাচিত রাজ্যের তিন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, অরূপ রায় ও হায়দার আজিজ সফি ছিলেন। ছিলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, লেখক শংকর, ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারী-সহ বহু বিশিষ্ট জন।
শপথ গ্রহণের প্রথম পর্যায়ে নতুন কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পড়ান জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস। প্রত্যাশিত ভাবেই সিপিএম কাউন্সিলরেরা আসেননি। কংগ্রেসের ৪ জন, বিজেপির ২ জন বিজয়ী প্রার্থী শপথ নেন। পরে একে একে শপথ নেন তৃণমূলের ৪২ জন কাউন্সিলর। দ্বিতীয় পর্যায়ে শপথ নেন মেয়র ও চেয়ারম্যান। হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন অরবিন্দ গুহ।
শপথ গ্রহণের পরেই সাংবাদিকদের পুরমন্ত্রী জানান, হাওড়ার উন্নয়নের জন্য স্বল্পমেয়াদী পর্যায়ে প্রথমেই গুরুত্ব দেওয়া হবে রাস্তাঘাট সারানোয়। মধ্যমেয়াদী পর্যায়ে জোর দেওয়া হবে পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহে। এ জন্য কয়েকটি পাম্পিং স্টেশন তৈরি ও বুস্টিং স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানোর ভাবনা আছে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নিকাশির উন্নতির উপরে। এ জন্য ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশন চালুর কথা ভাবা হচ্ছে। নতুন মেয়র বলেন, “এত দিন ন্যূনতম পরিষেবাও পাইনি। তাই প্রথম থেকেই রাস্তা, পানীয় ও নিকাশির উন্নতিতে জোর দিচ্ছি।’’ মেয়র জানান, খুব শীঘ্রই মেয়র পারিষদদের নাম ঘোষণা হবে। অনুষ্ঠান শেষে দলের সব কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে হেঁটে পুরসভায় নিজের ঘরে যান মেয়র। সেখানে তাঁকে ফুল-মালা দিয়ে অভ্যর্থনা জানান তৃণমূল কর্মচারী সংগঠনের নেতৃত্ব ও অন্যান্যরা।
|