কলকাতার তৃণমূল মেয়র শপথ নিয়েছিলেন ধুতি-পাঞ্জাবী পরে। তৃণমূলের মন্ত্রীরাও তা-ই করেছিলেন। হাওড়ার প্রথম তৃণমূল মেয়র কিন্তু শপথ নেবেন তাঁর অভ্যস্ত প্যান্ট-শার্টে। তবে তার রং হবে নেত্রীর পছন্দের নীল-সাদা। সাদা জামা, নীল প্যান্ট।
হাওড়া পুরসভার মেয়র হিসেবে শপথগ্রহণের দিন তিনি কী পরে অনুষ্ঠানে যাবেন, তা আগাম জানিয়ে দিলেও হাওড়ার পুর-বোর্ডে চেয়ারম্যান বা মেয়র পারিষদ কাদের করা হচ্ছে সে ব্যাপারে একটি কথাও বলতে নারাজ রথীন চক্রবর্তী, হাওড়া পুরসভার ঘোষিত মেয়র। মঙ্গলবার পুর-বোর্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “পুর-বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ পদ কে কে পাচ্ছেন, তা আমি জানি না। শুধু এইটুকু জানি কাল আমি সাদা-নীল জামা-প্যান্ট পরে শপথ নিতে যাব। কারণ ওই দু’টি রং দিদির পছন্দের। জামার উপর থাকবে একটা জহর কোট।” |
রথীনবাবু কিছু বলতে চাননি। তবে দিনভর তৃণমূলের বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে জানা গিয়েছে, মেয়র পরিষদের আয়তন এ বার কিছুটা বাড়তেও পারে। এতদিন মেয়র, ডেপুটি মেয়র এবং পাঁচ জন মেয়র পারিষদ নিয়ে হাওড়ার মেয়র পরিষদ ছিল সাত জনের। এ বার তা বাড়িয়ে দশ করার চিন্তাভাবনা চলছে। এ জন্য প্রয়োজনে প্রথমে অর্ডিন্যান্স করে পরে বিধানসভায় বিল আনা হতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। মেয়র পারিষদেরা কে কী দায়িত্ব পাবেন, তা অবশ্য এখনও ঠিক হয়নি। তবে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুর-বোর্ডে মহিলা, সংখ্যালঘু, ক্রীড়াবিদ, আইনজ্ঞ সব ক্ষেত্রের প্রতিনিধিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
কে কে থাকবেন ওই বোর্ডে?
এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের বিভিন্ন সূত্র থেকে যা জানা গিয়েছে, তাতে ঠিক হয়েছে কলকাতা পুরসভার মতো ডেপুটি মেয়র করা হচ্ছে এক জন মহিলাকে। যিনি রাজ্য রাজনীতিতে দলের দীর্ঘদিনের লড়াকু নেত্রী। এ ছাড়া, চেয়ারম্যান হিসেবে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে অভিজ্ঞ এক বর্ষীয়ান ব্যক্তির কথা ভেবে রেখেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যিনি এক সময়ে কংগ্রেসের হয়ে রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে দলের রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদেও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন।
মেয়র পরিষদে যাঁদের নাম সম্ভাব্য তালিকায় রাখা হয়েছে, তাঁদের মধ্যেও রয়েছেন দু’জন মহিলা এক জন মধ্য হাওড়ার একটি ওয়ার্ডের গত তিন বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। এ বারও তিনি ভাল ব্যবধানে নিকটবর্তী বামফ্রন্ট প্রার্থীকে হারিয়েছেন। অন্য যে মহিলাকে মেয়র পারিষদের গুরুত্বপূর্ণ দফতর দেওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে, তিনি এ বারের পুর-নির্বাচনে ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে সব থেকে বেশি ভোটে দক্ষিণ হাওড়ার একটি ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছেন। সব থেকে বড় কথা, দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে তাঁর নাম সব শেষে ঘোষণা করা হয়েছিল।
এ ছাড়া, মেয়র পরিষদে আরও যে কয়েক জন ব্যক্তিকে নেওয়ার কথা বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে, তাঁদের মধ্যে কেউ দীর্ঘদিন পুরসভা ও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অভিজ্ঞ ব্যক্তি। কেউ বা খেলার মাঠ, সাংস্কৃতিক জগৎ ও যুব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। মেয়র পারিষদে গুরুত্বপূর্ণ দফতর দেওয়ার কথা হচ্ছে পুরসভায় বিরোধী দলনেতার ভূমিকায় থাকা বর্ষীয়ান এক কাউন্সিলরকে। এ ছাড়া, পুর-পরিষেবার উন্নতির জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী দলের সঙ্গে লড়াই করা, খেলার মাঠ ও সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গে যুক্ত তুলনায় কম বয়সী এক কাউন্সিলরকেও মেয়র পরিষদে নেওয়ার কথা হচ্ছে। একই সঙ্গে ভাবা হচ্ছে আইন সংক্রান্ত বিষয়ে অভিজ্ঞ এক জন কাউন্সিলরকে নেওয়ার কথাও।
|