পাঁচ আসনে দিল্লি অধরা, ঘুরে দাঁড়াতে পাঁচ কৌশল মোদীর
দিল্লি ফস্কে গিয়েছে মাত্রই ৫টি আসনের গেরোয়। চিন্তায় ফেলেছে আম আদমি পার্টির আকস্মিক উত্থান। লোকসভা ভোটেও যাতে ঠোঁট আর কাপের মধ্যে এমন ফাঁক না থেকে যায় তার জন্য এখন থেকেই রণকৌশল তৈরিতে নেমে পড়েছেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। কাল রাতে দিল্লিতে রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। সঙ্ঘ ও বিজেপি-র মধ্যে যোগসূত্র রেখে চলেন রামলাল। তিনিও উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে। রাজনাথের বাড়িতে আজও ফের এক দফা আলোচনা করেন দলের শীর্ষ নেতারা। দিল্লির পরিস্থিতি সবিস্তার বিশ্লেষণের পরে স্থির হয়েছে, এখন জোড়াতালির সরকার গড়ার কোনও চেষ্টাই করবে না বিজেপি। বরং ভবিষ্যতের পথ সুগম করতে অস্ত্র করা হবে এখনকার এই অস্বস্তিকেই।
পরিস্থিতির মোড় কী ভাবে ঘোরাতে চায় বিজেপি? দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, আপাতত পাঁচমুখী কৌশল নিয়ে এগোতে চাইছেন মোদী।
এক, দিল্লির পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে বিজেপি এখন মানুষকে বোঝাবে, রায় ত্রিশঙ্কু হলে কেমন সমস্যা তৈরি হয়। বলা হবে, আম আদমি পার্টি হুজুগে ভোট পেয়েছে। আঞ্চলিক দলগুলিকে ভোট দিলে তারা কেন্দ্রে সরকার গড়তে পারবে না। স্থায়ী সরকার চাইলে ভোট দিতে হবে জাতীয় স্তরের দলকেই। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের একমাত্র বিকল্প বিজেপি-ই। এর আগে মায়াবতী, মুলায়ম সিংহ, লালুপ্রসাদ বা অন্যান্য আঞ্চলিক দলের মোকাবিলায় এই যুক্তিকেই সামনে রেখেছে বিজেপি। এ বার দুশমন হয়ে ওঠা বন্ধু নীতীশ কুমার বা সদ্য পথের কাঁটা হয়ে ওঠা অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের সামলাতে সেই অস্ত্রই ব্যবহার করবে তারা।
দুই, দিল্লিতে কোনও দলই সরকার না গড়লে লোকসভার সঙ্গেই ফের বিধানসভার ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সন্দেহ নেই অরবিন্দরা তখন নিজেদের আরও সংগঠিত করে বিধানসভায় গরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য পূর্ণ শক্তিতে ঝাঁপাবেন। তাই এখন থেকেই অরবিন্দদের কোণঠাসা করার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। অরবিন্দ মানুষের আশা জাগিয়ে এখন সরকারের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না এটাই প্রচারে আনছে বিজেপি ও রামদেবের মতো ব্যক্তিরা। এ দিন দিল্লিতে রামদেব বলেন, “প্রতিশ্রুতি পূরণের দায়িত্ব নিতে ভয় পাচ্ছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাই সরকার গড়তে এগোচ্ছেন না।”
তিন, বস্তিবাসী, গরিবগুর্বো থেকে মধ্যবিত্ত, এমনকী উচ্চ-মধ্যবিত্তদেরও বিপুল সমর্থন পেয়েছে আম আদমি। এই ভোটারদের আস্থা ফেরাতে সুশাসন ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে মোদীকে আরও জোরদার ভাবে তুলে ধরবে বিজেপি। দিল্লির নেতাদের সেই অনুয়ায়ী প্রচারে ঝাঁপাতে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে দল।
চার, বছরখানেক ধরে জমি তৈরি করে তবে দিল্লিতে সাফল্য পেয়েছেন কেজরিওয়াল। এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লড়াইয়ের কথা বলছেন তাঁরা। কিন্তু দিল্লিতে ফের ভোট হলে সাফল্য ধরে রাখা বা তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিকেই বেশি নজর দিতে হবে। দেশের অন্য রাজ্যে অতটা শক্তি ব্যয় করার সুযোগ তাঁরা পাবেন না। বরং লোকসভা ভোটের সময় দেশ জুড়ে যে মোদী-হাওয়া তোলা হবে, তার ঝড়ে কেজরিওয়ালের ধার অনেকটাই কমে যাবে বলে বিশ্বাস বিজেপি নেতাদের। দল এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করবে।
পাঁচ, বিজেপি আবারও অণ্ণা হজারেকে পাশে রেখেই চলবে। অণ্ণা পইপই করে কেজরিওয়ালকে রাজনীতির ময়দানে যেতে মানা করেছিলেন। দিল্লিতে ৭০টি আসনের মধ্যে ২৮টিতে জিতে আসার পরেও তাঁকে কটাক্ষই করেছেন অণ্ণা। তাঁর বক্তব্য, শুধু দিল্লিতে জিতলে আর যা-ই হোক জনলোকপাল বিল পাশ হবে না। লোকপালের পক্ষে সওয়াল করে অণ্ণা ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে অনশনে বসেছেন। কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে অণ্ণাকে সুর চড়াতে দেখে বিজেপি-ও তাঁর সঙ্গে ফের সখ্য বজায় রাখার চেষ্টায় নেমেছে। অরুণ জেটলি আজ অণ্ণাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, লোকপাল নিয়ে তাঁর অবস্থানের সঙ্গেই আছে বিজেপি। দু’দিন আগেও যে কিরণ বেদী বিজেপি ও আম আদমি পার্টি মিলে সরকার বানানোর প্রস্তাব দিচ্ছিলেন, আজ তিনি পৌঁছে গিয়েছেন অণ্ণার মঞ্চে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.