তাঁর বাগ্মিতা প্রতি বারের মতোই গত কালও মুগ্ধ করে দিয়েছে অসংখ্য শ্রোতাকে। কিন্তু শান্তির নোবেলজয়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্থান-কাল-পাত্র ভুলে গিয়ে এমন একটা ‘কাণ্ড’ ঘটিয়েছেন মঙ্গলবারই, ধুন্ধুমার পড়ে গিয়েছে ইন্টারনেট দুনিয়ায়।
গত কাল জোহানেসবার্গে নেলসন ম্যান্ডেলার স্মরণসভায় বারাক ওবামার বক্তৃতা মন দিয়ে শুনেছে গোটা দুনিয়া। কিন্তু ওই স্টেডিয়ামে ওবামা কি শুধু বক্তৃতা দিতেই ব্যস্ত ছিলেন? একেবারেই না। শোকের আবহেও যে চটুল মুহূর্ত খুঁজে বার করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তার ছবি ধরা পড়েছে এক চিত্র সাংবাদিকের লেন্সে। আর সেই ছবি নিয়েই শুরু হয়েছে সমালোচনা বিতর্ক। তবে ওবামা একা নন, সঙ্গে ছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও। আর দুই শাসকের মধ্যমণি হয়ে বসে ছিলেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী হেলে থর্নিং-শ্মিট। |
ম্যান্ডেলার স্মরণসভায় ওই তিন জনে বসে নিজেদের ছবি তোলার চেষ্টা করছিলেন স্মার্টফোনে। সেই ছবিটাই ধরা পড়েছে সাংবাদিকের ক্যামেরায়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, স্মার্টফোন রয়েছে হেলের হাতে। ‘সেলফি’ (সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার জন্য নিজের ছবি বা সেল্ফ পোর্ট্রেটকে সংক্ষেপে এখন বলা হয় সেলফি) তুলতে গিয়ে হেলের ডান পাশে বসা ডেভিড ক্যামেরন ঝুঁকে পড়েছেন তাঁর দিকেই। বাঁ দিকে বসা ওবামাও তাই। তিনি আবার নিজের বাঁ হাত বাড়িয়ে স্মার্টফোন ধরতে সাহায্য করছেন হেলকে। তিন জনের মুখেই চওড়া হাসি। সেই রঙিন মুহূর্তে শুধু এক জনের অভিব্যক্তিই খুব বেমানান! ফ্রেমে ধরা পড়েছেন তিনিও। ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাঁ পাশে সামান্য দূরত্ব বজায় রেখে বসে রয়েছেন তিনি। তবে আশপাশের হইহল্লায় নয়, তাঁর স্থির চোখ স্মরণসভার মঞ্চে কে কী বলছেন, তার দিকেই।
এই ছবি ঘিরে সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে হইচই হলেও, ডাউনিং স্ট্রিট বা হোয়াইট হাউস-এর মুখে কিন্তু কুলুপ। তবে ম্যান্ডেলার স্মরণসভায় বিশ্বের সব প্রান্তের তাবড় নেতা আমন্ত্রিত। সেই রকম একটি মঞ্চে ওবামা, হেলে বা ক্যামেরনের মতো রাষ্ট্রনেতাদের
এই আচরণ কি মেনে নেওয়া যায়? মার্কিন বা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম তোলপাড় সেই প্রশ্নেই।
আর যে চিত্রসাংবাদিক তিন রাষ্ট্রনেতাকে ক্যামেরাবন্দি করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন, কী বলছেন তিনি? তাঁর বক্তব্য, “ওঁরাও আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ। ওঁদের অন্য রকম মুহূর্তগুলো চট করে ধরা পড়ে না। যদি সংবাদমাধ্যম এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মানুষের জীবনের এমন নানা মুহূর্ত আকছার প্রকাশ করত, তা হলে হয়তো বিষয়টা নিয়ে এত মাতামাতি হত না।”
|