ওয়ান ডে সিরিজ তো হেরেই গিয়েছি। আর সেঞ্চুরিয়নে শেষ ম্যাচের দিকে তাকিয়ে লাভ কী? এমনটা যাঁরা ভাবছেন, তাঁদের ভাবনাটা কিন্তু ঠিক নয়। সিরিজ হেরে গেলেও আমাদের দলটা যে এ ভাবে হারার মতো দল নয়, সেঞ্চুরিয়নে না হয় এটাই প্রমাণ করার তাগিদ থাকুক। তা ছাড়া টেস্ট সিরিজও তো রয়েছে সামনে।
কতগুলো ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করে নেওয়া দরকার।
এক, প্রথম দশ ওভারে উইকেট খোয়াব না।
দুই, পুরো পঞ্চাশ ওভার ব্যাট করে যাব।
তিন, প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের অন্তত একজনকে বড় রান করে জ্বলে উঠতে হবে এবং
চার, শেষ দশ ওভারে হাতে কিছু উইকেট থাকতে হবে। ভারতের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই মানসিক ভাবে বেশ শক্তিশালী এবং দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকেও ওদের লড়াইয়ে ফেরার দৃষ্টান্ত অতীতে রয়েছে। ২০১১-য় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেক সিরিজে আসল শিখর ধবনকে প্রায় খুঁজেই পাওয়া যায়নি। বেশ কয়েকটা হতাশাজনক বছর কাটাতে হয়েছে রোহিত শর্মাকে। ২০১২-য় পারথে লাইফলাইন পাওয়ার আগে বিরাট কোহলি মেলবোর্ন ও সিডনিতে প্রায় হারিয়েই যেতে বসেছিল। ওরা জানে, ব্যর্থতা কী আর তার সঙ্গে লড়াই করে কী ভাবে ফিরে আসতে হয়।
সত্যি বলতে, আমার মনে হয়, ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা যদি একা ডেল স্টেইনকে বাগে আনতে পারে, তা হলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তিন ওভার অন্তর একটা করে উইকেট পাচ্ছে স্টেইন। মারাত্মক আগ্রাসন। এই আগ্রাসনটাই ওর উল্টো দিকের বোলারকে উইকেট পাইয়ে দিচ্ছে।
ভারতের বোলিংও কিন্তু বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে। গতি ও লেংথের অভাব আলাদা কথা। কিন্তু কেউ যদি লাইনটা ঠিকঠাক বজায় রাখতে না পারে, তা হলে তো তা ক্ষমার অযোগ্য। উইকেটের কোনও এক দিকে বল করা শিখতে হবে ভারতীয়দের। মহম্মদ শামি ছাড়া আর কেউ ডেথ ওভারে ইয়র্কার দিতে পারছে না। এটা দুশ্চিন্তার বিষয় বই কী। এর পাশাপাশি মিডল অর্ডার নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা প্রকাশ করেছে ধোনি। একেবারেই ঠিক কথা। আসলে অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মিডল অর্ডারকে সে ভাবে পরীক্ষার সামনে দাঁড়াতেই হয়নি।
সেঞ্চুরিয়নে এই ভুলগুলোই মেরামত করতে হবে ভারতকে। নিজেদের প্রমাণ করার শেষ সুযোগ ভারতের ওয়ান ডে টিমের সামনে। টস জিতে অবশ্যই ব্যাট করুক ভারত। তাতে বিশাল টার্গেটের বোঝা মাথায় নিয়েও ব্যাট করতে হবে না। সেঞ্চুরিয়নে ম্যাচটা জিতলে টেস্ট সিরিজের জন্য ভারত বেশ কিছুটা অক্সিজেন পেয়ে যাবে। |
ভারতের জন্য
পাঁচ দাওয়াই |
• প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে সময় নিয়ে সেট হতে হবে। তারপরে স্ট্রোক নেওয়া।
এখন পর্যন্ত ধবন ১৫ বল, কোহলি ৪০ বল এবং রোহিত ৬৯ বল খেলেছেন।
গড় ধবন ৬, কোহলি ১৫.৫০, রোহিত ১৮.৫০। |
• ধোনিকে ব্যাটিং অর্ডারে চারে উঠে আসতে হবে। দলের সর্বোচ্চ স্কোরার এখন ভারত অধিনায়কই
(৮৪ রান, গড় ৪২)। ভঙ্গুর মিডল অর্ডারকে নেতৃত্ব দেওয়ার সেরা লোক ধোনিই। |
• ডেল স্টেইনকে সামলানো। প্রথম স্পেলে স্টেইনকে উইকেট দেওয়া চলবে না। দু’ ম্যাচে
১৫ ওভারে
স্টেইন দিয়েছেন ৪২ রান। সাত রান পিছু এক উইকেট। সুনীল গাওস্করও
বলছেন, “স্টেইনের পাঁচ ওভার দেখে খেলে বাকিদের বিরুদ্ধে রান করো।” |
• টস জিতলে এ বার সাহস করে ব্যাটিং নিতে হবে। দুটো ম্যাচেই বড় রান তাড়া করতে গিয়ে
চাপে পড়ে
গিয়েছে ভারতীয় ব্যাটিং। প্রথমে ব্যাট করলে সময় নিয়ে ইনিংস গড়া যাবে। |
• শুরুতে উইকেট তুলতে হবে ভারতীয় পেসারদের। যখনই দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনিং জুটি
সফল হয়েছে,
স্কোরবোর্ডে বড় রান উঠেছে। দু’ম্যাচে আমলা-ডি’কক জুটি তুলেছে ১৫২ এবং ১৯৪ রান। |
|