সিরিজের শেষ ওয়ান ডে বুধবার। ভারত সিরিজটা হেরে গেলেও অনেক কিছুর জন্য খেলা বাকি আছে ওদের। ৩-০ আর ২-১-এর মধ্যে প্রচুর তফাত আছে। সেঞ্চুরিয়নে নিজেদের সব কিছু দিয়ে খেলতে হবে ভারতকে। ডারবান ম্যাচের ব্যাটিং নিয়ে ধোনিরা নিশ্চয়ই খুব হতাশ। ঘাস ছেঁটে ফেলা হয়েছিল বলে কিংসমিডের উইকেটে বরাবরের মতো অত গতি ছিল না। ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপকে নিজেদের বেশ খুঁটিয়ে দেখতে হবে।
ওদের মানতে হবে যে সিমিং উইকেটে প্রস্তুতি ছাড়াই ম্যাচে নেমে পড়া কঠিন। এ রকম পরিবেশে ইনিংস গড়ার কাজটা ভারত যে ভাবে করছে, সেটা ঠিক নয়। আত্মবিশ্বাসী হয়ে ম্যাচে নামা খুব ভাল। কিন্তু মাঝে মধ্যে রক্ষণশীলতাও জরুরি। বিশেষ করে ইনিংসের শুরুর দিকে, যাতে পরে বড় শট খেলার ভিতটা তৈরি করে রাখা যায়। ভারতের ব্যাটিংয়ে যথেষ্ট গভীরতা আছে ঠিকই। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই যদি দশ নম্বর ওভার থেকে ধোনিকে ব্যাট করতে হয়, তা হলে টিম ইন্ডিয়ার পক্ষে বড় স্কোর করা খুব কঠিন।
শিখর ধবন, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি— এরা সবাই স্ট্রোক প্লেয়ার। আর এদের সবাইকেই টপ অর্ডারে ব্যাট করার গেমপ্ল্যানটা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বসতে হবে। ভারত আর ইংল্যান্ডে গত ছ’মাস ওরা অসাধারণ সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে পরিস্থিতির জটিলতা বুঝে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটাও সাফল্যের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই তরুণ ব্যাটসম্যানরা কঠিন পিচে ভাল বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে ফ্রন্টফুটে প্রচুর শট খেলেছে, যেটা ওদের পতনের কারণ। উইকেট বাঁচিয়ে রাখতে গেলে ওদের আরও রক্ষণাত্মক ভাবে খেলতে হবে। না হলে পরের দিকে আক্রমণ করা যাবে না। ওদের বুঝতে হবে, এক বার সেট হয়ে গেলে লম্বা সময় ধরে বিপক্ষকে ধ্বংস করা যাবে। ম্যাচের উপর প্রভাব ফেলা যাবে।
স্পিনারদের সৌজন্যে ডারবানে ভারতীয় বোলিং অনেক উন্নত দেখাল। ওই ম্যাচে পরিবেশকে ওরা অনেক ভাল ভাবে ব্যবহার করতে পেরেছিল। যেটা আরও এক বার প্রমাণ করে দিল যে, বল টার্ন করতে শুরু করলে ভারত খুব শক্তিশালী। তবে এ বার কিন্তু উমেশ যাদব আর ইশান্ত শর্মাকে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। আমার মনে হয় ভুবনেশ্বর কুমারের জায়গায় ইশান্তকে নিয়ে ধোনি ভুল করেছিল। লম্বা সময় ধরে ধারাবাহিক ভাবে ভাল বল করছে ভুবনেশ্বর। আশা করছি সেঞ্চুরিয়নে ও টিমে ফিরবে।
তিনটে ম্যাচের মধ্যে সেঞ্চুরিয়ন পিচই সবচেয়ে ভাল হবে। উইকেটে প্রচুর বাউন্স থাকবে। পিচে ঘাস না থাকলে বেশ অবাকই হব, কারণ মনে হয় না দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের পেস অ্যাটাকের তেজ কমাতে চাইবে। ভারত বা উপমহাদেশের বাকি টিমের বিরুদ্ধে এটা ভাল স্ট্র্যাটেজি, বিপক্ষ ব্যাটিংয়ের উপর যেটা টানা চাপ দিয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রত্যেক বার আগে ব্যাট করতে পাঠিয়ে বড় স্কোর করতে দেওয়া নিয়ে কিন্তু ভারতকেও ভাবতে হবে। এই স্কোরগুলো ধোনির ব্যাটসম্যানদের কাজ বেশ কঠিন করে দিচ্ছে। সেঞ্চুরিয়নেও কিন্তু বরাবর বড় রান ওঠে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সিরিজটা দুর্দান্ত যাচ্ছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওরা যে ‘ওয়েক-আপ কল’-টা পেল, তাতে বেশ কাজ দিয়েছে। অন্য দিকে, ভারতকে এই ম্যাচটা জিততেই হবে। যাতে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে ওরা মানসিক ভাবে একটা ভাল জায়গায় থাকতে পারে। |