নরেন নিয়ে বাম ক্ষোভ ঘোরালো পার্থের কটাক্ষে
প্রাক্তন মন্ত্রী নরেন দে-র উপরে হামলার ঘটনাকে ঘিরে তিক্ততা বাড়ল শাসক ও বিরোধী বামেদের মধ্যে। নরেনবাবু এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন বিধায়ক অজিত পাত্রকে আক্রমণের ঘটনায় রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী বা তিনি বিধানসভায় উপস্থিত না-থাকলে পরিষদীয় মন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে মঙ্গলবারও হইচই বাধিয়েছেন বাম বিধায়কেরা। সরকার পক্ষ বিবৃতির দাবি মানেনি। তবে সভার বাইরে বামেদের কটাক্ষ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবু। বামেরা তার পাল্টা দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে।
বিধানসভার উল্লেখ-পর্বে এ দিন ফ ব বিধায়ক তাজমুল হোসেন নরেনবাবুর উপরে আক্রমণের বিষয়টি তোলা মাত্রই ডেপুটি স্পিকার সোনালী গুহ তাঁকে বলেন, সোমবারই এ নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব ছিল। ফের একই বিষয়ে কথা বলা যাবে না। উত্তেজিত বাম বিধায়কেরা আলোচনার দাবিতে শোরগোল তুলতেই সভায় আসেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র তাঁর কাছে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলতে দেওয়ার দাবি জানান। কিন্তু দাবি মানা হয়নি। উপরন্তু যে বিধায়কই নরেনবাবুর বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়েছেন, তাঁদেরই মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্পিকার বলেন, “চলতি অধিবেশনে তাজমুল হোসেনকে অন্তত তিন বার দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব আনার অনমুতি দেওয়া হয়েছে। বাকিদেরও তো সুযোগ দিতে হবে!”
বাম বিধায়কেরা হাসপাতালে নরেনবাবুকে দেখে এসে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে চান, এই মর্মে আর্জি জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেই আর্জিও খারিজ হয়। এক সময়ে স্পিকার জানিয়ে দেন, সরকারকে বিবৃতি দিতে তিনি বাধ্য করতে পারেন না। পরে বিধানসভা চত্বরেই সূর্যবাবুর ক্ষোভ, “রাজ্যের এক বর্ষীয়ান প্রাক্তন মন্ত্রী এবং প্রাক্তন বিধায়কের উপরে এমন নৃশংস হামলার ব্যাপারে সরকার পক্ষ কোনও বিবৃতি দেবে না, এটা ভাবা যায় না! স্পিকার বাধ্য করতে না পারলেও সরকার পক্ষকে বিবৃতি দেওয়ার জন্য কিছু বলতে পারতেন।” সহকারী বিরোধী দলনেতা সুভাষ নস্কর জানিয়ে দিয়েছেন, অধিবেশন যত দিন চলবে, তত দিনই বিধানসভায় বামেরা বিষয়টি তুলবে। সুভাষবাবুর বক্তব্য, “৮০ বছর বয়সের এক জন মানুষ মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরেও লাথি, ঘুঁষি মারা হয়েছে। এর পরেও কোনও দুঃখপ্রকাশ করা হল না। উল্টে ধনেখালির বিধায়ক বিবৃতি দিলেন, বাজারের আলু-পটলওয়ালারা এসে নরেনবাবুকে মেরেছে!”
বিধানসভায় এত হইচইয়ের পরে মন্ত্রী পার্থবাবু বাইরে বলেন, “এর পিছনে কারা রয়েছে, তা খুঁজে বার করতে প্রশাসনিক তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা এ তদন্তে হস্তক্ষেপ করব না।” এখনও কেউ গ্রেফতার হল না কেন? পার্থবাবুর জবাব, “অভিযোগকারী তো কারও নাম বলতে পারছেন না! কাকে গ্রেফতার করবে পুলিশ! তবে হামলাকারী যে-ই হোক, ছাড় পাবে না।” একই সঙ্গে পার্থবাবুর কটাক্ষ, ৮ তারিখে ঘটনা ঘটল। আর অঞ্জন সিংহ রায় নামে এক জন ৯ তারিখে টিপসই দিয়ে ডায়েরি করলেন। অভিযোগকারী আবার এ দিন লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, যাদের নামে তিনি অভিযোগ করেছেন, কাউকে নাকি চেনেন না! পার্থবাবুর মন্তব্য, “নরেনবাবুকে বলব, কারা আপনাকে পার্টি অফিসে ডেকে নিয়ে গেল, খুঁজে বার করুন! এর সঙ্গে তৃণমূলকে দয়া করে জড়াবেন না!” নরেনবাবুকে ‘শারীরিক না রাজনৈতিক কোনও কারণ’ কেন চুঁচুড়া থেকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে আনা হল, তা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন পার্থবাবু।
ফ ব-র যুব লিগের রাজ্য সম্পাদক অনির্বাণ চৌধুরী জানিয়েছেন, নরেনবাবুর উপরে হামলা, সারদা-কাণ্ড ধামাচাপা এবং মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৩টে থেকে সর্বত্র পথ অবরোধ হবে। আর পার্থবাবুর কটাক্ষের জবাবে ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়ন্ত রায় বলেছেন, দলের ধনেখালির নেতা অঞ্জনবাবুর দু’টি হাতই ভেঙেছে হামলায়। তাই টিপসই দিয়েই অভিযোগ করতে হয়েছিল। তার পরেও তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে সাক্ষ্য দিতে বারণ করা হয়েছে। তদন্তের নামে প্রহসন হচ্ছে!

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.