একতলায় ‘পে অ্যান্ড ইউজ’ শৌচালয়, দোতলায় রেস্তোরাঁ। বছরখানেক আগে দক্ষিণ কলকাতার প্রিয়া সিনেমার কাছে তৈরি হয়েছিল এই নতুন ধরনের শৌচালয়। শহরের সৌর্ন্দযায়ন ও জায়গার সদ্ব্যবহারের কথা ভেবে এই ধরনের শৌচালয় এ বার শহরের অন্যত্র ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, হাজরা পার্কে এই ধরনের ‘পে অ্যান্ড ইউজ’ শৌচালয় তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া, শহরের আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমন শৌচালয় তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে শুধু কলকাতাই নয়, কলকাতার পাশেই গড়ে ওঠা উপনগরী নিউ টাউনেও এই ধরনের শৌচালয় তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে হিডকো। হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন জানিয়েছেন, নিউ টাউন বাসস্ট্যান্ডের কাছে খুব শীঘ্রই এমন অভিনব শৌচালয় চালু হতে চলেছে। |
দোতলায় রেস্তোরাঁ, নীচে শৌচালয়। কাজ চলছে নিউ টাউনে। ছবি: শৌভিক দে। |
কলকাতা শহরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বেশ কয়েকটি ‘পে অ্যান্ড ইউজ’ শৌচালয়ের অবস্থা হতশ্রী। অভিযোগ, উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই পুরসভা পরিচালিত এই ধরনের শৌচালয়গুলির দৈন্যদশা। হতশ্রী শৌচালয়গুলির হাল ফেরাতে এবং জায়গার সদ্ব্যবহার করতে শৌচালয়ের দোতলায় রেস্তোরাঁ তৈরির পরিকল্পনা করে কলকাতা পুরসভা। প্রিয়া সিনেমার কাছে এই ধরনের প্রথম শৌচালয় তৈরি হয়। দেবাশিসবাবু বলেন, “প্রথমে এই ধরনের শৌচালয় তৈরি করতে গিয়ে অনেক বিতর্ক উঠেছিল। নীচে শৌচালয় থাকলে দোতলায় রেস্তোরাঁ চলবে না বলে অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন। সেই আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। হাজরা পার্কের কাছে এই ধরনের দ্বিতীয় শৌচালয় তৈরির কাজ চলছে।”
দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, হাজরা পার্কে যেখানে ওই ‘পে অ্যান্ড ইউজ’ শৌচালয় তৈরি হচ্ছে, সেখানে দোতলায় থাকছে রেস্তোরাঁ। এ ছাড়া, হাজরা রোডের ধারে ফুটপাথে যে সব টাইপিস্ট কাজ করেন, শৌচালয়ের পাশে আলাদা একটি ঘরে থাকবে তাঁদের বসা ও কাজের ব্যবস্থা। দেবাশিবাবু বলেন, “ঘিঞ্জি জায়গা বা বাজারের পাশে নয়, একটু ফাঁকা জায়গায় যেখানে রেস্তোরাঁ চলতে পারে তেমন জায়গাতেই এমন শৌচালয় তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। রেস্তোরাঁর ভাড়া থেকে পুরো শৌচালয়ের রক্ষণাবেক্ষণের খরচও উঠে আসবে। শৌচালয়ের সৌর্ন্দযায়নও করা যাবে।”
নিউ টাউন বাসস্ট্যান্ডের কাছে যে ‘পে অ্যান্ড ইউজ’ শৌচালয়টি তৈরি হচ্ছে, তার দোতলায় রেস্তোরাঁয় বসে উপভোগ করা যাবে নিউ টাউনের সৌন্দর্য। হিডকো সূত্রে খবর, যামিনী রায়ের ছবি দিয়ে সাজানো হচ্ছে গোটা শৌচালয়টি। শৌচালয়ে ঢোকার রাস্তা ও রেস্তোরাঁয় ঢোকার রাস্তা আলাদা। শৌচালয়ের পাশে থাকবে ফুলের বাগান। দেবাশিস সেন বলেন, “শহরকে সুন্দর করতে এই ধরনের আরও তিনটি শৌচালয় আমরা তৈরি করছি। সেই সঙ্গে একটি শৌচালয়কে অভিনব ভাবে ব্যবহারও করা যাচ্ছে। নিউ টাউন থানার কাছেও এমন একটি শৌচালয় তৈরি হচ্ছে। নিউ টাউন ‘গ্রিন করিডর’। সে কারণে শৌচালয়ের দেওয়ালে আমরা বিজ্ঞাপন লাগাতে পারব না। তাই এই অভিনব উপায়ে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
হিডকো সূত্রে জানা গিয়েছে, শৌচাগার তৈরির কাজ প্রায় শেষ। রেস্তোরাঁ কে ভাড়া নেবে, সেই ব্যাপারে দরপত্র ডাকা হয়েছে। |