নদিয়ায় পানের চাষ দেখে উৎসাহিত হয়েছিলেন খয়রাশোলের মুক্তিনগরের এক চাষি। ফিরে এসে বিপ্লব সূত্রধর নামে ওই চাষি নিজের ৬ কাঠা জমিতে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে পানের বরজ করেছিলেন। সময়টা ২০১০। এক বছরের মধ্যেই পান বিক্রি করে নিয়মিত আয় করতে শুরু করেন ওই চাষি। তাঁর এই সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে আশপাশের অন্য চাষিরাও এই কাজে নেমে পড়েন। গত তিন বছরে মুক্তিনগর গ্রামে এক থেকে বেড়ে পানের বরজের সংখ্যা পাঁচে পৌঁছেছে।
ওই গ্রামের চাষি সহদেব ব্যাপারী, মৃণাল সূত্রধর, প্রিয়লাল ব্যাপারী, গোপাল পণ্ডিতের কথায়, “সবে শুরু করেছি পান চাষ করতে। পান বিক্রি করতে কোনও অসুবিধা নেই। অন্য চাষের পাশাপাশি পান চাষ করলে দৈনিক আয়ের একটা পথ খোলা থাকে। বর্তমানে একশোটি পাতা আকার ও রঙের উপর নির্ভর করে ২০-৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।” জেলা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন আধিকারিক সুবিমল মণ্ডল বলেন, “পান চাষ অবশ্যই একটি লাভজনক চাষ। সেচের সুবিধা থাকলে এবং পানের বরোজে নিয়মিত নজরদারি করতে পারলে ভাল। ওই বরোজের মধ্যে একটা আর্দ্রতা বজায় রাখা হয় সেক্ষত্রে ছত্রাকজনিত রোগের ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা উচিত পান চাষিদের। তবে খয়রাশোলে পান চাষের কথা আমার জানা ছিল না।” |
খয়রাশোলের মুক্তিনগরে ছবিটি তুলেছেন দয়াল সেনগুপ্ত। |
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মুরারইয়ের জাজিগ্রাম, রামপুরহাটের বুজুং, ময়ূরেশ্বর ১ ও ২ ব্লকের মহুরাপুর ও চাল্যজোয়া’র মতো কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ভাবে পান চাষ হলেও ওই চাষের খুব একটা চল নেই জেলায়। কিন্তু পান চাষ যদি লাভজনক হয়ে থাকে, তা হলে জেলার চাষিরা তেমন উৎসাহ দেখাচ্ছেন না কেন? জেলায় সবচেয়ে পুরনো পান চাষের জায়গা হল মুরারইয়ের জাজিগ্রাম। সেখানেও ক্রমাগত পান চাষের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এলাকা সূত্রের খবর এক সময়ের ৪০-৫০টি পান বরোজের (পানচাষের জন্য বাঁশ, সর বা পাটকাঠি দিয়ে ঘেরা জায়গা) সংখ্যা বর্তমানে ১০-১২টিতে ঠেকেছে। ময়ূরেশ্বরের দুই ব্লকেও তেমন বিশাল আকারে ওই চাষ হয় না। জাজিগ্রামের চাষি সত্যেন দত্ত, অরুণ লাহারা বললেন, “পান চাষ লাভজনক সন্দেহ নেই। কিন্তু ক্রমবর্ধমান শ্রমিকের অভাব। ঝড়ের কারণে এলাকার চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ায় এই চাষে উৎসাহ হরিয়েছেন অনেকেই।” |