যে কোনও দিন ফাঁসি দেওয়া হতে পারে ‘মিরপুরের কসাই’ কাদের মোল্লাকে। জামাতে ইসলামির এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের ফাঁসির দাবিতে ঢাকার শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে যে অবস্থান আন্দোলন শুরু হয়েছিল, দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দেশে। হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও স্বাধীনতা-বিরোধী চক্রান্তের দায়ে কাদের মোল্লাকে ইতিমধ্যেই প্রাণদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রবিবার তাঁর বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা (ডেথ ওয়ারেন্ট)-ও জারি করেছে এই আদালত। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, আজই এই পরোয়ানা কারা কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। নেতার সম্ভাব্য ফাঁসির আশঙ্কা করে ৭২ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যেই কাল বাংলাদেশ জুড়ে হরতালের ডাক দিয়েছে জামাতে ইসলামি।
বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সঙ্কট দূর করার লক্ষ্যে ঢাকায় এসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্ডেজ তারানকো। রবিবার তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা ও ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ সরনের সঙ্গেও কথা বলেন। তার মধ্যেই সন্ধ্যায় হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গে দেখা করেন। সেই সময়েই ট্রাইব্যুনালের এক কর্মী লাল সালুতে মোড়া কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে যান। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই যে সরকার একাত্তরের ঘাতকদের প্রাণদণ্ড কার্যকর করতে চায়, অনেকেই সে কথা বলছিলেন। কিন্তু এই ঘটনার পরে কাদের মোল্লার ফাঁসি শুধু সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়াল।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়ে বিএনপি-জামাতের ৭২ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কমসূচিতে শনিবার থেকেই বাংলাদেশ অচল হয়ে রয়েছে। তার মধ্যেই গুন্ডামির অভিযোগে দলের এক সাবেক মেয়রের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ঢাকায় আজ হরতাল ডেকেছিল বিএনপি। কাদের মোল্লার ফাঁসির পরোয়ানার বিরুদ্ধে কাল আবার হরতাল ডেকেছে জামাত। এক মাস ধরে লাগাতার এই হরতাল-অবরোধের জেরে আকাল দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের বাজারে।
সামান্য কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মিললেও আকাশ ছোঁয়া তার দাম। সব্জি, মাছ, চাল-ডাল, তেল সব কিছুই চলে গিয়েছে সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। |