চিজোবা ক্রিস্টোফারকে নিয়ে মোহনবাগান জনতা আশায় বুক বাঁধতে শুরু করলেও ইউনাইটেড ম্যাচের নবাগত তারকাকে এখনই দরাজ শংসাপত্র দিতে নারাজ তাঁরই স্বদেশীয় ওডাফা ওকোলি।
ইউনাইটেডকে হারিয়ে আই লিগে দীর্ঘ চল্লিশ দিনের জয়ের খরা কেটেছে শুক্রবারই। ক্রিস্টোফারের জোড়া গোল দলের হতাশা যেমন উড়িয়ে দিয়েছে, ঠিক তেমনই গোল করে এবং করিয়ে চনমনে ওডাফাও। শুক্রবার যুবভারতীতে ক্রিস্টোফারের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ভাল ফুটবলার। কিন্তু এক দিনের পারফরম্যান্স দেখে মূল্যায়ন করা কঠিন। আরও তিন-চার ম্যাচ দেখতে হবে।” ওডাফা যখন এ কথা বলছেন, তখন বাগানের অনুশীলন ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে হাজির ‘সবুজ তোতা’ হোসে রামিরেজ ব্যারেটো।
ক্রিস্টোফার যদিও শনিবার সকালে অনুশীলন সেরে বাড়ি যাওয়ার পথে গেলেন, “নতুন ক্লাবে ভাল খেলাটাই লক্ষ্য।” বাগানের চতুর্থ বিদেশির আবার অন্যতম প্রিয় ব্যক্তিত্ব নেলসন ম্যান্ডেলা। মাঠে অবশ্য ক্রিস্টোফারের প্রেরণা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। শুক্রবার করিমের দলে তাঁর নতুন ইনিংস শুরু করার পর এই নাইজিরীয় তাঁর ভারতীয় বান্ধবীকে কথা দিয়েছেন, মোহনবাগানে নিজেকে নিংড়ে দেবেন। অনুশীলন সেরে ইডেনের পাশ দিয়ে এ দিন হেঁটে ফেরার পথে বলেও গেলেন, “সামনে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটা ম্যাচ। হারা চলবে না।” |
বাগানে হঠাৎ দখিনা বাতাস |
|
|
শনিবার প্র্যাকটিসে ক্রিস্টোফার ও ওডাফা-করিম। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
ক্রিস্টোফার যখন গোল করে নিজের সংকল্পে অটল, তখন এ বারের আই লিগে প্রথম গোল পেয়ে কপট ‘অভিমান’ ওডাফার গলায়। তাঁবু ছেড়ে বেরোনোর মুখে বাগানের ‘কিং কোবরা’-র সাংবাদিক দেখেই অভিমানী প্রতিক্রিয়া, “আরে ওডাফা তো শেষ। কী আর বলব? গো ব্যাক ওডাফা, গো ব্যাক ওডাফা...।” আর গেটের কাছে এসেই খই ফোটা শুরু তাঁর মুখে। বললেন, “আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে এই পরিস্থিতিতে হারিয়ে যেত। আমাকে সাহস যুগিয়েছে অভিজ্ঞতা। এই শহরের সাংবাদিক, ফুটবলার কর্তা - সবার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই গোল না এলেও ঘাবড়াইনি।” পরক্ষণেই চেনা মেজাজে বললেন, “যাঁরা এই দুঃসময়ে পাশে ছিলেন তাঁদের ধন্যবাদ। আর যারা বলেছিল ‘ওডাফা শেষ’, ‘গো ব্যাক’ তাদের আরও বড় ধন্যবাদ। ওদের জন্যই তো ভাল খেলার মোটিভেশনটা আরও বেড়ে গিয়েছে।”
ওডাফা আরও বলেন, “সমর্থকরা কি ভেবেছিলেন চোট সারিয়ে ফিরে প্রথম ম্যাচ থেকেই গোল করে ম্যাজিক দেখাব? খারাপ সময়ে করিম আস্থা হারাননি। ম্যাচের সকালেও এসএমএস করে মোটিভেট করতে ভোলেননি। আমরা চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ছিটকে গিয়েছি, এ কথা বলার সময় কিন্তু এখনও আসেনি।”
বুধবার মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ মুম্বই এফসি। প্রথম পর্বে জিতেছেন, তার উপর এ বার ইয়াকুবু ও আফগান ডিফেন্ডাররা আসায় শক্তি বেড়েছে খালিদ জামিলের দলে। প্রথম একাদশ এ দিন হালকা অনুশীলন করে। দ্বিতীয় একাদশ ভবানীপুরের বিরুদ্ধে অনুশীলন ম্যাচ জিতল ৩-০। মোহনবাগান কোচ বলছেন, “ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোচ্ছি। ওডাফার গোলে ফেরাটা শুভ লক্ষণ। রবিবার অনুশীলন নেই। সোমবার থেকে হোমওয়ার্ক মুম্বই এফসিকে নিয়ে।” |