তৃতীয় শক্তি নতুন নয়, নতুন আম আদমির কেজরিওয়াল

৭ ডিসেম্বর
নেক দিক দিয়েই অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি নতুন নজির গড়েছে। কিন্তু দিল্লির কুড়ি বছরের পরিষদীয় ইতিহাসে তৃতীয় শক্তির ভূমিকা এই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল, এমনটা কিন্তু নয়। ১৯৯৩ সালে জনতা দল এবং ২০০৮-এ বহুজন সমাজবাদী পার্টিও এই আম আদমি পার্টির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে কংগ্রেস-বিজেপির ভোটে ভাগ বসিয়েছিল।
এ বার দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড ৬৭% ভোট পড়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, সে দিনের দুই তৃতীয় শক্তি আর আজকের তৃতীয় শক্তি কেজরিওয়ালের দলের মধ্যে ফারাকটা ঠিক কোথায়? সকলকে অবাক করে ১৯৯৩ সালে জনতা দল ১২% ভোট পেয়েছিল। যদিও আসন এসেছিল মাত্র ৪টি। ২০০৮ সালে বহুজন সমাজবাদী পার্টির হাতি ১৪% ভোট পায়। কিন্তু আসন পায় মাত্র দুটি। কংগ্রেস ও বিজেপির বিক্ষুব্ধ ও বিদ্রোহী নির্দল প্রার্থীরাও ৬% ভোট পেয়েছিল। তবে আসন পেয়েছিল মাত্র তিনটি। এ বারেও বেশ কিছু আসনে প্রার্থী দিয়েছে বসপা। কিন্তু আম আদমি পার্টির পরিবর্তনের পক্ষে প্রচার যে ভাবে নজর কেড়েছে, তার আড়ালে চলে গিয়েছে বসপা। মূলত কংগ্রেসের ভোটেই থাবা বসায় যে বসপা, ২০০৮-এ তারাও কিন্তু শীলা দীক্ষিতের ছবির সামনে কিছু করে উঠতে পারেনি। এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রী শীলার সব চেয়ে বড় সাফল্য। বসপা-র ওই দাপট সত্বেও সেই ভোটে কংগ্রেস ৪০% ভোট পেয়েছিল। ২০০৮ সালে ভোটের হার বেড়েছিল, যার ফলে লাভবান হয়েছিলেন শীলা দীক্ষিত। সে বছর বসপাকে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক ভাঙানোর কাজে লাগাতে পারেনি বিজেপি। সেই কাজটা কেজরিওয়াল কতটা করতে পারেন, সেটাই দেখার। দিল্লির ৭০টি বিধানসভা আসনের সব ক’টি মিলিয়ে সংখ্যালঘু ভোট নেহাত কম নয়, অন্তত ২৭%। ১৯৯৩ সালে এই সংখ্যালঘু ভোটের অধিকাংশটাই কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছিল। মোদী-বিরোধী প্রচার চালিয়ে এ বার সেই সংখ্যালঘু ভোটকেই নিজের পক্ষে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। এ জন্য উর্দু সংবাদপত্রে ঢালাও বিজ্ঞাপনও দিয়েছে তারা। সেই বিজ্ঞাপনে মোদীর ভাবমূর্তি উল্লেখ করে সাবধান করা হয়েছে সংখ্যালঘুদের।
সুতরাং দিল্লির নির্বাচনে তৃতীয় শক্তি নতুন নয়। ভোট কাটাকাটির খেলাও পুরোনো। কিন্তু কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি একেবারেই আনকোরা। অতীতের তৃতীয় শক্তিরা বলার মতো ভোট টানলেও আসন সংখ্যায় তার বিশেষ প্রতিফলন পড়েনি। কিন্তু এ বার কেজরিওয়াল উঠে এসেছেন দুর্নীতি, নীতিপঙ্গুত্ব ও মূল্যবৃদ্ধির মতো বিষয়গুলি নিয়ে আম-নাগরিকদের আন্দোলনের মধ্য থেকে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অণ্ণা হজারের আন্দোলন নাড়িয়ে দিয়েছিল দিল্লিকে।
সেই আন্দোলনের মশাল থেকে আগুন নিয়েই রাজনৈতিক দল গড়েছেন কেজরিওয়াল। চিরাচরিত রাজনীতিতে একটা আমূল পরিবর্তনের আওয়াজ তুলেছেন। কংগ্রেস-বিজেপি মেরুকরণের বিরুদ্ধে যা একেবারেই নতুন একটা স্লোগান। তাই কেজরিওয়ালের সঙ্গে অন্য তৃতীয় শক্তির চরিত্রগত ফারাক রয়েছে। রাজনীতি নিয়ে উদাসীন দিল্লিতে ভোটের হার কেন বাড়ল, তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। কিন্তু আসল কারণটা অজানা। কিছুটা হয়তো বোঝা যেতে পারে ফল বেরোনোর পরে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.