ছ’মাস কেটে গিয়েছে। এখনও শুরু হয়নি বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে এবং যশোহর রোড সংযোগকারী উড়ালপুলের ফাটল মেরামতির কাজ। এর ফলে ওই উড়ালপুলে যশোহর রোড থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের দিকে গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ কাজে কেন এত দেরি করছে? উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ভেঙে পড়া বিশাল ডেকের মেরামতির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে উড়ালপুলের একটি আট মিটার চওড়া ফাটল সারানোর কাজে এখনও হাত পড়ল না।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১০ জুন বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে উড়ালপুলের একটি দিকে ফাটল দেখতে পাওয়া যায়। যশোহর রোড ও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগকারী উড়ালপুলটি খলিসাকোটা বাসস্টপের কাছে যেখানে এসে মিশেছে, সেখানে একটি বাঁক রয়েছে। তার কিছু দূরেই দেখা গিয়েছিল ফাটলটি। আট মিটার চওড়া ওই অংশের একটি জায়গায় ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট উঠে লোহার রডের কাঠামো বেরিয়ে পড়েছিল। প্রায় এক মিটার ব্যাসের গোলাকৃতি ফাটলের আশপাশেও চিড় দেখা গিয়েছিল। উড়ালপুলের অন্যান্য অংশের তুলনায় ওই অংশটি কিছুটা বসেও গিয়েছিল। |
ফাটলটি প্রথম চোখে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা পুলিশকে খবর দিলে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘটনার পরের দিন কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ারকে ঘটনাস্থলে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, তার পর থেকে ফাটলটি সেই ভাবেই পড়ে রয়েছে। সারানোর কাজে হাত পড়েনি। আড়াই নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা সমীরবরণ সাহা বলেন, “উড়ালপুলের ওই অংশটি দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় সেখানে যানজট হচ্ছে। তার জেরে সন্ধ্যার পরে যশোহর রোড কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। উড়ালপুল সারানোর কাজ দ্রুত শুরু হলে যানজটের সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে।”
নিত্যযাত্রীদের মতে, উড়ালপুলটি বন্ধ থাকায় যশোহর রোড থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে যেতে গেলে অনেকটা ঘুরে যেতে হচ্ছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক তথা সেতু-বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর চক্রবর্তীও বলেন, “যদি প্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা হলে তার দ্রুত মেরামতি হয়ে যাওয়া উচিত। এত দেরি হওয়ার কথা নয়। শুধু ওই ফাটলই নয়, পুরো উড়ালপুলটির তার জন্য কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা-ও পরীক্ষা করা দরকার। এ সব পরীক্ষা দ্রুত করে ফেলা উচিত।”
অভিযোগের উত্তরে কী বলছে ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া’? তাদের মতে, কী কারণে উড়ালপুলের ওই অংশে ফাটল তৈরি হল, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। পুরো সেতুর বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেতু-বিশেষজ্ঞেরা একটি রিপোর্ট দিয়েছেন। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী সেতু সারাতে কী কী লাগবে এবং তার জন্য আনুমানিক কত টাকা খরচ হবে, তার খসড়া তৈরি করে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন মিললেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। |