উড়ালপুলে বেপরোয়া বাইক উল্টে মৃত ছাত্র
হেলমেট না পরা এবং ঝোড়ো গতিতে মোটরবাইক চালানো বারংবার এ সব নিয়ে সতর্ক করে এসেছে পুলিশ। এ নিয়ে রাস্তায় নানা ভাবে প্রচারও চালিয়েছে তারা। তবু বন্ধ হয়নি এই নিয়ম না-মানার প্রবণতা। আর তারই মাসুল গুনল এক স্কুলপড়ুয়া। শুক্রবার রাতে এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রের। আহত হয়েছে তার এক সঙ্গী।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সুব্রত অধিকারী (১৮)। তার বাড়ি টালিগঞ্জের ম্যুর অ্যাভিনিউয়ে। আহত যুবকের নাম সমীর মণ্ডল। সে পেশায় গ্যারাজকর্মী।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ মোটরসাইকেলে পার্ক সার্কাস থেকে হেস্টিংস-এর দিকে যাচ্ছিল সুব্রত। পিছনে বসেছিল সমীর। দু’জনের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে। পুলিশ জানায়, দ্রুত গতিতে একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে গিয়ে ধাক্কা মারে সুব্রত। তাতেই রাস্তায় ছিটকে পড়ে তারা। ওই সময়ে উড়ালপুল দিয়ে যাতায়াত করা অন্য গাড়ির চালকেরা পুলিশে খবর দেন। এর পরে টহলদার পুলিশের একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর জখম সুব্রত ও সমীরকে এসএসকেএমে নিয়ে যায়। সেখানেই সুব্রতকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলে ঝোড়ো গতিতে মোটরবাইক চালানোর চল রয়েছে। এর আগে ২০১১-র ১৬ অগস্ট সকালে দ্রুত গতিতে বাইক ছোটাতে গিয়ে সুপ্রিয় রায় নামে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিল তার পিছনের আসনে বসা বন্ধুও।
এ দিন দুপুরে সুব্রতের টালি ও অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া দরমার ঘরে গিয়ে দেখা যায়, খবর পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার মা-পিসি। বাবা শম্ভু অধিকারী কাঠের মিস্ত্রি। ওই পাড়াতেই সমীরের গ্যারাজ। আদতে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা হলেও কাজের সুবাদে এখানেই থাকত সে।
শনিবার সুব্রতর মা সুলেখা অধিকারী জানান, সমীরের সঙ্গে প্রায়ই রাতে বেরোত সুব্রত। বলে যেত, বালি-সিমেন্টের লরির মাল খালাসের তদারকি করতে যাচ্ছে। একই কথা বলে শুক্রবার রাতেও বেরোয় তারা। সুলেখাদেবীর কথায়, “ওই কাজ করে ছেলে হাতখরচের কিছু টাকা পেত। পিকনিকের জন্য কিছু টাকা লাগবে বলে রাতে তড়িঘড়ি বেরিয়ে গেল। তার পরে ১২টা নাগাদ দুর্ঘটনার খবর পাই।” কিন্তু প্রায়ই রাতে বেরিয়ে কোথায় কাজে যেত সুব্রত, সে ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু বলতে পারেনি তার পরিবার। সুব্রতর ভাই দেবব্রত বলে, “দাদা মাঝে মাঝেই রাতে বেরিয়ে যেত। কখন ফিরত জানি না। সকালে উঠে দেখতাম ঘুমোচ্ছে।” ওই এলাকারই বাসিন্দা, সমীরের মাসি মেনকা দাস বলেন, “ইদানীং সমীর কথা শুনছিল না। কাজে ফাঁকি দিচ্ছিল। আমরা বারণ করলেও শোনেনি।”
সুব্রতর পরিবার এ-ও জানিয়েছে, ইদানীং মোটরবাইক কেনার শখ চেপেছিল তার। পরিবারের কাছে চাইলেও তা পায়নি।
সুব্রতর প্রতিবেশী পৃথ্বীশ ঘোষ জানান, জুলাই মাসেই তাঁর ছেলে গাড়ি দুর্ঘটনায় জখম হয়। ওই গাড়িতে ছিল সমীর ও সুব্রতও। পৃথ্বীশবাবুর ছেলে পৃথ্বীজিৎ জানায়, সুব্রতই সে দিন গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.