|
|
|
|
শীত পড়তেই পরপর মেলা শহরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ঘর সাজানোর জিনিস খুঁজছেন? একটু অন্য রকম? যেখানে টেরাকোটা বা পটের ছোঁয়া থাকবে? মুশকিল আসান হতে পারে মেলা। কারণ, মেলা মানেই হরেক রকম দোকান, কত শত কুটির শিল্পের সম্ভার। যেখানে কোনটা ছেড়ে কোনটা নেবেনসেটাই ভাবনা। আর শীত পড়তেই মেলার ধুম পড়তে চলেছে মেদিনীপুরে। ডিসেম্বর মাস জুড়ে পর পর তিনটি মেলা বসছে জেলার সদর শহরে। একটা মেলা শেষ হতে না-হতেই আরেকটা মেলা শুরু!
গোড়ায় সবলা মেলা। তারপর জেলা বইমেলা। শেষে বড়দিনের মেলা। সবলা মেলা বসছে শহরের বিদ্যাসাগর হলের মাঠে। উদ্বোধন আগামী রবিবার। চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। যেখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি হস্তশিল্প এবং দ্রব্যের প্রদর্শনীর আয়োজন থাকছে। এটি সরকারি উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ভাবে মেলার আয়োজন করতে ইতিমধ্যে সব রকম প্রস্তুতি সারা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বাসব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগামী রবিবার থেকে সবলা মেলা শুরু হবে। ওই দিন মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।” সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গত বছরের জানুয়ারিতে মেদিনীপুরে রাজ্য হস্তশিল্প মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মেলা ঘিরে সাড়াও পড়ে। সব মিলিয়ে সাড়ে তিন কোটি টাকার সামগ্রী বিক্রি হয়েছিল। কী ছিল না সেখানে- টেরাকোটা থেকে পট, মাদুর থেকে ছৌ। গৃহবধূ কল্পনা সরকার থেকে কলেজ ছাত্রী মৌমিতা আচার্য, সকলেরই বক্তব্য, “কুটির শিল্পের একটা আলাদা বাজার রয়েছে। গেল বছর মেদিনীপুরে যে মেলা হয়, তাতে হস্তশিল্পের কত কারুকার্য এসেছিল। কী সুন্দর দেখতে। প্রচুর মানুষ কেনাকাটাও করেছেন।”
|
কী মেলা |
কবে শুরু |
কোথায় |
সবলা মেলা |
৮ ডিসেম্বর |
বিদ্যাসাগর হল মাঠ |
জেলা বইমেলা |
১৫ ডিসেম্বর |
কলেজ মাঠ |
বড়দিনের মেলা |
২৫ ডিসেম্বর |
চার্চ স্কুল মাঠ |
|
মেলা ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হওয়ায় এবং বাজার ভাল থাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিল্পীরাও খুশি হন। এ বার অবশ্য শহরে রাজ্য হস্তশিল্প মেলা হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত তাই ঠিক রয়েছে। তবে, সবলা মেলায় বেশ কিছু কুটির শিল্পের দ্রব্য থাকছে। মেলায় প্রায় ত্রিশটি স্টল থাকবে। স্টলগুলোতে পসরা সাজিয়ে বসবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। জেলা প্রশাসন মনে করছে, সাত দিনের সবলা মেলাতেও প্রচুর মানুষ ভিড় করবেন।
অন্য দিকে, জেলা বইমেলা বসছে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে। উদ্বোধন ১৫ ডিসেম্বর। চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নামী প্রকাশক সংস্থার স্টল থাকছে। গত মাসেই বেসরকারি উদ্যোগে বইমেলা হয়েছে। এ বার সরকারি উদ্যোগে। শহরের সঞ্জীব ভট্টাচার্য, অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়রা বলছিলেন, “বইয়ের কোনও বিকল্প নেই। বইয়ের বিকল্প বই-ই।” সঞ্জীববাবুর কথায়, “এখনকার ছেলেমেয়েরা তো পড়ার চাপে গল্প-কবিতার বই পড়ার সময়ই পায় না। একটু সময় পেলে কম্পিউটারে গেম খেলে। আগে পারিবারিক অনুষ্ঠানে গেলে অনেকে বই উপহার দিতেন। এখন অন্য সামগ্রী উপহার দেন। এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে বেশি করে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। মেলায় বাবা-মায়ের হাত ধরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এলে স্বাভাবিক ভাবে তাদের মধ্যে বই নিয়ে আগ্রহ তৈরি হবে।”
বই মেলা শেষ হতে না-হতেই শুরু হবে বড়দিনের মেলার তোড়জোড়। মেলা বসে শহরের চার্চ স্কুল মাঠে। শুরু হবে ২৫ ডিসেম্বর। চলবে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। বড়দিনের এই মেলার জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন শহর ও শহরতলির মানুষজন। আগে মেদিনীপুর শহরে বছরে কয়েকটি বড় মেলা হত। শীত পড়তেই শুরু হত মেলার মরসুম। এখন বড় মেলা বলতে বড়দিনের মেলাই। তাই, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের দিকে তাকিয়ে থাকেন অনেকে। চার্চ স্কুল মাঠের মেলায় বসে ছোট-বড় নাগরদোলা, ছোটদের চড়ার জন্য গাড়ি-ট্রেন, হরেক রকম দোকান। সঙ্গে ফাস্টফুডের স্টল। মাঠের বাইরেও নানা দোকান বসে। বিকোয় জিলিপি, ফুচকা। মেলা চত্বরের পাশাপাশি চার্চও সেজে ওঠে আলোকমালায়। |
|
|
|
|
|