|
|
|
|
মেয়েদের ভয় পাই, ফারুকের কথায় বিতর্ক
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
৬ ডিসেম্বর |
কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার একের পর এক খবরে দেশ যখন উত্তাল, ঠিক তখনই মহিলা কর্মচারী নিয়োগের বিরোধিতা করে বসলেন পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। যৌন হেনস্থার দায় পরোক্ষে অভিযোগকারিণী বা আরও ভাল ভাবে বলতে গেলে মেয়েদের উপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার সংসদ ভবনের সামনে ফারুকের এই মন্তব্যের জেরে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক।
শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফারুক বলেন, “এখন যা সময় পড়েছে তাতে মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতেই ভয় হয়। আমাদের মনে হয়, কোনও মেয়েকে সেক্রেটারি পদে নিয়োগ না করাই ভাল। যদি কোনও সমস্যা হয়, শেষে তো আমাদেরই জেলের গারদে পোরা হবে।”
নিজেদেরই সংস্থার সাংবাদিককে যৌন হেনস্থার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তরুণ তেজপাল। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন এক ইনটার্ন। ফারুকের মন্তব্য সমর্থনযোগ্য নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেখে শেষ পর্যন্ত তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন ফারুক। সেই সঙ্গে অবশ্য এটাও দাবি করতে ভোলেননি যে, সংবাদমাধ্যমে তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি মেয়েদের দোষী বলছি না। সমাজকেই দুষছি। ধর্ষণের মতো ঘটনা না ঘটাই উচিত। আমি চাই যত দ্রুত সম্ভব সংসদের ৩৩% আসন মেয়েদের জন্য সংরক্ষণ হোক।”
ফারুক ক্ষমা চাইলেও বিতর্ক মিটছে না। তাঁর এই বক্তব্য খবরের চ্যানেলে প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দল নির্বিশেষে নিন্দা শুরু হয়ে যায়। এই দলে ছিলেন ফারুক-পুত্র ওমরও। কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী তথা ছেলে ওমর টুইটে লেখেন, “মনে হয় বাবা খুব ভুল সময়ে মন্তব্যটা করে ফেলেছেন। তবে মেয়েদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এ কথা না বলাই উচিত ছিল। এর জন্য তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’
কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরথ বলেন, “সংবিধানে নারী ও পুরুষের সমানাধিকারের কথা বলা রয়েছে। অথচ মেয়েদেরই ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। কেউ এ রকম মন্তব্য করলে তার মানসিকতা বদলানো দরকার।” কংগ্রেস নেত্রী অম্বিকা সোনি, তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও’ব্রায়ান, বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি ও মেনকা গাঁধী, সিপিএমের বৃন্দা কারাট, প্রাক্তন আইপিএস কিরণ বেদীরা নিন্দা করেন ফারুকের। কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার বিরুদ্ধে বা নিজের অধিকারের কথা প্রকাশ্যে বলা নিয়ে যদি এ ভাবে মন্তব্য করা হয় তা সেটা বেশ চিন্তার। বৃন্দার মতে, “এই মন্তব্য এটাই বুঝিয়ে দেয়, কর্মক্ষেত্রে মেয়েরা যতই হেনস্থার শিকার হোক না কেন মুখ খুললেই তাঁর চাকরি চলে যাবে।” অম্বিকা বলেন, “ভাবতেই পারছি না ফারুক এমন মন্তব্য করেছেন!” |
|
|
|
|
|