বৃদ্ধির নিরিখে এগিয়ে রাজ্য, দাবি অমিতের
ঞ্চটা ইনফোকমের। সেখানেই দেশ-বিদেশ থেকে আগত অতিথিদের সামনে পশ্চিমবঙ্গকে একেবারে অন্য চেহারায় তুলে ধরলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
আনন্দবাজার সংস্থা আয়োজিত ইনফোকমে অর্থমন্ত্রী এসেছিলেন ‘ফিউচার লিডারশিপ’-এর পুরস্কার তুলে দিতে। অতিথি হিসেবে। কিন্তু বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেই অতিথি-সত্তাটা পাশে সরিয়ে কখনও পুরনো অধ্যাপনার মেজাজে, কখনও দুঁদে রাজনীতিকের সুরে, কখনও বা অর্থমন্ত্রী হিসেবে পুনরুজ্জীবিত পশ্চিমবঙ্গকে তুলে ধরলেন। রীতিমতো তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে দেখালেন, মাথা পিছু বৃদ্ধির মাপকাঠিতে দেশের গড়কে কতটা পিছনে ফেলে দিয়েছে এই রাজ্য। তাঁর কথায়, “দেশে মাথা পিছু আর্থিক বৃদ্ধি যেখানে ২.৯৭%, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে তা ৬.৬৫%।” আর এই পরিসংখ্যানই যে আর্থিক দিক থেকে রাজ্যের অগ্রগতিকে তুলে ধরছে, তা-ও মঞ্চ থেকে জানালেন বণিকসভা ফিকি-র প্রাক্তন মহাসচিব।
শুরুটা করেছিলেন একেবারে অন্য সুরে। ‘ফিউচার লিডারশিপ’-এ বার লিখিত প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ক্ষমতায়ন (এমপাওয়ারমেন্ট)। অমিত মিত্র তাঁর বক্তৃতার শুরুতেই সেটা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। রীতিমতো অধ্যাপকের ঢঙে উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি, “সরকার এবং বাণিজ্যের মধ্যে সবথেকে বড় সমস্যা কী?” উত্তরটাও দিলেন তিনি নিজেই! “বিধিনিষেধের শাসন।”

ইনফোকমে। ছবি: দেবাশিস রায়।
এর পরে একে একে রাজ্যর অর্থ মন্ত্রক কী ভাবে বিশেষত শিল্প ও কর সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য অনেক বেশি করে নিচ্ছে, তা বুঝিয়ে বলেন তিনি। এ ভাবে ই-গভর্ন্যান্স পদ্ধতিতে কাজ হওয়ায় প্রশাসনে আরও বেশি স্বচ্ছতা এবং গতি এসেছে বলেও জানান অমিতবাবু। তাঁর মতে, ই-টেন্ডার বা যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট) জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় উপকৃত ব্যবসায়ীরা। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই ভ্যাটের আবেদনপত্র জমা দেওয়া, রিফান্ডের টাকা ডি-ম্যাট পদ্ধতিতে জমা পড়া ইত্যাদিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। আবার ভ্যাটের সার্টিফিকেট (শংসাপত্র) পেতে হলে এত দিন বিভিন্ন দফতরে ঘুরতে হতো। যাতে নষ্ট হতো সময়। সেখানে এখন ডিজিটাল সিগ্নেচার-এর সাহায্য নিয়ে সহজেই সার্টিফিকেট পৌঁছে যাচ্ছে প্রাপকের দোড়গোড়ায়। ই-টেন্ডারের ক্ষেত্রেও সুবিধা পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বেড়েছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ। অর্থমন্ত্রীর কথায়, “এ সবের ফলে ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে রাজ্যের কর আদায় ৩১.৫৭% বেড়েছে, যা একটা রেকর্ড!” ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় জিডিপি-র শতকরা বৃদ্ধির হারে এ রাজ্য কতটা এগিয়ে তার প্রমাণ দিতে গিয়ে অমিতবাবু বলেন, “গোটা দেশে যেখানে এই হার ৪.৯%, সেখানে এ রাজ্য বেড়েছে ৭.৬% হারে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা আনতে যে রাজ্য সরকার জোর দিচ্ছে, তা এ দিন ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর মতে, রাজ্যের ঘাড়ে ২ লক্ষ কোটি টাকার ঋণের বোঝা রয়েছে। যা পূর্বতন বাম সরকার চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছে। এই বিশাল ঋণের বোঝা মাথায় থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল সরকারের জমানায় নতুন করে মূলধন তৈরি হয়েছে এবং পরিকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে আনেন নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের কথাও। তাঁর বক্তব্য, সেখানে অনেক জায়গাতেই রাস্তা ও পানীয় জলের মতো ন্যূনতম সামাজিক পরিষেবা ছিল না। কিন্তু সমাজের প্রতিটি স্তরে এই ধরনের পরিকাঠামোর প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। তাই তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে সাধারণ মানুষের কাছে এই পরিষেবাই পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সামাজিক খাতে রাজ্যের অগ্রগতির চেহারাটাও এ দিন স্পষ্ট করে দিন অর্থমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গেই তোলেন কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পের কথা।
সব মিলিয়ে এক অন্য অমিত মিত্রকে দেখল ইনফোকমের মঞ্চ। পরে ‘ফিউচার লিডারশিপ’-এর পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন তিনি। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন দেশি-বিদেশি বিজনেস স্কুলের পড়ুয়ারা। অনুষ্ঠানে ছিলেন কেপিএমজি ইন্ডিয়ার অন্যতম কর্তা অম্বরীশ দাশগুপ্ত এবং শ্রেয়ী ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিনান্সের কর্তা সুনীল কানোরিয়াও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.