ফিরিয়ে দাও গয়নার বাক্স, আর্জি বৃদ্ধার
ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট একটা আছে বটে। কিন্তু ব্যবহার হয়নি বহুকাল। শেষ কবে তিনি ব্যাঙ্কের চৌকাঠ মাড়িয়েছিলেন তাও আজ আর মনে পড়ে না। ব্যাঙ্ক, লকারে বিশেষ আস্থাও তিনি রাখেন না। পাছে যদি খোয়া যায়! ছিয়াশি বছরের সেই বৃদ্ধা, দেবযানী দাস বৃহস্পতিবার সকালে মেয়ে জামাইদের সঙ্গে এসেছিলেন রঘুনাথগঞ্জ থানায়। কাঁপাকাঁপা গলায় কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের কাছে তাঁর আর্জি, “গয়নার বাক্সটা কি ফিরিয়ে দিতে পারবে , বাবা? ওটা যে আমার শ্বশুর বাড়ির স্মৃতি।”
বুধবার সাতসকালে রঘুনাথগঞ্জের ফাঁসিতলার দেবযানী দাসের হাত, মুখ বেঁধে আট লক্ষ টাকা ও ত্রিশ ভরি সোনার গহনা নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মহকুমাশাসক ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের অফিস থেকে দেড়শো মিটারের মধ্যে সাতসকালে এরকম ঘটনার পর রীতিমত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখনও পর্যন্ত আতঙ্কের ঘোর কাটেনি ওই বৃদ্ধা দেবযানী দাসেরও। এ দিন তিনি বলেন, “এরকমটা যে ঘটবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। গয়নার বাক্স থেকে শুরু করে এতদিন পর্যন্ত যা কিছু আগলে রেখেছিলাম তা সব হারিয়ে গেল। পুলিশকে সব কথা খুলে বলেছি। দেখা যাক ওরা কী করে।” কিন্তু এত টাকা ও সোনার গহনা বাড়িতে ওই বৃদ্ধা রাখলেন কেন? দেবযানীদেবীর জামাই দিলীপ দাস বলেন, “সে কথা উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন। আমরা কতবার করে বলেছি যে এতচ টাকাপয়সা, সোনাদানা বাড়িতে রাখার দরকার নেই। ওসব ব্যাঙ্কে রাখুন। কিন্তু কে শোনে কার কথা। আসলে পুরনো দিনের মানুষ তো, তাই কোন কিছুর উপরেই আস্থা রাখতে পারেন না। এখনও ভাবেন যে নিজের কাছে জিনিসপত্র রাখলেই সব সুরক্ষিত থাকবে। ব্যাঙ্কে রাখলে সুদ বাড়ার পাশাপাশি ওগুলো নিরাপদেও থাকত।” ফাঁসিতলাপাড়াতেই থাকেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক কাশীনাথ ভকত। তিনি বলেন, “গত ছ’মাসে শহরে বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ দিন সকালবেলায় বাড়িতে ঢুকে যেভাবে ওই বৃদ্ধার গলায় ছুরি ধরে ডাকাতি করল তাতে আমরা সত্যিই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পুলিশের উচিত শহরে পুলিশি টহল বাড়ানো।” স্থানীয় বাসিন্দা তথা সরকারী আইনজীবী অশোক সাহা বলেন , “শহরের মধ্যে এভাবে বাড়িতে ঢুকে লুঠপাটের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। এই ঘটনার সঙ্গে পরিচিত কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিশ দায় এড়াতে পারে না। অভিযুক্তদের ধরে শহরবাসীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।”পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ডাকাতির ঘটনায় পরিচিত কেউ জড়িত বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বাড়ির লোকজনকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশ কড়া নজর রাখছে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.