|
|
|
|
মিড ডে মিলের হিসাব এ বার মিলবে এসএমএসে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
কখনও মিড ডে মিলের রান্না খারাপ। আবার কখনও বা চাল চুরি। এমনই নানা অভিযোগে স্কুল শিক্ষকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অভিভাবকরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে শিক্ষকদের। সেই মিড ডে মিলে স্বচ্ছতা আনতে অভিনব পদক্ষেপ করছে নদিয়া জেলা প্রশাসন। স্কুলের দেওয়ালে বোর্ড তৈরি করে দৈনন্দিন খরচার বিস্তারিত বিবরণ লিখে রাখার নির্দেশ অনেক আগেই দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু সর্বত্র যে সেই নির্দেশ পালিত হয় না সে কথা বিলক্ষণ জানেন প্রশাসনের কর্তারা। আর এই সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি মিড ডে মিল প্রকল্পে স্বচ্ছতা আনতে ‘ক্লোজ ইউজার গ্রুপ’ এর মাধ্যমে মোবাইল পরিষেবা চালু করছে জেলা প্রশাসন।
জেলার প্রায় ৩ হাজার ৬০০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিড ডে মিল চালু আছে। তার মধ্যে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসাবে কৃষ্ণনগর সদর মহকুমার ৮০০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই এসএমএস পরিষেবা চালু হচ্ছে বলে প্রপশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ ৫৪৩২৪ নম্বরে এসএমএস করে প্রতিদিন জানাবেন, কত ছাত্রছাত্রীর জন্য মিড ডে মিল রান্না হচ্ছে। পাশাপাশি খাদ্য তালিকা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে আর কত পরিমাণ চাল অবশিষ্ট আছে তাও জানাতে হবে ওই এসএমএসের মাধ্যমে। এই প্রকল্পটি সফল ভাবে বাস্তাবায়িত হওয়ার পরে আরও বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে।
নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) উৎপল ভদ্র বলেন, “আমরা চাইছি জেলার স্কুলগুলোতে মিড ডে মিল প্রকল্প আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে। মিড ডে মিল নিয়ে নানা সময়ে নানা অভিযোগ ওঠে। অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ওইসব সমস্যা এড়াতে ও এই প্রকল্পে স্বচ্ছতা আনতে এমন পদক্ষেপ।” তিনি বলেন, “পাইলট প্রজেক্টে ৮০০ টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রকল্প চালু করা হল। পরে সর্বত্রই এটা চালু হয়ে যাবে।”
এই নতুন প্রকল্প নিয়ে শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া কী? এই নতুন প্রকল্পে খুশি শিক্ষকরাও। তাঁদের দাবি, বহু ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র সন্দেহের বশে কিংবা নানারকম চক্রান্তের কারণে মাঝে মধ্যে হয়রানির শিকার হতে হয়। এই পরিষেবা চালু হলে সেটা অন্তত এড়ানো যাবে। কারণ প্রতিদিন হিসেব বুঝে নেবে খোদ জেলা প্রশাসন। ধর্মদা বালিকা প্রাথমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক শ্রীবাস দাস বলেন, “ভালই তো। এমনটা হলে আমাদেরই তো সুবিধা। অহেতুক হয়রানি বন্ধ হবে।” তিনি বলেন, “অনেক সময় বুঝে না বুঝে অভিভাবকদের একাংশ স্কলে চড়াও হন। সেসবের হাত থেকে বাঁচা যাবে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক বলছেন, “প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব পালন কারটা খুব শক্ত কাজ নয়। কিন্তু ভয়টা থাকে অন্য জায়গায়।” সেটা কী? ওই শিক্ষক বলছেন, “গ্রামে নানা রকম স্থানীয় রাজনীতি চলে। মিড ডে মিলটাও কখনও সেই রাজনীতির ইস্যু হয়ে যায়। তখন যে গোলমালটা হয় সেটা সামলানোটাই সত্যিই খুব কঠিন। প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে অন্তত মিড ডে মিল নিয়ে সেই আতঙ্কটা এবার কেটে যাবে।” জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অর্চনা ঘোষ সরকার বলেন, “এটা অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ। এতে মিড ডে মিলের স্বচ্ছতার পাশাপাশি শিক্ষকদেরও অহেতুক ভোগান্তি কমবে।’’ |
|
|
|
|
|