মা নির্দোষ, মানতে নারাজ মুনমুনের বড় ছেলে
লকাতা হাইকোর্ট তাঁকে মুক্তি দিলেও অপরাজিতা ওরফে মুনমুন বসুকে নির্দোষ বলে মানতেই চান না তাঁর বড় ছেলে অভ্রনীল। এমনকী দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রটি মুনমুনকে মা বলে স্বীকৃতি দিতেও রাজি নন।
বুধবার আদালতের লড়াইয়ে জিতে মুনমুন জানিয়েছিলেন, এ বার তাঁর লড়াই শুরু হবে ছেলেদের ফিরে পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেই লড়াইয়ের শুরুতেই জোর ধাক্কা খেলেন মুনমুন।
অভ্রনীল বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর ঠাকুমা আছেন, কাকা আছেন, বাড়িতে কাজ করা পিসি আছেন। তাঁকেই মায়ের মতো দেখেন। এ ছাড়া আর কাউকে তিনি আপনজন বলে মনেই করেন না। অপরিচিত আর পাঁচ জন মানুষের সঙ্গে মুনমুনের কোনও তফাৎ নেই তাঁর কাছে।
স্বামী কুণাল বসু খুনের ষড়যন্ত্রের দায়ে ১৩ বছর আগে যখন মুনমুন জেলে গিয়েছিলেন, তখন অভ্রনীলের বয়স ছিল পাঁচ বছর। ছোট ছেলে শুভ্রনীলের চার। গত ১৩ বছরে একবারের জন্যও মুনমুন তাঁর ছেলেদের দেখেননি। তারা কতটা বড় হল, কেমন দেখতে হল, তা-ও জানেন না তিনি। বুধবার আদালতের রায়ের পরে এক পরিচিতের ফোন থেকে অভ্রকে ফোন করেছিলেন মুনমুন। ছেলের গলা শুনে কয়েক সেকেন্ড কথা বলতে পারেননি। নিজের পরিচয় গোপন করে বলেছিলেন, ‘তোমার একজন অতি পরিচিত কথা বলছি।’ কিন্তু ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন রেখে দেন অভ্রনীল। এর পরে আর ফোন করার সাহস পাননি মুনমুন।
বাবা খুন হওয়া এবং সেই অপরাধেই মাকে পুলিশ গ্রেফতার করায় ছোটবেলাটা মোটেই ভাল কাটেনি অভ্র ও তাঁর ভাইয়ের। মায়ের নাম না করেই বলেন, “আইন যা-ই বলুক, ওই মহিলা নির্দোষ বলে আমরা মানি না। ওঁর জন্য আমাদের শৈশব নষ্ট হয়েছে। ওঁর সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই, করতেও চাই না।” কথা আর বাড়াননি অভ্র। বলেন, “সামনে পরীক্ষা। পড়াশোনায় ব্যস্ত আছি। আমাকে বিরক্ত করবেন না প্লিজ।”
বড় ছেলের এই প্রতিক্রিয়া শুনে স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েছেন মুনমুন। ছেলের এই মনোভাবের জন্য সরাসরি শাশুড়িকেই দায়ী করেছেন তিনি। এ দিন মুনমুন বলেন, “১৩ বছর ধরে ওদের আমার সম্পর্কে যা শেখানো হয়েছে, যা বোঝানো হয়েছে তাতে এমন প্রতিক্রিয়া হওয়াই স্বাভাবিক। ওদের (ছেলেদের) আমি দোষ দেব কী করে!” মুনমুনের এই অভিযোগ নিয়ে কী বলছেন শাশুড়ি অনুরাধা বসু? অশ্বিনী দত্ত রোডের বাড়িতে মঙ্গলবার থেকে নেই অনুরাধাদেবীরা। এ দিন অভ্রনীলের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয় ওঁর সঙ্গে। এক মহিলা টেলিফোনে বলেন, “আমাদের কেন বারবার বিরক্ত করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না! বলছি তো এই বিষয়ে কিচ্ছু বলার নেই।”
এপ্রিল মাসে জামিনে মুক্ত হয়ে বাপের বাড়িতে ফিরেছিলেন মুনমুন। বুধবার হাইকোর্ট তাঁকে নির্দোষ বলে রায় দেওয়ার পরে এ দিন তিনি প্রথম বার বাড়ির বাইরে পা রাখলেন।
পুজো দিতে গেলেন তারাপীঠে। অভ্রনীলের আঠেরো বছর বয়স হয়েছে। কিন্তু ছোট ছেলে শুভ্রনীল এখনও অপ্রাপ্তবয়স্ক। ছেলেদের কাছে পেতে কি আইনের পথে যাবেন? মুনমুন বলেন, “আগে হাইকোর্টের রায়ের কাগজপত্র হাতে পাই। তার পরে ভেবে দেখব।”

পুরনো খবর

 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.