এসজেডিএ-র দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত বাস্তুকার মৃগাঙ্ক মৌলি সরকার জামিন পেলেন। বুধবার শিলিগুড়ির অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সৌম্যব্রত সরকার তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃগাঙ্কবাবুর আইনজীবী এ দিন তাঁর মক্কেলের পক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানান, যেখানে দফতরের প্রাক্তন সিইও গোদালা কিরণকুমার গ্রেফতার হওয়ার পরদিনই ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন, সেখানে গত ৫ জুন গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মামলায় এত দিন ধরে জেল হেফাজতে রয়েছেন মৃগাঙ্কবাবু। তাই তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হোক। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে দুর্নীতি নিয়ে আটটি মামলায় ওই বাস্তুকার অভিযুক্ত হন।
অন্যান্য মামলাগুলিতে আগে জামিন পেলেও, জোড়াপানি নদী সংস্কারে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হেফাজতে ছিলেন। এ দিন শিলিগুড়ি অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে তার পক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। বিচারক শর্তসাপেক্ষে ১০ হাজার টাকার বন্ডের ভিত্তিতে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। প্রতি সপ্তাহে তাঁকে তদন্তকারী অফিসারের কাছে গিয়ে হাজিরা দিতে হবে।
সরকারি পক্ষের আইনজীবী পীযূষ ঘোষ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে জেল হেফাজতে থাকা নিয়ে ওঁদের আইনজীবী আদালতে আবেদন করেন। সেখানে প্রাক্তন সিইও ছাড়া পাওয়ার প্রসঙ্গও উঠেছে। আদালত সব দিক বিচার করে এ দিন জামিন মঞ্জুর করেছে।”
জোড়াপানি প্রকল্প ছাড়া বাগডোগরা, মালবাজার, ময়নাগুড়ি শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো নিয়ে দুর্নীতি, মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরিতে দুর্নীতি নিয়ে দুটি, ইটেন্ডার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি নিয়ে আরও দুটি মামলা হয়েছে ওই বাস্তুকারের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া এসজেডিএ’র একজন বাস্তুকার হিসাবে তার আয় এবং বিপুল সম্পত্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য না পেয়ে পুলিশ তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। সে ক্ষেত্রে গ্রেফতারের বিষয় কিছু ছিল না বলে তাঁর পক্ষে থাকা আইনজীবী পার্থ চৌধুরী, তনয় চক্রবর্তীরা জানিয়েছেন। দুর্নীতি কাণ্ডে গত ৫ জুন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। তার পরে আরও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশ তাকে একের পর এক গ্রেফতার দেখায়। ৯০ দিনের মধ্যে পুলিশ চার্জশিট না দেওয়ায় নিয়ম মাফিক ৪ টি মামলায় তিনি জামিন পেয়ে যান। অবে অন্যান্য অভিযোগগুলিতে তিনি জেল হেফাজতেই ছিলেন। তাঁর পক্ষে থাকা আইনজীবী তনয় চক্রবর্তী জানান, আপাতত তিনি জেল হেফাজত থেকে ছাড়া পাবেন।”
এ দিকে এসজেডিএ দুর্নীতি কাণ্ডে শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন থেকে প্রতিবাদ মিছিল বার করে আরএসপি। দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব হন তারা। শিলিগুড়ির ফুলেশ্বরী মোড়ে কংগ্রেসের এক সভায় এ দিন এসজেডিএ’র দুর্নীতি, সারদা কাণ্ড নিয়ে অভিযোগ তোলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার।
জলপাইগুড়িতে এ দিন এসজেডিএ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্ত দাবি করে কংগ্রেস। এ দিন বিকেলে জলপাইগুড়ি শহরের মাদ্রাসা ময়দানে এক জনসভায় কংগ্রেসের বিভিন্ন বক্তা ওই দাবি তোলেন। জলপাইগুড়ির বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা বলেন, “এসজেডিএর বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা কাজ না করিয়েই দেওয়া হয়েছে। যাঁরা ওই দূর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা ধরা পড়ার ভয়েই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” একই সুরে সরব হন জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু। তিনি বলেন, “এসজেডিএর দুর্নীতি নিয়ে আমরা সিবিআই তদন্ত দাবি করছি। |