মহাকরণে কেরোসিন ছড়ানোর ঘটনায় পুলিশে যাঁকে গ্রেফতার করেছে, সেই জ্যোতির্ময় নন্দী নিরপরাধ বলে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে গিয়ে দাবি করলেন সরকারের ‘হোম পাবলিকেশন’ বিভাগের রেজিস্ট্রার।
স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার হোম পাবলিকেশনের রেজিস্ট্রার বিস্ময় রায়কে নবান্নে ডেকে পাঠান। পরে বাসুদেববাবু বলেন, “রেজিস্ট্রার অফ পাবলিকেশন জানান, ওই ঘটনায় নাশকতার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওঁকে বলেছি লিখিত ভাবে নিজের বক্তব্য জানাতে।” বিষয়টি সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রসচিব তাঁর দফতরের যুগ্ম সচিব দেবাশিস গুহঠাকুরতার কাছে বিভাগীয় তদন্ত রিপোর্টও চেয়েছেন বলে নবান্ন-সূত্রের খবর।
তবে পুলিশ যে জ্যোতির্ময়বাবুকে এখনই ছাড় দিচ্ছে না, এ দিন স্বরাষ্ট্রসচিবের কথায় তার ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, “এটি নাশকতা কি না, পুলিশ তদন্ত করে দেখবে। ধৃত ব্যক্তি নিরপরাধ কি না, কোর্টেই বিচার হবে। ধৃত ব্যক্তি আইনি সহায়তা চাইলে সরকারের কাছে তা পাবেন।”
২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় মহাকরণে স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীন রেজিস্ট্রার অফ পাবলিকেশনের একটি অফিসঘরে কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া যায়। স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়, এর পিছনে নাশকতার ছক রয়েছে। পুলিশি তদন্ত শুরু হয়। পুলিশ চার জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে জ্যোতির্ময়বাবুকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশই জানিয়েছে, হুগলির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি দীর্ঘ দিন যাবৎ রেজিস্ট্রার অফ পাবলিকেশন বিভাগে কীটনাশক ছড়ানোর কাজ করে আসছেন। পুলিশের দাবি: জ্যোতির্ময়বাবু নিজেই জানিয়েছেন, আগেও তিনি কীটনাশকের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে স্প্রে করেছেন।
এখানেই গাফিলতির গন্ধ পাচ্ছে পুলিশ। স্বরাষ্ট্র-সচিব বাসুদেববাবুরও দাবি, “কেরোসিন যে দাহ্য পদার্থ, তা সকলের জানা। কীটনাশকের সঙ্গে কেরোসিন মেশানো ঠিক হয়নি। কেরোসিনের উপরে জ্বলন্ত বিড়ির টুকরো পড়লে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে পারত।” মহাকরণের নিরাপত্তা বাড়াতে কলকাতার সিপি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নবান্ন-সূত্রের খবর: বিস্ময়বাবু স্বরাস্ট্রসচিবের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে জানান এখানে নাশকতার সন্দেহ যে যুক্তিহীন, তা তিনি স্বরাষ্ট্রসচিবকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। দাবি করেছেন, ধৃত ব্যক্তি নির্দোষ। আজ, বৃহস্পতিবার জ্যোতির্ময় নন্দীকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলার কথা।
|