শহিদ মিনার ময়দানে ৬ ডিসেম্বর কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের সভাকে ঘিরে সিপিএম-সিপিআইয়ের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। দ্বন্দ্বের কারণ একটি পোস্টার।
ওই সভার প্রচারের জন্য বামফ্রন্টের নামে আলিমুদ্দিন থেকে যে পোস্টার ছাপা হয়েছে, তাতে বক্তার তালিকায় প্রবীণ সিপিআই নেতা এ বি বর্ধনের নাম দেওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরে। সিপিআই তাতে অসন্তুষ্ট। তারা পাল্টা পোস্টার ছেপেছে। তাতে বক্তার তালিকায় সকলের উপরে রয়েছে বর্ধনের নাম। তার পরে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। বুদ্ধবাবুর নাম রয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসেরও পরে।
সিপিআই-এর কলকাতা জেলার সম্পাদক প্রবীর দেবের বক্তব্য, “সিপিএম নিজের মতো করে পোস্টার ছেপেছিল। বাম আন্দোলনের প্রবীণতম নেতা বর্ধনের নাম বুদ্ধবাবুর পরে ছাপায় দলের কর্মীদের মধ্যে প্রবল প্রতিক্রিয়া হয়। সে কারণেই আমাদের নতুন করে পোস্টার ছাপতে হয়েছে।” কিন্তু তাই বলে বুদ্ধবাবুর নাম দেবব্রত বিশ্বাসেরও পরে? প্রবীরবাবুর যুক্তি, “দেবব্রতবাবু ফরওয়ার্ড ব্লকের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সে কারণেই তাঁর নাম বুদ্ধবাবুর উপরে দিতে হয়েছে।” বিষয়টি যাতে সিপিএমের রাজ্য নেতাদের চোখে পড়ে, তার জন্য আলিমুদ্দিনের আশপাশে সিপিআই কর্মীরা ওই পোস্টার সেঁটেছেন।
বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম। যদিও বিতর্ক না বাড়িয়ে কলকাতা জেলা সিপিএম নেতা মানব মুখোপাধ্যায় বলেন, “কোনও বিশেষ কারণে সিপিআই যদি আলাদা পোস্টার করে, তা হলেও আমরা খুশি। কারণ, তাতে প্রচারের মাত্রা বাড়বে।” বুধবার কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক দিলীপ সেন জানান, তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১৫ লক্ষ মানুষের কাছে প্রচার করেছেন। ওই দিন লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে। সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী ওই সমাবেশ থেকে সরকারের দুর্নীতি ও সারদা-কাণ্ডে যুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তিও দাবি করা হবে। মানববাবু বলেন, “গোটা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও সাম্প্রদায়িকতার বিপদ বাড়ছে। কিন্তু তৃণমূল সরকার এ ব্যাপারে উদাসীন। উল্টে তারা বিজেপি-কে সাহায্য করছে। সভায় তা তুলে ধরা হবে।” অন্য দিকে, সেনাবাহিনীর আপত্তিতে ১৭ জানুয়ারি শহিদ মিনারে সিপিআই-এর সভা হচ্ছে না। পরিবর্তে সিপিআই সভা করতে চায় ৮ জানুয়ারি। |